বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে আছে পিঠা। শুধু খাবার হিসেবেই নয় বরং লোকজ ঐতিহ্য এবং নারীসমাজের শিল্প নৈপুণ্যের স্মারক রূপেও পিঠা বিবেচিত হয়। আর বাঙালিরা বিশ্বের মানচিত্রে যেখানেই আছেন, বয়ে নিয়ে চলেছেন ঐতিহ্যের নানা অনুষঙ্গ। ২০১৬ সাল থেকে নিউইয়র্কের ব্রংকসে পিঠা উৎসবের আয়োজন করে আসছেন কবি ও লেখক মাকসুদা আহমেদ । তিনিই প্রথম ব্রঙ্কসে পিঠা উৎসব শুরু করেন।

সেই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে গেল কয়েকবছরের মতো এবারও অনুষ্ঠিত হলো পিঠা উৎসব। বুধবার (১৫ মার্চ) স্টার্লিংয়ের গোল্ডেন প্যালেসে এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করেন মাকসুদা আহমেদ। বিকাল ৬টায় শুরু হয়ে ঘন্টা খানেকের মধ্যেই পুরো হলরুম কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। অনেককে দাঁড়িয়ে এ পিঠা উৎসব উপভোগ করতে দেখা যায়।


এরআগে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় অনুষ্ঠানস্থল। শতাধিক পদের পিঠাপুলি প্রদর্শন করা হয় উৎসবে। অনুষ্ঠান আয়োজনে সহযোগিতায় ছিলো বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশন (বাকা)।

বাকার সভাপতি আহবাব চৌধুরী খোকনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ উৎসব উদ্বোধন করেন বাংলা সিডিপ্যাপ ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের সিইও মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ।

এ সময় সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারন সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিক, কাজী সাখাওয়াত হোসেন আজম, আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুর রহিম বাদশা, মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল চৌধুরী, বাকার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য আবুল হাসিম হাসনু, সভাপতি আহবান চৌধুরী খোকন, সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার চৌধুরী, রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী সালেহ আহমেদ সাল, সাংবাদিক আকবার হায়দার কিরন, বাংলাক্লাবের সহ-সভাপতি মোমিনুল হক মোমিন, আয়োজক মাকসুদা আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন রিয়াজ কামরান, মকন মিয়া, কবি মাসুম আহমদ প্রমুখ।

এরপর প্রায় চার শতাধিক অতিথিকে পিঠাপুলি পরিবেশন করা হয়। এরপর শুরু হয় সঙ্গীতানুষ্ঠান। বাংলাদেশের প্রখ্যাত বাউল শিল্পী কালা মিয়া বেশ কয়েকটি বাউল গান পরিবেশন করেন। এসময় নেচে গেয়ে উপভোগ করেন দর্শক ও আমন্ত্রিত অতিথিরা। একইদিন কেক কেটে বাউল কালা মিয়ার জন্মদিন উদযাপন করা হয়।

রেজা আব্দুল্লাহর উপস্থাপনায় সাংস্কৃতিক পর্বে মনোমুগ্ধকর নৃত্যে উপস্থিত সবাইকে মুগ্ধ করে শিশু শিল্পী মায়া এঞ্জেলিনা। এ পর্বে আরও সঙ্গীত পরিবেশন করেন সৈয়দ ফয়েজ,  মুসাফির মুক্তা, রোজী আজাদ।

অনুষ্ঠান দেখতে আসা সকল অতিথিরা এ আয়োজনকে অত্যন্ত সফল এবং সুন্দর আয়োজন বলে অভিহিত করেন । আয়োজক মাকসুদ আহমেদ ও বাকার সকল নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আগতরা।

অনুষ্ঠানে ফাগুনের শ্রেষ্ঠ সাজগোজের জন্য ৩ জনকে বিশেষ পুরস্কার প্রদান করা হয়। উৎসবে এছাড়া যারা পিঠা নিয়ে এসেছিলেন তাদেরকেও আয়োজকের পক্ষ থেকে সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়।

আয়োজক মাকসুদা আহমেদ ও বাংলাদেশী আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশনের সহযোগিতার পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন সাবেক জাতীয় কৃতি এথলেট ও কারাতে প্রতিযোগিতায় আন্তর্জাতিক স্বর্ণপদক জয়ী এবং অপেরা নাটক দলের তুখোড় মঞ্চ অভিনেতা রায়হান জামান রান ও শাহ বদরুজ্জামান।

সার্বিক সহযোগিতায় আরও ছিলেন, মামুন রহমান, শাহ কামাল উদ্দিন, সুহেল আহমেদ, মোহাম্মদ ফয়সাল আহমেদ।


সিলেটভিউ24ডটকম/পিডি