সিলেট সিটি নির্বাচনের (সিসিক) সময় যত ঘনিয়ে আসছে মাঠে ততই আরও সরব হচ্ছেন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। বিশেষ করে দলীয় প্রতীকের সকল প্রার্থী দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকাল থেকে রাত অবধি করছেন উঠানবৈঠক ও মতবিনিময়। জনতার সামনে কেউ দিচ্ছেন ‘স্মার্ট সিটি’ গড়ার প্রত্যয়, কারো মুখে ‘পরিবর্তনের’ স্লোগান।
 

অপরদিকে, নির্বাচনী মাঠ থেকে ‘প্রশাসনের ভয়ে’ সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর হঠাৎ রণে ভঙ্গ দেওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। গত শনিবার এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা ও ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি জানান- প্রশাসনের অতি উৎসাহীদের ভূমিকা নিয়ে গভীর সন্দেহ হলে তিনি প্রার্থী হবেন না।
 


সিলেটে ভোটের মাঠে সবার আগে থেকে এবং সবচেয়ে বেশি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। মহানগরের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে শিডিউল করে ভোটারসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে করছেন বৈঠক। এসব সভা-বৈঠকে মহানগরের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, যানজটমুক্ত নগর গড়া, সরবরাহ বাড়িয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দূরীকরণ, ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবস্থা চালু, শিক্ষার আরও মানোনন্নয়ন, গণপরিবহন সংকট দূর, ফুটপাত দখলমুক্ত করা ও নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণসহ পরিকল্পিত নগরায়নের মাধ্যমে একটি প্রকৃত স্মার্ট নগর গড়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন আনোয়ারুজ্জামান।
 

নৌকা মনোনীত প্রার্থীর মুখে ‘স্মার্ট সিটি’র প্রত্যয় থাকলেও অন্য দলের মেয়র প্রার্থীদের স্লোগান ভিন্ন। তারা এবার সিলেট সিটিতে ‘পরিবর্তন’ চান।

জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী বলছেন, সিলেট সিটি করপোরেশন হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি- দুই দলের মেয়রকেই নগরবাসী দেখেছেন। তারা কেউই নগরবাসীকে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন উপহার দিতে পারেননি। তাই এবার নগরবাসী ‘পরিবর্তন’ চান।
 

এ বিষয়ে সিসিকে জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল সিলেটভিউ-কে বলেন, ‘নগরবাসী ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করলে মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে নগরের প্রত্যেকটি সমস্যা চিহ্নিত করে ধারাবাহিকভাবে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করবো। আর এতেই একটি নান্দনিক নগর হবে সিলেট।’
 

ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান সিলেটভিউ-কে বলেন, সিলেট সিটিতে অবশ্যই এবার পরিবর্তন দরকার। প্রকৃত স্মার্ট নগর গড়তে গেলে সর্বপ্রথম নগরভবনকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। আর এর জন্যই পরিবর্তন দরকার। কারণ- দুটি দলের দুই মেয়রের আমলই নগরবাসী দেখেছেন। কিন্তু কেউই নগরবাসীকে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন উপহার দিতে পারেননি। তাই নগরবাসীর ভালোবাসায় হাতপাখার প্রার্থীর জয় হলে নগরভবনকে দুর্নীতিমুক্ত করে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন দেওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।’
 

দলীয় প্রতীকের মেয়র প্রার্থীরা নির্বাচনের মাঠ চষে বেড়ালেও আলোচনায় থাকা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর হঠাৎ রণে ভঙ্গ দেওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এতদিন তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার গুঞ্জন থাকলেও গত শনিবার সিলেটে একটি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘ইভিএমের সঙ্গে ভোটাররা এখনও অপরিচিত। নির্বাচনের ছয় মাস আগে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু দেওয়া হয়নি। ইভিএমে ভোট স্বচ্ছ নয়, কারসাজি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
 

এসময় তিনি আরও বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা অতিউৎসাহ দেখাচ্ছেন। তাদের কর্মকাণ্ড সন্দেহ গভীর রূপ নিলে নির্বাচনে প্রার্থী নাও হতে পারি।
 

চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানতে ২০ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন তিনি।


 

সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম /এসডি-৩০৮