দুর্গা উৎসব জমিয়ে তুলতে সিলেটর ওসমানীনগরে ৩৪ টি মন্ডপে প্রতিমা তৈরি ও সাজসজ্জায় ব্যস্থ সময় পার করছেন আয়োজক ও কারিগররা। ব্যাপক আনুষ্ঠানিকতা এবং আড়ম্বরের মধ্য দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা পালন করে থাকেন। এবছরও কমতি নেই সাজসজ্জায়।

 


দেবী দুর্গার আগমনে নতুন করে সাজানো হচ্ছে মন্দির প্রাঙ্গন। শেষ পর্যায়ে রয়েছে প্রতিমা তৈরীও। এখন শুধু রংতুলি বাকি। কোন কোন-মন্ডপে চলছে বর্ণিল সাজ-সজ্জার কাজ। কেউ প্রতিমায় রং তুলির আঁচড় দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কেউ মন্ডপের ডেকোরেশন তৈরিতে। আর কয়েক দিনের মধ্যেই পূর্ণতা পাবে প্রতিমা। ঢাক, ঢোল, শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনি দিয়ে দেবী দুর্গাকে বরণ করতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ওসমানীনগরের ভক্তরা।

 

এদিকে, শারদীয় দুর্গা উৎসব উপলক্ষে ৪ স্থরের নিরাপত্তা জোরদার করেছে প্রশাসন। ওসমানীনগর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সম্প্রতি দুর্গা পূজায় নিরাপত্তা বিষয় নিয়ে মন্ডপ কমিটির দায়িত্বশীলদের সাথে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

পূজা মন্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিতে ৪ স্থরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারসহ উপজেলায় গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশের ভ্রাম্যমাণ টিম ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের টহল অব্যাহত থাকবে। নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনের জন্য থানা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি মন্ডপ কমিটিকে আশ্বাস প্রধান করা হয়।

 

জানা গেছে, আগামী ১ অক্টোবর ষষ্ঠীপূজার মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হবে। ৫ই অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে ৫ দিন ব্যাপি এই উৎসবের সমাপ্তি হবে। এ বছর উপজেলায় ৩৪টি মন্ডপে দুর্গা পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সার্বজনীন ২৮টি, ব্যাক্তিগত ৬ টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাউৎসব।

 

সরেজমিনের উপজেলার কয়েকটি পূজা মন্ডপে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতিমা তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। অনেকের কাজই শেষের পথে। কেই রংতুলির প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নতুন করে সাজানো হচ্ছে মন্দির প্রাঙ্গন। জোরদমে চলছে বর্ণিল সাজ-সজ্জার কাজ।

 

মৃৎশিল্পীরা জানান, পূজার আগে পুরো মাসে দম ফেলানোর ফুরসত নেই তাদের। বছরের অন্য সময়ে কাজ থাকে না। মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা আগের মতো নাই। যে কারণে তাদের এই পেশায় টিকে থাকা কঠিন। বছরের অন্যান্য সময় তারা কৃষিকাজসহ বিভিন্ন কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। তাদের অনেকেই পেশাও পরিবর্তন করছেন।

 

শিল্পীরা বলেন, গত ২বছর করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের আর্থিক অনেক ক্ষতি হয়েছে। যা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে। গত বছরের তুলনায় এবার কাজের পরিমান একটু বেশি। এখন ২৪ ঘণ্টা প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত রয়েছেন তারা।

 

ওসমানীনগর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি চয়ন পাল বলেন, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে উপজেলার সকল মন্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দর সাথে মত বিনিময় হয়েছে। সরকারী নির্দেশনা মেনেই এবছর দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আমরা আশাবাদি প্রতিবছরের ন্যায় এবারও শান্তি -শৃঙ্খলা ও উৎসব মুখর পরিবেশে দুর্গা পূজা উদযাপন হবে।

 

ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম মাইন উদ্দিন বলেন, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার সকল মন্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে মত বিনিময় হয়েছে। দুর্গা পূজা উপলক্ষে ৪ স্থরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/রনিক/এসডি-১০