ফাইল ছবি

পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম–অধ্যুষিত এলাকা সাগরদিঘিতে বিধানসভার নির্বাচনে পরাজয়ে এবার মুসলিমদের ‘মনের কথা জানতে’ চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের চার মুসলিম মন্ত্রীই এর সদস্য।
 

মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর লোকসভা আসনের সাগরদিঘি বিধানসভার তিনবারের তৃণমূল বিধায়ক ও রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত সাহার আকস্মিক মৃত্যুতে ওই আসন শূন্য হয়। ওই আসনের উপনির্বাচনে গোহারা হারেন তৃণমূল প্রার্থী দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়। জয়ী হন কংগ্রেস ও বাম দলের প্রার্থী কংগ্রেস নেতা বায়রন বিশ্বাস। 


এই পরাজয়কে মেনে নিতে পারছে না তৃণমূল। সাগরদিঘির এই ফলাফল তৃণমূলকে ভাবিয়ে তুলেছে। কারণ, মুসলিম ভোট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেসের ভরসা বলে মনে করা হয়। আর এই সাগরদিঘি আসনের ভোটারদের মধ্যে ৬৪ শতাংশ সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের। তারা এই আসনে বরাবর তৃণমূলকে ভোট দিয়ে আসছিল। তাই তৃণমূল নেতৃত্বের প্রশ্ন, এবার এমন কী হলো যে একধাপে তৃণমূলের ভোট এত কমে গেল?

জঙ্গিপুরের তৃণমূল সংসদ সদস্য খলিলুর রহমানও মেনে নিতে পারছেন না এই পরাজয়কে। তাই তিনি অভিযোগ তুলেছেন অন্তর্ঘাতের। এই অন্তর্ঘাত দলের মধ্য থেকেও হতে পারে।

গত বিধানসভা নির্বাচনে যেখানে তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত সাহা প্রায় ৫১ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন আর এবারের উপনির্বাচনে সেই ভোটের হার নেমে এসেছে প্রায় ৩৫ শতাংশে। অথচ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গিপুর আসন থেকেও ২ লাখ ৪৫ হাজার ৭৮২ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমান। আবার ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সাগরদিঘি আসনে ৫০ হাজার ২০৬ ভোটের ব্যবধানে জেতেন তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত সাহা।
 

এ অবস্থায় সাগরদিঘি আসনের সংখ্যালঘু মুসলিমদের মনের কথা জানার জন্য তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের সংখ্যালঘু চার মুসলিম মন্ত্রীকে নিয়ে গঠন করেছে একটি কমিটি। 

কমিটির চার সদস্য হলেন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, সাবিনা ইয়াসমীন, আখতারুজ্জামান এবং গোলাম রব্বানী। এই কমিটি সংখ্যালঘু মুসলিমদের মনের ভেতরে গিয়ে জানতে চাইবেন কেন তাদের অনেকে তৃণমূলকে ভোট দেননি? কী অভিযোগ রয়েছে তাদের? তারা কি রাজ্য সরকারের গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্প বা নানা পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নন? ফলে এসব প্রশ্ন নিয়ে খোদ তৃণমূলে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে।

তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষও বলেছেন, সাগরদিঘির পরাজয় নিয়ে দলীয় পর্যায়ে বিশ্লেষণ চলছে। অন্যদিকে, স্থানীয় সংসদ সদস্য খলিলুর রহমানও বলেছেন, এসব ঘটনা আসন্ন রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে না। তৃণমূলের সঙ্গেই মুসলিমরা ছিলেন, এখনো আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।

খলিলুর রহমান আরও বলেছেন, নতুন করে এবার খোঁজা হচ্ছে অন্তর্ঘাতীদের। বিরোধীরা যেসব প্রচার চালাচ্ছে, সেদিকে নজর না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/পল্লব-৩২