ছবি : আহমেদ শাহিন

জ্বালানি তেল পেট্রল ও অকটেনের দাম একসঙ্গে প্রায় অর্ধশত টাকা বেড়ে যাওয়ায় সিলেটে গত দুদিন থেকে যাত্রী কম পাচ্ছেন মোটরসাইকেল বা বাইক রাইডাররা। এতে বিপাকে পড়েছেন তারা। 

বাইক রাইডারদের বক্তব্য- পেট্রল ও অকটেনের দাম বাড়ায় বেশি ক্ষতি হয়েছে তাদের।


এদিকে সিলেটে ভাড়ায় মোটরসাইকেলযোগে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতকারী যাত্রীরা বলছেন- বাইক রাইডাররা আগে এমনিতেই অস্বাভাবিক বেশি ভাড়া নিতেন। এখন তারা ভাড়া আরও বাড়িয়ে দেবেন। এ অবস্থায় মোটরসাইকেলের যাত্রীরাও পড়েছেন ভোগান্তিতে। 

গত ৫ আগস্ট (শুক্রবার) রাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সরকার। এর মধ্যে মোটরসাইকেল চলাচলের দুই ধরণের তেল- পেট্রল প্রতি লিটার ১৩০ ও অকটেন ১৩৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়। যা আগে ছিলো ৮৬ ও ৮৯ টাকা। ফলে পেট্রোল ও অকটেনের দাম লিটারপ্রতি বেড়ে যথাক্রমে ৪৪ টাকা ও ৪৬ টাকা হয়ে যায় ।

এ অবস্থায় শনিবার থেকে সিলেটে বাইক রাইডাররা বাড়িয়ে দিয়েছেন ভাড়া। আগে যতটুকু দূরত্বের রাস্তা যাওয়ার জন্য তারা ১০০ টাকা দাবি করতেন, এখন সে জায়গায় ২০০ টাকা পর্যন্ত দাবি করছেন। ফলে শনি ও রবিবার (৬ ও ৭ আগস্ট) কমেছে তাদের যাত্রী।

লিটন আহমদ নামের দক্ষিণ সুরমার বাসিন্দা এক বাইক রাইডার সিলেটভিউ-কে বলেন, ‘দুদিন আগেও গড়ে প্রতিদিন হাজার-বারো শ টাকা রোজগার করতে পারতাম। কিন্তু পেট্রল-অকটেনের দাম বাড়িয়ে আমাদের পেটে লাথি মারা হয়েছে। গত দুদিনে ইনকাম করেছি মাত্র ৬০০ টাকা। শনিবার ২০০ ও রবিবার ৪০০ টাকা।’

তিনি বলেন, ‘পেট্রল-অকটেনের দাম বাড়ায় আমাদের বাধ্য হয়ে বেশি টাকা দাবি করতে হচ্ছে। যেমন- আগে জিন্দাবাজার পয়েন্ট থেকে দক্ষিণ সুরমার ওভারব্রিজে ৫০ টাকায় একজন যাত্রীকে নিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু এখন কমপক্ষে ৮০ টাকা নিতে হবে। তা না হলে আমাদের লোকসান হবে।’

এমন বক্তব্য ‘সিলেট কোথায় যাবেন’ নামক রাইড শেয়ারিং গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক রানা আহমদেরও। তিনি সিলেটভিউ-কে বলেন- ‘পেট্রল-অকটেনের দাম বাড়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি আমরা বাইক রাইডাররা। কোম্পানিগুলোর অসযোগিতা ও প্রশাসনের নানা হয়রানির সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে ইউজারদের (যাত্রী) সঙ্গে ভাড়া নিয়ে বচসা। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় আমরা বাধ্য হয়ে ভাড়া বেশি নিতে হচ্ছে।’

এদিকে, আগে থেকেই রাইডারদের বিরুদ্ধে ‘গলাকাটা’ ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ ছিলো যাত্রীদের। এবার সে মাত্রা আরও বেড়ে যাবে বলে বক্তব্য মানুষের। 

সিলেট নগরীর টিলাগড় এলাকার বাসিন্দা আব্দুল খালিক একটি বেসরকারি চাকির করেন। তিনি প্রায় সময় বাঁচানোর জন্য রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে নিজের জিন্দাবাজারস্থ অফিসে আসেন। তাঁর অভিযোগ- রাইডাররা কোনো সময়ই অ্যাপসের আবেদনের মাধ্যমে রাইড শেয়ার করেন না। তারা টিলাগড় পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকেন এবং ডেকে ডেকে মানুষকে বিভিন্ন স্থানে চুক্তি করে নিয়ে যান। কিন্তু তারা ৩-৪ কিলোমিটার জায়গা যাওয়ার জন্যই ১০০-১২০ টাকা হেঁকে বসেন। জিন্দাবাজার আসার ক্ষেত্রেও তারা ১০০ টাকার উপরে দাবি করেন। অনেক দর কষাকষি শেষে ৭০-৮০ আসতে রাজিন। অথচ অ্যাপসে আসলে জিন্দাবাজার আসতে হয়তো ৩৫-৪০ টাকা ভাড়া হতো। 

আব্দুল খালিক বলেন, ‘আগেই বাইক রাইডাররা আমাদের গলা কাটতেন। এবার পেট্রল-অকটেনের দাম বাড়ায় তারা আরও বেপরোয়া হয়ে যাবেন। সবশেষে আমরা সাধারণ মানুষদেরকেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার খেসরাত দিতে হচ্ছে।’


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম