অবশেষে সিলেটের স্কুলশিক্ষার্থীদের করোনার ভ্যাকসিন প্রদানের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে। আগামী সোমবার থেকে সিলেট নগরীতে শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে। প্রাথমিক অবস্থায় ২৫ হাজার স্কুলশিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।

বিষয়টি সিলেটভিউকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম।


সিলেট জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলায় পরীক্ষামূলকভাবে ১২০ শিক্ষার্থীকে ফাইজারের ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়। এসব শিক্ষার্থী কোনো সমস্যায় না পড়ায় পরবর্তীতে সারাদেশের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অফিদফতর (মাউশি) গত ১৭ অক্টোবর মাধ্যমিকের স্কুলশিক্ষার্থীদের তথ্য চায়। নভেম্বরের শুরুতে ১ লাখ ৭০ হাজার স্কুলশিক্ষার্থীর তথ্য পাঠায় জেলা শিক্ষা অফিস।

তথ্য পাঠালেও এসব শিক্ষার্থীকে তখন ভ্যাকসিনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। শিক্ষার্থীদের ফাইজারের ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় রাখতে হয়। এজন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকতে হয়। কিন্তু সিলেটের স্কুলগুলোতে এই ব্যবস্থা না থাকায় ভ্যাকসিন প্রদান গতি পায়নি। তাছাড়া শিক্ষার্থীরা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে ভ্যাকসিনের নিবন্ধন করতে গিয়েও সমস্যায় পড়ে। কেননা, অনেক শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন সনদই অনলাইনে ছিল না।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আগামী সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) থেকে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এবং পুলিশ লাইনস হাইস্কুলে শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম শুরু হবে। এসব প্রতিষ্ঠানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া জন্মনিবন্ধন সনদের বাধ্যবাধকতাও এখন তুলে দেওয়া হয়েছে। এ চারটি স্কুলে অন্যান্য স্কুলের শিক্ষার্থীদেরও ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে।

সিলেটভিউকে যেমনটি বলছিলেন সিসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম, ‘সোমবার থেকে স্কুলশিক্ষার্থীদের ফাইজারের ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। চারটি স্কুলে প্রতিদিন ৬০০ করে ২৪শ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। কেন্দ্রগুলোতে আমাদের লোকবল থাকবে। মহানগরীর ২৫ হাজার শিক্ষার্থীকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করেছে জেলা শিক্ষা অফিস। আমরা ভ্যাকসিন সরবরাহ করবো, পরে কোনো শিক্ষার্থীর সমস্যা হলে দেখবো।’

ডা. জাহিদ জানান, জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়ে জটিলতা থাকায় এটির বাধ্যবাধকতা বাদ দেওয়া হয়েছে। স্কুলের রেজিস্ট্রার অনুসারে শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, ধাপে ধাপে জেলার অন্যান্য এলাকায়ও শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এএসএম আব্দুল ওয়াদুদ। তিনি বলেন, ‘ফাইজারের ভ্যাকসিন নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় দিতে হয়। বেশিরভাগ স্কুলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ নেই। আপাতত মহানগরীর চারটি স্কুলে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। অন্যান্য স্কুলে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ প্রস্তুতের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে