পিংকু ধর:: শুধু সিলেট নয়, সারাদেশেই চলছে করোনার ঝড়। বর্তমানে পুরো সিলেট বিভাগে করোনা সংক্রমণ হার বেশি হওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা। হাসপাতাল-ক্লিনিকে ঠাঁই হচ্ছেনা কোভিড-১৯ সংক্রমিতদের। এমন পরিস্থিতির মাঝে অশনি সংকেত দিচ্ছে ডেঙ্গু। এ বছর এখন পর্যন্ত সিলেটে কোন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হননি। তবে অসতর্কতা ও প্রস্তুতির অভাবে করোনার সাথে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব হলে পরিস্থিতি মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে।

বিদ্যমান কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই রাজধানীতে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ উদ্বেগজনক। সিলেটে এর বিস্তৃতি ঠেকাতে প্রয়োজন প্রস্তুতি। তাই পরিস্থিতি বিবেচনায় ডেঙ্গু প্রতিরোধেও ব্যবস্থা নিচ্ছে সিলেট জেলা ও নগরীর সংশ্লিষ্ট বিভাগ।



সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয় ও সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে খবর নিয়ে জানা গেছে, সিলেটে এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত কোন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হননি। তবে পুরো সিলেট বিভাগ জুড়েই জ্বরের প্রকোপ লক্ষ্য করা গেছে। ফার্মেসিতে প্যারাসিটামল ও এন্টিবায়োটিক বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। চিকিৎসকদের কাছেও ভিড় জমাচ্ছেন অনেকে। অনেকের কোভিড-১৯ পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট আসলেও জ্বর দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্টরা সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন।


সিলেট জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত সিলেটভিউকে জানান, করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই দেশে ডেঙ্গুর মৌসুম শুরু হয়েছে। তবে সিলেট জেলায় এখনো কোন রোগী শনাক্ত হননি।


ডেঙ্গু ও করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের উপসর্গে অনেক মিল রয়েছে। তাই জ্বর হলেই কোভিড-১৯ এর পাশাপাশি ডেঙ্গু পরীক্ষারও পরামর্শ দিয়ে তিনি জানান, ইতোমধ্যে সিলেট ওসমানী হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট সরবরাহ করা হয়েছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় ডেঙ্গুর পরীক্ষা করা যাবে এসব কিট দিয়ে।


ডা. জন্মেজয় আরো জানান, ডেঙ্গু প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন হতে হবে। নিজেদের আঙ্গিনা পরিস্কার রাখতে হবে যাতে করে এডিস ও চিকুনগুনিয়া মশার বিস্তার না ঘটে।


সিলেট নগরীতে মশা নিধনে ও বিশেষ পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট শাখা। তবে, নগরীর প্রত্যেক বাসা-বাড়ির বাসিন্দাদের নিজ থেকে উদ্যোগী হওয়ার আহবান জানিয়েছেন তারা।


চিকিৎসকদের মতে ডেঙ্গুর উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রচণ্ড মাথাব্যথা, শরীরব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, শরীরে র‍্যাশ। তবে প্রতিবছর ডেঙ্গুর ধরণ খানিকটা পাল্টায়। ফলে কাশি হওয়াও বিচিত্র নয়। বমি, ডায়রিয়াও হতে পারে। তবে করোনা ও ডেঙ্গু—উভয় রোগেই চোখ লাল হতে পারে। কাজেই জ্বর ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের ওপর উঠলে সতর্কভাবে উপসর্গগুলো পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত পরীক্ষা করার পরামর্শ তাদের।


ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাড়ির ভেতর ও আশপাশ পরিষ্কার রাখা, কোথাও পানি জমতে না দেওয়া আর মশারি টাঙিয়ে ঘুমানোরও পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/পিডি/কেআরএস-০২