ছবি : শহিদুল ইসলাম সবুজ

কাটা একটি রশির সূত্র ধরে সিলেটে একটি হত্যারহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। বিষয়ে বুধবার (৮ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছে সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি)। 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়- সিলেটে প্রবাস ফেরত সাজ্জাদ আলীকে (৩৫) পারিবারিক দ্বন্ধে হত্যা করা হয়েছে। ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগে এনে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা দায়ের করেন জাহাঙ্গীর আলী। মামলা দায়েরের পর পুলিশের তদন্তে সাজ্জাদ আলী হত্যার নেপথ্যে জাহাঙ্গীর আলীর জড়িত থাকার তথ্য পায় পুলিশ। ভাই হত্যার দায় স্বীকার করে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। প্রবাস ফেরত সাজ্জাদ আলী হত্যার ঘটনায় পুলিশ ইতোমধ্যে ৩জনকে গ্রেফতার করেছে। 


এসএমপি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) সুহেল রেজা পিপিএম বলেন- প্রবাস ফেরত সাজ্জাদ আলীকে পারিবারিক দ্বন্ধের জেরে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নিহত সাজ্জাদ আলীর ভাই জাহাঙ্গীর আলী ও সিরাজ আলীকে গ্রেফতার করেছে। মূলত নিহত সাজ্জাদ আলী উত্তরাধিকারভাবে প্রাপ্ত জায়গা-জমি ভাগবাটোয়ারা করার তাগিদ দেয়ায় তাদের মধ্যে মনমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এই জেরেই হত্যা করা হয় তাকে। ঘটনাকে আড়াল করার জন্য জাহাঙ্গীর আলী নিজেই বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। 

তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মামলা বাদী জাহাঙ্গীর আলী। এঘটনায় পুলিশ নিহত সাজ্জাদ আলীর দুই ভাই ও অপর আরেকজনকে গ্রেফতার করে। 

গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন, লক্ষীপুর সদর থানার রাজাপুর গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর ছেলে সাহাজানকে (৩৯), জালালাবাদ থানাধীন বস্তন্তরগাঁও এলাকার মৃত ছোরাব আলীর ছেলে সিরাজ আলী (৪২) ও জাহাঙ্গীর আলী (২৭)

পুলিশ জানায়, গত ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে  দক্ষিণ সুরমায় বরইকান্দিতে টেকনিক্যাল রোডের একটি অটো রাইসমিলের সামনের নদীর তীর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় প্রবাস ফেরত সাজ্জাদ আলীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নদী থেকে লাশ উদ্ধারের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরে নিখোঁজ ভাইয়ের সন্ধানে থানা ও ওসমানী মেডিক্যালে যান জাহাঙ্গীর আলী। তিনি লাশ শনাক্তের পাশাপাশি থানায় অজ্ঞাত আসামী করে ২২ ফেব্রুয়ারি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশের তদন্তের এক পর্যায়ে স্বন্দিগ্ধ হিসেবে লক্ষীপুর সদর থানার রাজাপুর গ্রামের মৃত ছিদ্দেক আলীর ছেলে সাহাজানকে (৩৯) জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোন তথ্য পায়নি পুলিশ। পুলিশের তদন্ত অন্যদিকে মোড় নেয়া শুরু করে।

পুলিশ তদেন্ত নেমে নিহত সাজ্জাদ আলীর বসত কক্ষে গিয়ে তাহার কোন কাপড় পায়নি পুলিশ। পরবর্তীতে বাসার ছাদের উপর কাপড় শুকানোর রশির কিছু অংশ সংগ্রহ করে নিহত সাজ্জাদ আলীর হাত-পা বাঁধার রশির সাথে মিল পায় পুলিশ।  পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হত্যা মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলীকে থানায় নিয়ে যায়। এসময় তিনি পুলিশকে প্রাথমিকভাবে নিহত সাজ্জাদ আলীকে হত্যার কথা জানালে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা জালালাবাদ থানাধীন বস্তন্তরগাঁও এলাকার কবরস্থান থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

এসএমপি’র সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) সুদীপ দাস, দক্ষিণ সুরমা থানার সহকারী কমিশনার (এসি) মো. মইনুদ্দিন খান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল হাসান তালুকদার ও এ হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম