হজরত শাহজালাল মাজার ও ইনসেটে ওরসের আসল লিফলেট।

সিলেটের হযরত শাহজালাল মুজাররাদ ইয়ামানি (রাহ.) এর মাজারে ৭০৫ তম ওরস শুরু হবে আগামী ২৮ মে। দুই দিনব্যাপী এই ওরস চলবে ২৯ মে পর্যন্ত। 

 


 

 

তবে ওরসের তারিখ নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে একটি চক্র। এতে বিভ্রান্ত না হতে অনুরোধ জানিয়েছেন মাজার কর্তৃপক্ষ। 

 

 

 

জানা গেছে, মাজার কর্তৃপক্ষ ২৮ ও ২৯ মে ওরস হবে এমন উল্লেখ করে লিফলেট প্রকাশ করেছেন। কিন্তু একটি চক্র হু-বহু ডিজাইনের একটি লিফলেট ছাপিয়ে ছড়িয়ে গিয়েছে ভার্চুয়াল মাধ্যম ফেসবুকে। কিন্তু এতে ওরসের তারিখ দেওয়া ২৯ ও ৩০ মে। 

 

 

 

এ বিষয়ে শাহজালাল মাজারের মুতাওয়াল্লি ফতেহ উল্লাহ আল আমান বলেন- ওরস অনুষ্ঠিত হবে ২৮ ও ২৯ মে। তবে কে বা কারা ভুল তারিখ দিয়ে একটি লিফলেট ছাপিয়ে ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। এতে কাউকে বিভ্রান্ত না হতে আমি অনুরোধ করছি।

 

 

 


মুতাওয়াল্লি জানান, প্রতিবছর আরবি মাসের ১৯ ও ২০ জিলকদ দুই দিনব্যাপী হজরত শাহজালাল (রাহ.)-এর ওরস অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ১৯ জিলকদ অর্থাৎ- আগামী ২৮ মে সকালে ঐতিহাসিক গিলাফ চড়ানোর মধ্যদিয়ে ওরসের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। 

 

 

 


উল্লেখ্য, প্রতি বছর ওরস উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তরা জড়ো হন শাহজালাল মাজারে। শাহজালালের শানে বিভিন্ন গান ও গজল গেয়ে তারা চারপাশ মাতিয়ে রাখেন। অসংখ্য অনুরাগীরা সামিয়ানা টাঙিয়ে ওরসের দুদিন তাতে পড়ে থাকেন মাজার এলাকায়।

 

 

 

অন্যদিকে, ওরস উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নেয় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা। দরগাহ এলাকায় বসানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা। মাজারের প্রত্যেকটি প্রবেশদ্বারে বাড়ানো হয় পুলিশি নিরাপত্তা। 

 

 

 


প্রসঙ্গত, ইসলাম প্রচারের জন্য হযরত শাহজালাল (রাহ.) ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে ৩৬০ সফরসঙ্গী নিয়ে সিলেট আসেন। ১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জিলকদ তিনি ইন্তেকাল করেন। সিলেটে তিনি যে টিলায় বসবাস করতেন, সেখানেই তাকে দাফন করা হয়। তার কবরকে ঘিরেই পরবর্তীতে গড়ে উঠে  মাজার। একপর্যায়ে শুরু হয় প্রতি বছর ওরস পালন।

 

 

এদিকে, শাহজালাল (রাহ.)-এর মাজারে ওরসকে কেন্দ্র করে সোমবার (৬ মে) সিলেটে অনুষ্ঠিত লাকড়ি তোড়া উৎসব। প্রতি বছর ওরসের তিন সপ্তাহ আগে এ উৎসব হয়।

 

 

 

 
সোমবার দুপুরে হাজারো ভক্ত ‘শাহজালাল বাবা কী জয়’ ‘৩৬০ আউলিয়াকি জয়’ ‘লালে লাল বাবা শাহজালাল’ স্লোগান দিয়ে মাজার প্রাঙ্গণ থেকে মহানগরের লাক্কাতুড়া বাগান অভিমুখে রওয়ানা দেন। পরে তারা লাকড়ি নিয়ে মাজারে ফিরে আসেন।

 

 

 

এর আগে সকাল থেকেই সিলেট মহানগর ও শহরতলি এবং বিভিন্ন উপজেলা থেকে  বাদ্য বাজিয়ে দরগাহ প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন শাহজালালভক্তরা। 

 

 

 

ইতিহাসবিদরা বলেন, শাহজালাল (রাহ.) সিলেটে আসার পর তার জীবদ্দশায় লাকড়ি সংগ্রহ করে রান্না করতেন। সেই ঐতিহ্য রক্ষায় ৭শ’ বছর ধরে ওরসের তিন সপ্তাহ আগে লাকড়ি তোলা উৎসব করা হয়। লাকড়ি সংগ্রহ করার পর নির্দিষ্ট স্থানে জমা করে রাখা হয়। আর এই লাকড়ি দিয়েই ওরসের শিরনি রান্না করা হয়।

 

 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডি.আর