প্রথমবারের মত কোন ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের একটি মহাকাশ যান চাঁদে অবতরণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন-ভিত্তিক ইনটুইটিভ মেশিনের ‘ওডিসিয়াস’ ১৯৭২ সালের অ্যাপোলো অভিযানের পর চাঁদের বুকে যাওয়া প্রথম কোন মার্কিন মহাকাশ যান।

 


বিবিসি জানায়, মনুষ্যবিহীন ওডিসিয়াস চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে নেমেছে।

নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে অবতরণের বিষয়টি নিশ্চিত হতে একটু সময় লাগছিল। কারণ, একেবারে শেষ মুহূর্তে কোনো সিগন্যাল পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে কয়েক মিনিটের অপেক্ষার পর একটি সংকেত পেয়ে নিশ্চিত হন সংশ্লিষ্টরা।


ফ্লাইট ডিরেক্টর টিম ক্রেন ঘোষণা মুখ থেকে প্রথম ঘোষণাটি আসে। “এখন আমরা কোনো রকম সংশয় ছাড়াই নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমাদের যন্ত্রপাতি চাঁদের পৃষ্ঠে এবং ট্রান্সমিশন শুরু হয়েছে।”


ওডিসিয়াসে ছয়টি বৈজ্ঞানিক যন্ত্র পাঠিয়েছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। 


অবতরণের পর সংস্থাটির প্রধান বিল নেলসন এই ‘সাফল্যের’ জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “আজ মানবতার ইতিহাসে প্রথমবার, একটি বাণিজ্যিক কোম্পানি, একটি আমেরিকান কোম্পানি এমন অভিযাত্রায় নেতৃত্ব দিলো। এই দিনটি নাসার বাণিজ্যিক অংশীদারত্বের শক্তি এবং প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।” 


ওডিসিয়াস বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে নামে। কার্যকারিতার দিক থেকে এটি একটি রোবটের মতই। প্রথম দিকে কোনও নিশ্চিতকরণ সংকেত না থাকায় নিয়ন্ত্রকদের অপেক্ষা করতে হয় কয়েক মিনিট। তারপর একটি দুর্বল সংকেত পান তারা।


এতে ল্যান্ডারের অবস্থা নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি হয়। পরবর্তী সময়টাতে এই ডেটাগুলো ঘেঁটে দেখবেন প্রকৌশলীরা। বোঝার চেষ্টা করবেন কী ঘটেছে। পরীক্ষা করে দেখবেন ওডিসিয়াস ঠিকঠাক আছে কিনা, সৌরকোষের মাধ্যমে যথাযথভাবে শক্তি সংগ্রহ করতে পারছে কিনা।


মহাকাশ যানটির গন্তব্য নির্ধারণ করা হয়েছিল মালাপের্ট নামের একটি পাহাড়ি এলাকার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল। এই পার্বত্য এলাকার উচ্চতা প্রায় পাঁচ কিলোমিটার।


চাঁদের এত দক্ষিণে এখন পর্যন্ত আর কোনো মহাকাশ যান যায়নি।


নাসার পাঠানো সরঞ্জামগুলো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অনন্য উৎকর্ষের সাক্ষ্য বহন করে।


এগুলোর অন্যতম প্রধান কাজ হবে চাঁদের ধূলিকণার গতিপ্রকৃতি বোঝা। এই ধূলাবালির গতিপ্রকৃতি অ্যাপোলো মহাকাশচারীদের ভুগিয়েছিল। তাদের যন্ত্রপাতিগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল, সৃষ্টি করেছিল প্রতিবন্ধকতা।


কোনো যান অবতরণের সময় এর প্রভাবে চন্দ্রপৃষ্ঠ ধূলার ওপরে উঠে যাওয়ার প্রক্রিয়া এবং ধরন নিয়ে গবেষণা করতে চান নাসার বিজ্ঞানীরা।


নাসার সরঞ্জামাদি ছাড়াও ভিন্ন ভিন্ন ছয়টি জিনিস দিয়ে দেয়া হয়েছিল ওডিসিয়াসের সঙ্গে। এর মধ্যে রয়েছে এমব্রি-রিডল অ্যারোনটিক্যাল ইউনিভার্সিটির পাঠানো একটি ক্যামেরা সিস্টেম। চাঁদের মাটির থেকে যানটি ৩০ মিটার উঁচুতে থাকার সময়ই এটি স্থাপন হওয়ার কথা। 


ক্যামেরা সিস্টেমটি ডিজাইন করা হয়েছে রোবটটির সেলফি তোলার জন্য।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম / নাজাত