টানা ৬ দিনের অব্যাহত বর্ষণ ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার অর্ধলক্ষ মানুষ। 

 


তলিয়ে গেছে দোয়ারাবাজার-ব্রিটিশ ট্রামরোড, দোয়ারাবাজার-বগুলা-লক্ষীপুর ভায়া মহব্বতপুর সড়কসহ বিভিন্ন রাস্তা ও ফসলের মাঠ। বিচ্ছিন্ন রয়েছে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও অফিসপড়াসহ উপজেলা সদরের সাথে নরসিংপুর, বাংলাবাজার, বগুলা, লক্ষীপুর, সুরমা ও দোয়ারা সদর ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ। 

 

গৃহপালিত পশুপক্ষিসহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বানভাসি মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন। বৈরি আবহাওয়াসহ ঘরের মেঝেতে পানি উঠায় উঁনুনে হাঁড়ি বসাতে পারছে না অনেক হতদরিদ্র পরিবার।

 

রবিবার রাতভর ভারি বর্ষণের পর সোমবার ভোর থেকে হালকা বৃষ্টিপাত হলেও ভাটিতে পানির টান না থাকায় উজানের পানিতে টুই-টম্বুর হাওড়, খাল-বিল, নদী-নালা। বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমা, চেলা, মরা চেলা, চিলাই, চলতি, কালিউরি, ধূমখালি ও ছাগলচোরাসহ বিভিন্ন হাওড়, খাল-বিল ও নদী-নালার পানি। একাকার হয়ে পড়েছে রাস্তা মাঠঘাট ও জল-স্থল। তলিয়ে যাওয়া অবশিষ্ট বোরো ফসল, বীজতলা ও রবিশস্য বিনষ্ট, গো-খাদ্য সংকটে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিকুল। ইতোমধ্যে গুটিকয়েক মাছের পুকুরে পানি ঢুকায় চরম শঙ্কায় রয়েছেন মৎস্য খামারিরাও। কারণ গত দু’বছরে পরপর কয়েক দফা বন্যায় ভেসে গেছে শতাধিক খামারের কোটি কোটি টাকার মাছ, মাছের পোনা ও রেনু। অচিরেই দোয়ারাবাজার উপজেলাকে উপদ্রুত এলাকা ঘোষণার দাবি জনিয়েছেন বানভাসিসহ অভিজ্ঞ মহল।

 

সোমবার (১৬ মে) দিনভর উপজেলা সদর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছের উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দেবাংশু কুমার সিংহ সহ প্রশাসনিক বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। 

 

দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের রাস্তা, মাঠঘাট, ফসলি জমি পানিতে একাকার হয়ে গেছে। এ ছাড়া উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নের রাস্তা, মাঠঘাট ও ফসলি জমিও ক্রমশ তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে এ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রদান করা হবে। দূর্যোগ মোকাবেলায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক তৎপরতাসহ আমাদের সার্বক্ষণিক মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে। 

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/টিআই/এসডি-৩২