(প্রতীকি ছবি)

ভোটের আগে অর্ধশতাধিক ভোটারদের টাকা দিয়েছিলেন প্রার্থী। তবে পরাজিত হওয়ায় মামলার আসামি করলেন সেই ভোটারদের। সিলেট তোলপাড় করা ঘটনাটি ঘটেছে জেলার গোলাপগঞ্জে। 

সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজিত এক প্রার্থী জেলার ৬৬ জন জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এম মুজিবুর রহমান (৫০) নামের এই প্রার্থী। রোববার (১ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক শাকিলা ফারজানা চৌধুরীর আদালতে মামলাটি করেন তিনি। মুজিবুর রহমান পেশায় একজন আইনজীবী। 


গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মুজিবুর রহমান গত ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সদস্যপদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। 

মামলায় উল্লেখ, অভিযুক্ত ৬৬ জন জনপ্রতিনিধির প্রত্যেকে তাঁর কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন। তবে এসব ব্যক্তি টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করছেন।

মামলা করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীর আইনজীবী দেবব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন- আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।

মামলায় যেসব জনপ্রতিনিধিদের আসামী করা হয়েছে তাঁরা হলেন- মইজ উদ্দিন বলাই (৫৫), রাসেল আহমদ নাজির (৩৮), তারেক আহমদ (৩৫), হোসেন আহমদ খোকা (৫২), মোস্তাক আহমদ (৩৫), হযরত আলী (৫৫), আফিয়া বেগম (৩৫), লাইলী বেগম (৪৮), রুনা আক্তার নাদিয়া (৩০), শাহেনা আক্তার (৪৮), ফাহেল আহমদ (৩৮), সুবোধ চন্দ্র দাস (৪৫), শাহাব উদ্দিন ইরান, আফিয়া বেগম (৪০), আব্দুল কাইয়ুম (২৫), কবির আহমদ (৩৫), মো. আবুল কাশেম (৪৫), সুমি বেগম (৩০), মুজিবুর রহমান দুলাল (৪০), শামীম আহমদ (৫০), রেজাউল করিম রাজু (২৮), কয়েছ আহমদ (৪০), আয়রুন নেছা (৬০), উস্তার আলী (৬০), পাপিয়া বেগম (২৮), আব্দুল মুমিত (৪৮), মিজানুর রহমান (৩০), আলা উদ্দিন (৬০), দিলবি বেগম (৪০), স্বপ্না বেগম (৩৫), আবদুল হক (৪৫), রত্না রানী দাস (৪২), ফারুক মাহমুদ (৬০), আব্দুল হাকিম পারভেজ (৪৮), মো. ফলিক উদ্দিন (৪৫), জোছনা বেগম (৫০), সাফিয়া বেগম (৩০), রেখা বেগম (৩৫), দিলারা বেগম (৩০), জায়দা বেগম (৪০), মুজিবুর রহমান মল্লিক (৪৫), জালাল উদ্দিন (৪৮), বেলাল আহমদ (৩৮), চুনু মিয়া (৫৮), এম.এ আহাদ (৪০), আফছারুন নেছা (৪০), মিনা বেগম (৪০), জামিল আহমদ (৩৫), শেফা বেগম (৩২), আনোয়ার হোসেন আনু (৫০), ইমাম উদ্দিন কানাই (৪০), দেলোয়ার হোসেন (৩৮), জাহেদ আহমদ (৫২), আবুল হোসেন (৫৫), পিয়ারা বেগম (৩৫), বিভা রানী দাশ (৫০), শাপলা আক্তার (২৮), মোহাম্মদ কবিরুল ইসলাম (৪০), শামীম আহমদ (৩৩), কামরান হোসেন (৪০), মো. গিয়াস উদ্দিন (৪২), বুদু মিয়া (৫৫), ফয়ছল আহমদ (৩৪), ছালেহা বেগম (৪০), রাজিয়া সুলতানা (৫০) ও ছালমা খানম (২৮)। 

তারা সবাই গোলাপগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার। 

স্থানীয় সূত্র জানায়, গত জেলা পরিষদ নির্বাচনে তাঁকে ভোট দেওয়ার শর্তে নিজ নির্বাচনী এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের ৬৬ জন সদস্যকে টাকা দেন মজিবুর রহমান। কিন্তু নির্বাচনে তিনি ৩১টি ভোট পান। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। তবে মামলায় ভোট দেওয়ার শর্তে টাকা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।

এ বিষয়ে রোববার সন্ধ্যায় এম মুজিবুর রহমান সিলেটভিউ-কে বলেন, মামলার আসামিদের আমি ফেরত দেওয়ার শর্তে টাকা দিয়েছিলাম।

‘ভোট দেওয়ার শর্তে টাকা দিয়েছিলেন কি না’ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- টাকা কিন্তু আমি ঋণ দেইনি। এ বিষয়ে আর কিছু বলতে পারবো না।  

সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম