বৈশ্বিক সংকটের কারনে দেশের অর্থনীতিতে পড়েছে মূল্যস্ফীতির প্রভাব। বেড়ে গেছে নিত্য প্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম। বাদ থাকেনি টয়লেট্রিজ সামগ্রীও। নিত্যব্যবহার্য পন্যের মধ্যে সাবান, শ্যাম্পু, ডিটারজেন্ট পন্যগুলো উৎপাদন ও বাজারজাত করে থাকে শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বহুজাতিক কোম্পানি ইউনিলিভার গ্রুপ। সম্প্রতি টয়লেট্রিজ পণ্যের দাম বাড়িয়েছে কোম্পানিটি। হুট করে দাম বৃদ্ধির ফলে বিপাকে পড়েছেন সাধারন ভোক্তারা।

বিশ্লেষনে দেখা গেছে, গত দুই মাসে সাবান, ডিটারজেন্টের মতো নিত্য দৈনন্দিন ব্যবহারের টয়লেট্রিজ পণ্যের দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। দাম বৃদ্ধির ফলে ক্রেতাদের রোজগারে পড়ছে বাড়তি চাপ।


ই্উনিলিভার কোম্পানির পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে লাক্স সাবান, হুইল সাবান, হুইল পাউডার, ভিমবার, সার্ফ এক্সেল ইত্যাদি। মূল্যবৃদ্ধির বিশ্লেষণে দেখা যায়, পূর্বে মিনি লাক্স সাবানের দাম ছিলো ১০ টাকা, যা এখন ১৫ টাকা। বড় লাক্স সাবানের দাম ছিলো ৫৫ টাকা, যা বর্তমানে ৭৫ টাকা। হুইল সাবানের দাম ছিলো ২৫ টাকা, যা বর্তমানে ৩০ টাকা। ভিমবারের দাম ছিলো ৩৫ টাকা, যা এখন ৪০ টাকা। হুইল পাওডারের দাম ছিলো ৯০ টাকা, যা বর্তমানে ১৪২ টাকা। সার্ফ এক্সেলের দাম ২১০ টাকা, যা বর্তমানে ২৮০ টাকা।

দেশে সুগন্ধি সাবানের বাজারের আকার বার্ষিক প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার। এ বাজারের অর্ধেকের বেশি ইউনিলিভারের হাতে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, আগস্ট মাসে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পরেই এসব পন্যের দাম বেড়ে গেছে। আগের দামের কোনো পন্য এখন আর বাজারে নেই। দাম বৃদ্ধির ফলে ক্রেতাদের প্রতিদিনই ক্রেতাদের তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।

ক্রেতারা বলছেন, নিত্যব্যবহায পন্যের এ মূল্যবৃদ্ধি অগোচরে সাংসারিক খরচ অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে। টয়লেট্রিজ পণ্যের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার মধ্যে গত ৭ সেপ্টেম্বর ইউনিলিভারসহ শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে বসে ভোক্তা অধিদপ্তর।

সাবান, টুথপেস্ট, ডিটারজেন্টসহ বিভিন্ন জিনিসের দাম কয়েক দফা বাড়ানোর পেছনে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের মূল্য বেড়ে যাওয়া, টাকার বিপরীতে ডলার শক্তিশালী হয়ে ওঠা এবং পরিবহন ব্যয়কে কারণ হিসেবে দাবি করেন উৎপাদনকারী কোম্পানির প্রতিনিধিরা।

বৈঠকে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের সিএফও জাহিদ মালিথা তাদের পণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে বলেন, ‘ইউনিলিভার সেমি কর্পোরেট কোম্পানি। আমাদের কাঁচামালের ৮০ শতাংশ আমদানি নির্ভর। আগে যেখানে ডিটার্জেন্ট পাউডার তৈরি করতে খরচ হতো ৮৩ টাকা সেটি এখন খরচ পড়ছে ১৯০ টাকা। সোডায় খরচ হতো ২১ টাকা সেটি এখন ৫৭ টাকা পার কেজিতে বেড়েছে। সেই অর্থে আমাদের টুথপেস্টের দাম বাড়েনি।’

দাম কমানোর বিষয়ে জাহিদ মালিথা বলেন, ‘আমরা শুধু দাম বাড়াই না কমিয়েও থাকি। ২০১১-২০১৩ সাল সময়ে সাবানের কাঁচামালের দাম কমার কারণে সাবানের দাম কমানো হয়। তবে সবকিছু দাম বিবেচনায় আমরা ভোক্তার কথা মাথায় রেখেই মুনাফার কথা চিন্তা করি। বিশ্ববাজারে কাঁচামালের দাম কমলে আমরা অবশ্যই দাম কমাব।’


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ঢাটা/ইআ-০৫