সিলেটে সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগসহ ৩ দলীয় প্রার্থী এবং সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীদের তোড়জোড় লক্ষ্য করা গেলেও মাঠে নেই বিএনপি। মেয়র পদের পর এবার কাউন্সিলর পদে কোনো নেতাকর্মীকে নির্বাচনে অংশ না নিতে চিঠি দিয়েছে মহানগর বিএনপি।
জানা গেছে, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে দলের ৩২ জন নেতাকে মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। গত তিন দিনে এসব চিঠি সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন সোমবার বিকেলে নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে গত দুটি সিটি নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে টানা দুবার মেয়র নির্বাচিত হওয়া আরিফুল হক চৌধুরীকেও মৌখিকভাবে প্রার্থী না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে দলটি।
এর আগে ১০ মে সন্ধ্যরাতে সিলেট মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ঢাকায় সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সিলেট মহানগর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতৃবৃন্দকে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার কঠোর নির্দেশনা দেন। এরপর গত শনিবার সিসিক নেতাকর্মীদের অংশ না নিতে নেতাকর্মীদের চিঠি দিয়েছে সিলেট মহানগর বিএনপি। দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে কেউ প্রার্থী হলে সাংগঠনিক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও চিঠিতে জানানো হয়।
জানা গেছে, সিসিক নির্বাচনে নেতাকর্মীদের অংশ নেওয়ার আভাস পেয়ে তাঁদের প্রার্থিতা ঠেকাতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে বিএনপি। সিলেটসহ পাঁচ সিটি নির্বাচনে মেয়র কিংবা কাউন্সিলর- কোনো পদেই দলের নেতাকর্মীর প্রার্থী হওয়া দলের তারেক রহমান চান না। তাঁর পক্ষ থেকে সিলেটে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কেউ হলে তার বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যত বড় নেতা হোন না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে দলের উচ্চ পর্যায় থেকে জানানো হয়েছে।
ওই সূত্রটি আরও জানায়- দলের হাই কমান্ডের নির্দেশনায় সিসিকে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক বিএনপির ২৫ নেতার নাম উল্লেখ করে একটি প্রাথমিক তালিকা করে কেন্দ্রীয় বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের পাশাপাশি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে। যারা নির্বাচনে অংশ নিবেন তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এই তালিকায় থাকা ২৫ নেতার মধ্যে ৮ জনই বর্তমান কাউন্সিলর।
মহানগর বিএনপি নেতা ও সিসিকের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চার বারের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান লোদী (কয়েস লোদী) গত শুক্রবার সিলেটভিউকে বলেছিলেন, ‘খুবই জটিল অবস্থায় পড়েছি। আমি গত ২০ বছর ধরে আমার ওয়ার্ডের জনগণের ভালোবাসা-ভোটে নির্বাচিত। এ ক্ষেত্রে আমার পরিচয় দলীয় নয়। এখন হঠাৎ করে জনগণের ভালোবাসাকে অবজ্ঞা করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো খুবই কঠিন।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আশা করছি- আমাদের মতো প্রার্থীদের কথা বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত দলের হাই কমান্ড কঠোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন।’
কিন্তু তাঁর সেই আশার গুড়ে বালি দিয়ে গত শনিবার নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে চিঠি দিয়ে আরেক দফা বাধা দেয় বিএনপি। চিঠিতে বলা হয়- বর্তমান সরকারের এই পাতানো নির্বাচনে দলের কোনো নেতাকর্মী অংশ নিলে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্ছ কঠিন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম /এসডি-৩২৪