সিলেট নগরীর যতরপুরে আদালতের জারিকৃত নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যাতায়াতের রাস্তায় জোরপূর্বক মন্দির নির্মাণের অভিযোগ ওঠেছে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক ওয়ার্ড (সংরক্ষিত-৫) কাউন্সিলর দিবা রানী দে বাবলী ও তার স্বামী মনিন্দ্র চন্দ্র দে’র বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (১৪সেপ্টেম্বর) সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ অভিযোগ তুলে ধরেন যতরপুর এলাকার নবপুষ্প ১২/এ-এর বাসিন্দা ক্বারী মাওলানা আব্দুল মতিন।


বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য প্রদানকালে তিনি বলেন, মনিন্দ্র চন্দ্র দে ও তার স্ত্রী সিসিকের সাবেক কাউন্সিলর দিবা রানী দে ২০০৭ সালে যতরপুরস্থ জে. এল নং-৯১, সিলেট মিউনিসিপ্যালিটি মৌজার এস. এ ১৭৮২ নং খতিয়ানের ১১১৪৯ ও ১১১৫০ নং দাগের সরকারি অর্পিত ৪৭ শতক ভূমির ৬ শতক এক বছরের জন্য বন্দোবস্ত নেওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু অনুমতি না পেয়েও ওই ভূমিতে কাঁচা ঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেন তারা।

অপরদিকে তারা ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে পুড়ে যাওয়া ময়মনসিংহের নান্দাইল সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের মাধ্যমে মনীন্দ্রের পিতা সুরেশ চন্দ্রের নাম ব্যবহার করে ওই ৪৭ শতক ভূমি তাদের পৈতৃক সম্পত্তি দাবি করেন। সেই মিথ্যা দাবিকে সত্য প্রমাণ করতে ১৯৬১ সালের একটি জাল দলিল তৈরি করলেও আদালত তা খারিজ করেন। পরবর্তীতে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যাপন ট্রাইবুন্যাল সিলেটে একই দাবি নিয়ে তারা মামলা করলে আদালত মনীদ্রের দলিলপত্র জাল প্রমাণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা আব্দুল মতিন আরও জানান, এরপরও থেমে থাকেননি সিসিকের সাবেক কাউন্সিলর দিবা রানী দে ও তার স্বামী মনিন্দ্র চন্দ্র দে। মনীন্দ্র চন্দ্র দে তার পিতা সুরেশ চন্দ্রের নামীয় জাল বলিয়ম তৈরি করে এর কপি আদালতে দাখিল করেন। এক পর্যায়ে মনীন্দ্রের স্ত্রী দিবা রানী দে কাউন্সিলর থাকা অবস্থায় দুর্নীতিপরায়ণ কর্মচারীদের সহযোগিতায় বিভিন্ন জাল প্রমাণাদি আদালতে দাখিল করলে তাদের পক্ষে রায় হয়।

পরবর্তীতে মাওলানা আব্দুল মতিনের বোন রসনা বেগমসহ আরও কয়েকজন মামলার রায় বাতিলের দাবি জানিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন। রিট মামলাগুলো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই ভূতিতে স্থিতাবস্থা করেন আদালত। কিন্তু মনিন্দ্র চন্দ্র দে ও দিবা রাণী দে বিজ্ঞ আদালতের আদেশ অমান্য করে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও ভাড়াটিয়া গুণ্ডাবাহিনী সাথে নিয়ে নিষেধাজ্ঞার জায়গায় অবৈধভাবে পাঁকা স্থায়ী মন্দির বানানোর কাজ গত এক সপ্তাহ থেকে চালিয়ে যাচ্ছেন। যে জায়গায় কোনোদিনও মন্দির ছিলো না। এটি একটি চলাচলের রাস্তা।

আব্দুল মতিন বলেন, মনিন্দ্র চন্দ্র দে ও দিবা রাণী হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক দাঙা সৃষ্টি করতে ও অহেতুক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে মন্দির তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এলাকাবাসী হিন্দু-মুসলমান মিলে বেআইনি এ নির্মাণকাজ বন্ধ করতে অনুরোধ ও নিষেধ করলে প্রতিবাদকারীদের হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি প্রদর্শন করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে জরুরিত্তিতে প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন মাওলানা আব্দুল মতিন।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / জেপিসি / ডালিম