একাধিক প্রেম নিয়ে সব সময় আলোচনায় থেকেছেন হালের জনপ্রিয় ইউটিউবার ও অভিনেতা সালমান মুক্তাদির। প্লে-বয় তকমাটা তার নামের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল বহু আগেই। তবে এবার প্লে-বয় ইমেজ থেকে বেরিয়ে থিতু হলেন এক নারীতে। হুট করে বিয়ের ছবি প্রকাশ করে সামাজিকমাধ্যমে রীতিমতো তোলপাড় ফেলে দেন এ অভিনেতা। ৩০ এপ্রিল বিয়ে করেছেন বলেও জানান তিনি। এরপর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে বিয়ে আর পরিবার নিয়ে একের পর এক পোস্ট দিচ্ছেন তিনি।
 

সম্প্রতি বিয়ের পরে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের সামনে কথাও বলেছেন সালমান মুক্তাদির। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী দিশাও। এসময় সবার সামনেই স্ত্রীর গালে চুম্বন এঁকে দেন এ ইউটিউবার।


প্রথমবার স্ত্রীকে নিয়ে রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সের একটি হলিউড সিনেমার প্রিমিয়ার শোতে আসেন এ অভিনেতা। সেখানেই প্রেম, বিয়ে নিয়ে মুখ খুলেন সালমান।

আসলেই কি বিয়ে করলেন সালমান মুক্তাদির?

বিয়ের পর সময় কীভাবে কাটছে, এ প্রসঙ্গে সালমান বলছিলেন, ‘সময় কেটে যাচ্ছে আমি টের পাচ্ছি না। ভেবেছিলাম তিনদিন কেটে গেছে। কিন্তু দিশা বলছে, ১২ দিন কেটে গেছে। আমি বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। আমি জিজ্ঞেস করলাম তিন দিন না? সে বলল না, ১২ দিন। এমনিতে একটি দিনে ২৪ ঘণ্টা আমার কাছে যথেষ্ট মনে হতো না। বিয়ের পর মনে হচ্ছে দিনটা আরো ছোট হয়ে গেছে।’
 

মধুচন্দ্রিমা নিয়ে সালমান বললেন, ‘বিয়ের ঘোর থেকেই এখনো বের হতে পারিনি, তাই হানিমুনে কোথায় যাব, না যাব সে বিষয়ে আলোচনাতেই আমরা যাইনি। সব কিছু ঠিক করতে সময় লাগবে। বিশেষ করে সব কিছু ছেড়ে এসেছে। অনেক যুদ্ধ করে আমাদের বিয়েটা হয়েছে। এখনো বাসাই গোছানো হয়নি। সো হানিমুন বাসা গোছানোর পরে।’
 

বিয়ের সময় প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছেন উল্লেখ করে এই ইউটিউবার বলেন, ‘আসলে আমাকে যে যুদ্ধ করতে হয়েছে বিষয়টা তেমন না, ওকেই (দিশা) বেশি যুদ্ধ করতে হয়েছে। পূর্বে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কোনোভাবেই যোগাযোগ করতে পারত না। আমিও কনফিউশনে ছিলাম। আমার অতীত নিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতার একটা বিষয় ছিল। তাই আমিও বুঝতেছিলাম না প্ল্যানটা কী? শেষমেশ প্ল্যান হলো, সব কিছু ছেড়েছুড়ে সে আমার কাছে চলে আসবে।’
 

‘দিশাকে ওকে সব ছাড়তে হয়েছে। বেসিক্যালি যুদ্ধটা ও করেছে। ওর লাইফে এমন কিছু নেই যে ও ছেড়ে আসেনি। শুধু আমি কেন, কেউই ওকে প্রোপার ট্রিটমেন্ট দেওয়ার যোগ্যতা রাখে না। তার পরেও সব কিছু ছেড়ে আসছে, এটার সঙ্গে কোনো কিছুরই তুলনা হয় না’, যোগ করেন সালমান।
 

দিশাকে বিয়ের কারণ প্রসঙ্গে সালমান বলেন, ‘আসলে ভালোবাসাটা যাকে বলে সেটা অফুরন্ত ছিল আমার কাছে। সেটা অনেক পেয়েছি। কিন্তু এই মেয়েটার মধ্যে এমন কিছু না কিছু অবশ্যই আছে, যার ফলে আমি তাকে বিয়ে করেছি। কারণ আমার ওই ভয়টা লাগেনি যে আমার আরো দরকার। পৃথিবীতে একটা মাত্র মানুষ, যে আমাকে স্বার্থহীনভাবে ভালোবেসেছে সে দিশা। আর এমন ভালোবাসাটা আর কেউ দিতে পারত না এটা হান্ড্রেড পার্সেন্ট সিওর। ওই ফুর্তি-আমোদ, ওটার জন্য আমি এটা স্যাক্রিফাইস করতাম না। আমাকে বিয়ে করে এত নেগেটিভিটিতে কোনো মেয়ে টিকতে পারত না, সহ্যই করতে পারত না। একমাত্র দিশাই এটা পেরেছে। বিয়ের পর অজস্র বাজে কথা শুনেও ও স্বাভাবিক থেকেছে। তাই আমি মনে করি, পৃথিবীতে দিশার চেয়ে বেটার কেউ হতে পারে না। পারবেও না।’

পুরো সাক্ষাৎকারের সময় স্বামীর সঙ্গে খুনসুটিতে মেতেছিলেন দিশা। ক্যামেরার সামনে একে অন্যের সঙ্গে ভালোবাসার নানা চিহ্ন ও চিত্র এঁকে দেন রিল লাইফের এ জুটি।

সাক্ষাৎকারের একপর্যায়ে সালমানকে থামিয়ে দিশা বলেন, বিয়ের পর অনেক ভালো সময় কাটছে। সে অনেক কেয়ারিং, আমার অনেক খেয়াল রাখে। বাসায় বাচ্চাদের সঙ্গে অনেক মজা করে, আনন্দ করে। আমি এটা খুবই ভালোবাসি।
 

এর আগে বিভিন্নজনের সঙ্গে নাম জড়িয়েছে সালমান মুক্তাদিরের। কিন্তু কোনো নারীতেই আটকা পড়েননি তিনি। অবশেষে দিশা ইসলামের সঙ্গে থিতু হলেন সালমান। সালমানের প্রথম হলেও দিশার এটি দ্বিতীয় বিয়ে। দুই সন্তানের জননী দিশা আরজে তাজের বড় বোন।
 

২০১২ সাল থেকে ইউটিউবে ভিডিও নির্মাণ করেন সালমান। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইউটিউবারদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে। এছাড়া বেশ কয়েকটি নাটক ও মিউজিক ভিডিওতে দেখা গেছে সালমান মুক্তাদিরকে।


 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এসডি-৩৬৮