বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ‘জোরালো আওয়াজ’ প্রয়োজন বলে মনে করছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসকি) ২০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ। নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে এ নিয়ে একটি নাতিদীর্ঘ বক্তব্য পোস্ট করেছেন তিনি।

ওই পোস্টে তিনি উল্লেখ করেছেন, স্থানীয় এমপি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন উন্নয়নের জন্য কাজ করছেন। কিন্তু প্রশাসনের নির্লিপ্ততা রয়েছে।


উন্নয়নকে ‘জনসাধারণের হক’ হিসেবেও অভিহিত করেছেন আজাদ। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সবাইকে আওয়াজ তোলার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের ফেসবুক পোস্টটি সিলেটভিউ২৪ডটকম-এর পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো...

“আসুন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে আওয়াজ জোরালো করি:
১. সড়ক পথে সিলেট থেকে চট্টগ্রামের যাতায়াত ব্যবস্থা খুব একটা ভাল নয়। দূরত্বও অনেক। সিলেটের সাথে চট্টগ্রামের সরাসরি কোন ফ্লাইটও নেই। তাই চট্টগ্রাম যেতে হলে সিলেটের মানুষকে ছুটতে হয় ট্রেনের টিকেটের জন্য। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী ট্রেনে একটিমাত্র এসি বগি। বগিগুলোও অত্যন্ত নিম্নমানের। এছাড়া আসন স্বল্পতার কারণে টিকেট নিয়ে কাড়াকাড়ি তো আছেই।

তাই প্রবাসী অধ্যুষিত পূণ্যভূমির সিলেটের মানুষের জন্য এই রুটে চলাচলকারী ট্রেনের বগি ও সেবার মান বাড়ানোর দাবি জোরালো হয়েছে। সিলেটবাসীর পক্ষ থেকে মাননীয় রেলমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করছি অবিলম্বে সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী ট্রেনে এসি/নন এসি বগি বৃদ্ধি ও সেবার মান উন্নত করুন। এতে আপনার এবং আপনার মন্ত্রণালয়ের যেমন সুনাম হবে। তেমনি সিলেটবাসীর কাছে সরকারের ভাবমূর্তিও আরও উন্নত হবে। পূণ্যভূমির মানুষেরও দোয়া পাবেন।

২. বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন সিলেটের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ নেন। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সিলেট-ঢাকা মহাসড়ককে ৬ লেনে উন্নীতকরণ, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ককে ৪ লেনে উন্নীতকরণ, বাদাঘাট বাইপাস সড়ককে ৪ লেনে উন্নীতকরণ এবং বিমানবন্দর-চৌকিদেখি সড়ক চারলেনে উন্নীতকরণ। সবগুলো প্রকল্প সরকার থেকে পাশ হলেও জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে কাজ শুরু সম্ভব হচ্ছে না। অথচ ইতোমধ্যে সরকারের পাঁচ বছর মেয়াদের মধ্যে প্রায় পৌণে চার বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে। কিন্তু প্রকল্পগুলোর কাজ শুরুই করা যায়নি।

জমি অধিগ্রহণের দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের। কিন্তু নানা সমস্যা দেখিয়ে জমি অধিগ্রহণের কাজ আটকে রাখা হয়েছে। এতে উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছেন সিলেটবাসী। কেবলমাত্র জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় ভেস্তে যেতে বসছে মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অক্লান্ত পরিশ্রমে পাশ করানো প্রকল্পগুলো। সিলেটবাসীর কাছে সরকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। সিলেটের উন্নয়নের দায়িত্ব স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজে নিয়েছেন। তাই উন্নয়নে সিলেটকে পিছিয়ে রাখা মানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা।

তাই জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ জানাই, অতিদ্রুত জমি অধিগ্রহণসহ সৃষ্ট সকল জটিলতা নিরসন করে সরকারের পক্ষ থেকে উপহার দেয়া সিলেটবাসীর কাঙ্খিত উন্নয়ন বাস্তবায়নে উদ্যোগী হোন। ইতিহাস স্বাক্ষ্য দেয়, হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর পূণ্যভূমিতে অতীতে যেসব সরকারি কর্মকর্তা নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। যারা সিলেটের মানুষের স্বার্থে কাজ করেছেন তারা পুরস্কৃত হয়েছেন। চাকুরিজীবনে তারা আরও সফল হয়েছেন, খ্যাতি লাভ করেছেন। আর যারা ভিন্নপথে হেঁটেছেন তারা ধ্বংস হয়েছেন। পেশাগত, সামাজিক ও পারিবারিকভাবেও তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।

মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এমপি সিলেটের উন্নয়নে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসনের নির্লিপ্ততা ও আমাদের ব্যর্থতায় যদি যথাসময়ে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর সফল বাস্তবায়ন না হয় তবে সিলেটের মানুষের অভিশাপ থেকে আমরা কেউই রক্ষা পাবো না। উন্নয়ন হচ্ছে জনসাধারণের হক। ন্যায্য হক থেকে তাদেরকে বঞ্চিত করা অনুচিত।

আসুন আমরা উন্নয়নের জন্য আওয়াজ তুলি। সিলেটের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাসময়ে সম্পন্নের তাগিদ জোরদার করি।”

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে