সিলেট নগরীতে নিয়মবহির্ভূতভাবে বাণিজ্যমেলার আয়োজন বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।
 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘মেলা পরিপত্র ২০২২ উপেক্ষা করে উপশহর এলাকায় এ মেলার আয়োজন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, বাণিজ্যমেলা আয়োজনের জন্য সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর বার বার আবেদন করা হলেও অনুমতি দেয়া হয়নি। অথচ একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়মবহির্ভূতভাবে খেলার মাঠে মেলা আয়োজনের অনুমতি দেয় হয়।
 


বৃহস্পতিবার নগরীর জেলরোডস্থ চেম্বার ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তাহমিন আহমদ বলেন, বৃহত্তর সিলেটের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি। এ প্রতিষ্ঠান ইতোপূর্বে ১৪টি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা সফলভাবে আয়োজন করেছে। কিন্তু কয়েক বছর ধারে স্থানীয় প্রশাসনের অসহযোগিতা ও সিলেট শহরে উপযোগী মাঠ বরাদ্দ না পাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা আয়োজনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
 

তাহমিন বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সমূহের সাথে সিলেটের বাণিজ্য সম্পর্ক অত্যন্ত শক্তিশালী। প্রতি বছর ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স ও ভারত সরকারের আমন্ত্রণে আমরা সিলেট চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে আসাম, মেঘালয়সহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সমূহে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সম্মেলনে যোগদান করি। কিন্তু উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আমরা ভারতীয় ব্যবসায়ীদেরকে সিলেটে কোনো প্রোগ্রামে আমন্ত্রণ জানাতে পারি না। তাই আমরা ২০২২ সালের নভেম্বরে মাসব্যাপী সিলেট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা এবং এই সাথে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া বায়ার-সেলার মিট আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করি। সেই লক্ষ্যে সিলেট সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ অথবা শাহী ঈদগাহস্থ শেখ রাসেল স্টেডিয়াম বরাদ্দ চেয়ে ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবর পত্র প্রেরণ করি। একই তারিখে আমরা সিলেট সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ অথবা শাহী ঈদগাহ শেখ রাসেল স্টেডিয়ামটি বরাদ্দ পাওয়ার লক্ষ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বরাবরে পত্র প্রেরণ করি। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনও এব্যাপারে সম্মতিসূচক পত্র প্রেরণ করে এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়টি বিবেচনার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর সুপারিশ করেন। কিন্তু এরপরও জেলা প্রশাসক মাঠটি সিলেট চেম্বারকে বরাদ্দ করেননি। পরবর্তীতে সিলেট অন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা ও বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া বায়ার-সেলার মিট আয়োজনের লক্ষ্যে শেখ রাসেল স্টেডিয়াম বরাদ্দ পাওয়ার লক্ষ্যে আমরা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পত্র প্রেরণ করি। সিলেট চেম্বারের অনুরোধের প্রেক্ষিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাঠটি বরাদ্দের জন্য ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকেও সুপারিশ করেন।
 

তাহমিন বলেন, বাণিজ্যমেলা ও বায়ার-সেলার মিট আয়োজনের লক্ষ্যে মাঠ বরাদ্দের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর চেম্বারের পক্ষ থেকে ৩ দফা পত্র দেওয়া হলেও তিনি এব্যাপারে কোনো জবাব দেননি। এর পর আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরে পত্র প্রেরণ করলে ‘মেলা পরিপত্র ২০২২ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু এরপরও সিলেট চেম্বারকে মেলা আয়োজনের জন্য মাঠ বরাদ্দ দেয়া হয়নি।
 

তাহমিন বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ‘মেলা পরিপত্র ২০২২’ এর ২ (ক) এবং (খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকা ছাড়া দেশের যেকোনো বিভাগীয়, জেলা বা উপজেলা শহরে বাণিজ্যমেলা আয়োজনের আগে সংশ্লিষ্ট জেলার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি ও সরকারি কোষাগারে ফি প্রদান এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করতে হয়। জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট জেলা চেম্বারের সুপারিশ ও স্থানীয় পুলিশ বিভাগের মতামত গ্রহণ করে আইন অনুযায়ী মেলা আয়োজনের অনুমতি প্রদান করতে পারেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় উপশহরস্থ ‘আই’ ব্লক মাঠে অনুষ্ঠিতব্য বাণিজ্যমেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিকে অবগত করা হয়নি এবং সুপারিশও গ্রহণ করা হয়নি।
 

তাহমিন বলেন, নিয়মবহির্ভূত মেলা আয়োজন বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় প্রশাসনের যে ক্ষমতাবলে একটি প্রতিষ্ঠানকে খেলার মাঠে মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একইভাবে সিলেট চেম্বারকেও শাহী ঈদগাহস্থ শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে মেলা আয়োজনের অনুমতি দেয়া হোক।
 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/এসডি-০৮