লেখক: ড. ফজলে এলাহী মোহাম্মদ ফয়সাল

কোন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উৎপাদনশীলখাতে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। দেশীয় উদ্যোক্তাগণের বিনিয়োগ, প্রবাসীগণের বিনিয়োগ অথবা বৈদেশিক বিনিয়োগ সবই দেশের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, বেকারত্ব দূরীকরণ, জনগণের আয়স্তর বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিনিয়োগকারীগণকে উৎসাহ প্রদান, সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীগণকে সনাক্তকরণ ইত্যাদি সকলক্ষেত্রে বিভিন্ন চেম্বার অব কমার্স এবং ইন্ডাষ্ট্রির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে সর্বমোট ৭০টি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি রয়েছে। বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীগণকে উৎসাহ প্রদানের জন্য বিভিন্ন জেলা এবং এলাকাভিত্তিক সম্ভাব্য বিনিয়োগের খাতগুলো সনাক্ত করা প্রয়োজন। এলাকা অথবা অঞ্চলভিত্তিক সম্ভাব্য বিনিয়োগের খাত সনাক্তকরণ হতে পারে বিনিয়োগ বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। বিদেশে অবস্থানরত বিনিয়োগকারীগণ যদি দেশে বিনিয়োগ করতে উৎসাহি হন তবে অনেকক্ষেত্রে নিজ নিজ এলাকাকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। যেমন উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত সিলেট অঞ্চলের প্রবাসী জনাব কল্লোল সাহেব প্রিমিয়াম ফিশ এন্ড এগ্রো ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড নামক একটি মৎস্য এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান সিলেটের বলাউরায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যুক্তরাজ্যে অবস্থারত সিলেট অঞ্চলের প্রবাসী জনাব কয়ছর সাহেব সিলেট ওয়েল্ডিং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী নামক একটি প্রতিষ্ঠান সিলেট শহরে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সুতরাং এলাকা এবং অঞ্চলভিত্তিক সম্ভাব্য বিনিয়োগের খাতগুলো সনাক্ত করা বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন।


সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এর উদ্যোগে পরিচালিত “সিলেট অঞ্চলে প্রবাসী বিনিয়োগ: একটি সামগ্রিক পর্যালোচনা” নামক একটি গবেষণায় জড়িত হবার সুযোগ হয়েছিলো। ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশনের (এফ.জি.ডি) মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের সম্ভাব্য বিনিয়োগের খাতগুলো সনাক্তকরা হয়েছিলো। পরবর্তীতে বিভিন্ন বিনিয়োগের খাতের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গগণকে নিয়ে দুটি পৃথক প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়েছিলো। এ জন্য সিলেট চেম্বার অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য। পরবর্তীতে রিপোর্টটি লিখার পরবর্তীতে একটি পর্যালোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পর্যালোচনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন। পরবর্তীতে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গবেষণা পত্রটি প্রিন্ট আকারে প্রকাশ করে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড.এ.কে. আব্দুল মোমেন।

গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে সিলেট অঞ্চলে আগত মোট রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিলো যথাক্রমে ১২,৮৯৯.৫৫ এবং ১১,৩২৩ কোটি টাকা। এসব অর্থের বড় অংশ ব্যয় হয় পারিবারিক ব্যয় নির্বাহে ও ভোগ বিলাসে এবং এর ফলে দ্রব্যমূল্যে এর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সিলেট শহরের বন্দরবাজার এলাকার মাছের উচ্চমূল্যের একটি অন্যতম কারণ হলে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ। এছাড়াও জমি ক্রয়ে, বিলাস বহুল বাড়ী নির্মাণে, ফ্ল্যাট ক্রয়ে প্রবাসীগণ অর্থ ব্যয় করে থাকে।
সিলেট শহরের বিলাশ বহুল হোটেল নির্মাণে এবং বিভিন্ন শপিং মল তৈরীতে ইতিমধ্যে প্রবাসীগণ কর্তৃক প্রেরিত অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে। সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে অবস্থিত বারাকা পাওয়ার লিমিটেড কোম্পানী, সিলেট শহরের রোজভিউ হোটেল, হবিগঞ্জের বাহুবলে অবস্থিত দি প্যালেস রিসোর্ট, সিলেট খাদিম পাড়ায় অবস্থিত এক্সেলসিয়র হোটল এন্ড রিসোর্ট এর প্রবাসীগণের বিনিয়োগ রয়েছে। গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী সিলেট অঞ্চলে ঋণ-আমানতের অনুপাত প্রায় ২৫% যা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে অনেককাংশে কম। সিলেট অঞ্চলে শিল্প ঋণের পরিমাণ প্রায় ৬%। রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৬ সালে চাকুরীর প্রয়োজনে সিলেট জেলা থেকে বিদেশগমণ করেছেন ১৮,৫১৭ জন সুনামগঞ্জ জেলা থেকে বিদেশ গেছেন ৪,৩৫১ জন, হবিগঞ্জ জেলা থেকে বিদেশ গেছেন ১৬,২৫১ জন এবং মৌলভীবাজার থেকে বিদেশ গেছেন ১৪,৪২৯ জন। রিপোর্ট অনুযায়ী প্রায় ২,৩৫,০০০ জন সিলেট অঞ্চলের অধিবাসী সৌদি আরবে অবস্থান করছেন। ইংল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন যথাক্রমে প্রায় ৪,৩২,০০০ জন এবং ১,২০,০০০ জন অধিবাসী। রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ইংল্যান্ড এবং সৌদি আরব থেকে সিলেট অঞ্চলের প্রবাসীগণের মাধ্যমে এসেছে প্রায় ৪,১০০ কোটি টাকা এবং ২০৫০ কোটি টাকা।

সিলেট অঞ্চলে রয়েছে বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ। এ অঞ্চলে স্থানীয় জনগণের মাঝে রয়েছে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও ঐক্য। এছাড়াও এখানে জনগণের মাঝে রয়েছে ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে সহায়তা প্রদানের মানসিকতা। এ অঞ্চলে চাঁদাবাজি নেই অথবা অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে অনেক কম। এ অঞ্চলে রয়েছে পুঁজি জমি এবং কাঁচামালের (চনুপাথর, পাথর, বালু ইত্যাদি) পর্যাপ্ততা। গ্যাস এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন-তেল, বনাঞ্চল, কয়লা ইত্যাদি পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। এছাড়াও এখানে রয়েছে স্থলবন্দরের সুবিধা এবং দূষণমুক্ত পরিবেশ। সিলেট অঞ্চলে বিদ্যুতের উৎপাদন এবং সরবরাহ ভালো। সিলেট অঞ্চলের সম্ভাব্য বিনিয়োগের খাত সমূহ নি¤œরূপ-
আগর-আতর শিল্পঃ
সিলেট অঞ্চলে প্রচুর সংখ্যক আগর গাছের বাগান থাকার কারণে আগর আতর শিল্প ধীরে ধীরে বিকশিত হচ্ছে। কাঁচামালের সহজলভ্যতার ফলে তুলনামূলক কম খরচে আগর-আতর উৎপাদন করা বর্তমানে সিলেট অঞ্চলে সম্ভব হচ্ছে। বড়লেখা উপজেলার সুজানগরে আগর-আতর উৎপন্ন হয়ে থাকে। প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মিটার আগর-কাঠ প্রতি বছর উৎপাদিত হয়। সিলেট অঞ্চলের উৎপাদিত আতর সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরাই, সংযুক্ত আরব আমিরাতে রপ্তানী হয়ে থাকে। উৎপাদিত আতর রপ্তানীর পরিমাণ প্রায় ১০০ কোটি।
সিরামিক শিল্পঃ
সিলেট অঞ্চলে সিরামিক শিল্পের সম্ভাবনা রয়েছে। সিরামিক পণ্যের বিভিন্ন ধরণের কাঁচামাল যেমন বিভিন্ন ধরণের কাঁদামাটি, সোডা, সিলিকা প্রভৃতি সিলেট অঞ্চলে পাওয়া যায় এবং চীন, ভারত ও মালোয়েশিয়া থেকে আমদানী করা হয়। সিলেট অঞ্চলে বেশ কয়েকটি সিরামিক নির্মিত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এদের মধ্যে সিলেট জেলার স্থাপিত খাদিম সিরামিকস লিমিটেড অন্যতম। সিলেট অঞ্চলে কাঁচনির্মিত তৈজসপত্র উৎপাদন করা সম্ভব।
রাবার শিল্পঃ
বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে বর্তমানে প্রায় ৬,২২৬ হেক্টর জমিতে রাবার উৎপাদন করা হচ্ছে। সিলেট জেলার মালনিছড়া, লাক্কাতুরা, মণিপুর, মোমিনছড়া ইত্যাদি চা বাগানে রাবার চাষ হচ্ছে। সরকারী উদ্যোগে মৌলভীবাজার জেলার ভাটেরা রাবার বাগানে রাবার উৎপাদন হচ্ছে। হবিগঞ্জের রশিদপুরে এবং সিলেট জেলার খান চা বাগানে রাবার উৎপাদন হচ্ছে। বিদেশেও সিলেট অঞ্চলেরর রাবার উৎপাদন হচ্ছে। সিলেট অঞ্চলে সর্বমোট রাবার উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ৩৬,৭১,০০০ কেজি। সিলেট অঞ্চলে বিভিন্ন বাজারজাত পণ্য যেমন সাইকেল তৈরীর টায়ার, টিউব, গামবুট ইত্যাদি তৈরীর কারখানা হতে পারে।
কৃষিজাত শিল্পঃ
বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে কৃষিজাত শিল্প বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। এ অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে ধান এবং সবজি উৎপন্ন হয়। এছাড়াও তেজপাতা, লেবু, কলা, আনারস, কমলা, কাঠাল এ অঞ্চলে উৎপন্ন হয়ে থাকে। সিলেট অঞ্চলের লেবু বিদেশে রপ্তানী হয়। সিলেট অঞ্চলে আচার, জেলি, সস, পাটজাত পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয়ের সুযোগ রয়েছে।
পর্যটন শিল্পঃ
সিলেট অঞ্চলের ব্যাংকের রক্ষিত অর্থ যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী এ অঞ্চলের পর্যটন সেক্টরে বিনিয়োগ করা যায় তবে মুনাফা অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রবাসীদের অর্থ বিনিয়োগের একটি উপযুক্ত ক্ষেত্র হিসেবে পর্যটন শিল্পকে বিবেচনায় আনা প্রয়োজন। এ অঞ্চলের পর্যটন শিল্প বিকাশে বৈদেশিক বিনিয়োগ কার্যকর হবে বলে আশা করা যায়। টুরিস্ট স্পটগুলোর মধ্যে জাফলং, মাধবকুন্ড, লাউয়াছড়া, লালাখাল, শ্রীমঙ্গল, বিছনাকান্দি, রাতারগুল, ভোলাগঞ্জ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও খাদিম রেইন ফরেস্ট, হামহাম জলপ্রপাত, টাংগুয়ার হাওর, হাকালুকি হাওর, মাধবপুর লেক প্রভৃতি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় টুরিস্ট স্পট।
তথ্য-প্রযুক্তি খাতঃ
সিলেট অঞ্চলে প্রবাসী বিনিয়োগের খাত হতে পারে আই.টি সেক্টর। সিলেট শহরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সহ আরও ৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বছরের প্রায় ৪৫০ জন শিক্ষার্থী কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে গ্রাজুয়েট হচ্ছেন। এদের প্রায় ৮০% সিলেট অঞ্চলের অধিবাসী। কোম্পানীগঞ্জে একটি হাইটেক পার্ট স্থাপিত হয়েছে। শিক্ষিত জনবল কাজে লাগিয়ে সিলেট অঞ্চলে আই.টি সেক্টরের উন্নয়ন সম্ভব।
স্বাস্থ্যসেবা খাতঃ
সিলেট অঞ্চলের প্রবাসীগণের মান সম্মত হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার প্রতিষ্ঠায় অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। সিলেট অঞ্চলে বড় আকারের হাসপাতালে এবং বড় আকারের স্পেশিয়ালাইজড হাসপাতাল নির্মাণে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।
শিক্ষা-খাতঃ
সিলেট অঞ্চলের শিক্ষাখাতে প্রবাসী বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। সিলেট শহরের রাইজ, ইউরোকিডস, সানিহিল প্রভৃতি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবাসী বিনিয়োগ রয়েছে। প্রবাসী বিনিয়োগের মাধ্যমে এ অঞ্চলে কারিগরী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করা সম্ভব। সিলেট অঞ্চলে নার্সিং কলেজের সংখ্যা বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
ব্যাটারী ও টায়ার উৎপাদনঃ
সিলেট অঞ্চলে ব্যাটারী ও টায়ার উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। সিলেটে উৎপাদিত ন্যাচারাল রাবার প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে গাড়ী, মটর সাইকেল, বাই সাইকেল ও রিক্সার টায়া উৎপাদন করা সম্ভব। সিলেটে ব্যবহৃত পুরাতন ব্যাটারীগুলো রিসাইক্লিং করে সিলেটেই উৎপাদন করে সমগ্র দেশে বিক্রয় করা সম্ভব।
প্লাস্টিক শিল্পঃ
সিলেট অঞ্চলে প্লাস্টিক সামগ্রী তৈরীর ফ্যাক্টরী স্থাপন করা সম্ভব। সিলেট অঞ্চলে প্লাস্টিক সামগ্রী যেমন- প্লাস্টিক বক্স, প্লাস্টিক ইনজেকশন, ওয়ান টাইম গøাস, টুথপিক, স্যান্ডেল, খেলনা, স্টেশনারী, ব্যাগ, প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার, বোতল, ফাইল ইত্যাদি উৎপাদন করা সম্ভব।
এছাড়াও অন্যান সম্ভাবনাময় বিনিয়োগের ক্ষেত্রগুলো হলো-
কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী শিল্প, ইট উৎপাদন, খাদ্য প্রকিয়াজাতকরণ শিল্প, ক্যাবল ইন্ডাষ্ট্রি, মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প, জৈবসার কারখানা, গবাদিপশুজাত শিল্প, চারকোল উৎপাদন, কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রি, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ইত্যাদি।

এছাড়াও সিলেট অঞ্চলে গøাস উৎপাদন, সিমেন্ট উৎপাদন, চামড়া প্রক্রিয়াজাতকর শিল্প, টেক্সটাইল শিল্প, বিদ্যুৎ প্লান্টে বিনিয়োগ করা যেতে পারে।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি এর প্রেসিডেন্ট তাহমিন আহমদ বিনিয়োগের সম্ভাব্য খাতসমূহে বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে উক্ত খাতসমূহের জন্য বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি (এক্সপার্ট পারসন) তৈরি করা প্রয়োজন। জনাব তাহমিন আহমদ-এর মতে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী যারা ভালো অবস্থানে আছে তাদের মূল্যায়ন করে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা প্রয়োজন। সম্ভাব্য খাতগুলোতে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করার জন্য পরামর্শদাতা এবং প্রশিক্ষণদাতা নিয়োগের মাধ্যমে খাতগুলোর উন্নয়ন প্রয়োজন। সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিএর প্রেসিডেন্টের মতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রধান অন্তরায়। সিলেট চেম্বার অর্ব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি ইতিপূর্বে প্রবাসী বাংলাদেশীদের নিয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিনিয়োগে উৎসাহিত করার জন্য চেষ্টা করেছে। এটি অবশ্যই একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি যেভাবে এ অঞ্চলের সম্ভাব্য বিনিয়োগের খাতগুলোকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছে সেটি অবশ্যই প্রশংসারযোগ্য পদক্ষেপ। সিলেট চেম্বারের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে দেশের প্রতিটি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিগুলোর অঞ্চল এবং এলাকাভিত্তিক সম্ভাব্য বিনিয়োগের খাতগুলোকে সনাক্ত করা প্রয়োজন। এটি হতে পারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগকারীগণকে উৎসাহ প্রদানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

 

লেখক: অধ্যাপক, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।