মাননীয় মন্ত্রী,
সশ্রদ্ধ সালাম জানাই। আজ প্রথমেই আমি আমাদের বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে স্মরন করতে চাইঃ
“বন্ধু গো! বড় বিষ জ্বালা এই বুকে, দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি, তাই যাহা আসে কই মুখে”।

 


আপনার বরাররে লিখিত আমার বিগত খোলা চিঠিখানার শিরোনাম দিয়েছিলাম একজন ইংরেজ কবিকে স্মরন করে এভাবেঃ “ ‘বিউটি ইজ ট্রুথ, ট্রুথ বিউটি’, শিক্ষামন্ত্রী বরাবর খোলা চিঠি”। আজ শিরোনাম দিতে চেয়েছিলাম অপর এক বৃটিশ কবিকে স্মরন করে এভাবেঃ “ ‘দ্য বেস্ট ইজ ইয়েট্ টু বী’, শিক্ষামন্ত্রী বরাবর খোলা চিঠি”।
 
কিন্তু, তৎক্ষণাৎই আবার ভাবলাম, কবিতা দিয়ে পেট ভরবে না, আর বাচ্চাদেরও ইংরেজি শেখা হবে না, বরং আসল জায়গায় হিট্ করা ব্যতিরেকে গত্যন্তর নেই। তাই, আজকের শিরোনামটি সরাসরি মূল বিষয়ের উপরই দিলাম। 

পত্রিকান্তরে প্রকাশিত বিগত চিঠিটি লিখেছিলাম ৯ম-১০ম শ্রেণির ইংরেজি টেক্সট্বইটির মাত্র তিনটি পৃষ্ঠার উপর, আর এই তিন পৃষ্ঠার উপরই বেরিয়েছিল ডজন-ডজন ভুল, এবং ভাষাগত ও বৈয়াকরনিক দুর্বলতা (দাড়ি-ক্ষমা-প্রশ্নবোধক চিহ্ন-আশ্চর্যবোধক চিহ্ন-কোলন-সেমিকোলন-হাইফেন-একবচন-বহুবচন-ক্যাপিটাল লেটার-স্মললেটারের ব্যবহার ইত্যাদি সহ)। আর আজকের এ খোলা চিঠিটি, বলতে গেলে, সম্পূর্ণ বইটির উপর, যদিও, এ বইটির মোট ২০৩ পৃষ্ঠার উপর লিখা অনেক দীর্ঘ ব্যাপার, এবং যদিও, প্রায়-পৃষ্ঠায়ই মন্তব্য করার মত কিছু না কিছু ভুল পাওয়াই যাবে। এটা বোধ হয় আমার মত ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের উপর ডিগ্রি অর্জনকারি উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিদের দুর্ভাগ্য, অপারগতা এবং লজ্জা-শরমের মাথা-খাওয়া; আর সর্বোপরি আমাদের কচিমনা শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে পুতুল-খেলা।  

‘ক্ষুদ্র এ আমি’ ব্যক্তিটির পরিচয় দিতে গিয়ে ঐ চিঠিতে আমি এ-ও লিখেছিলাম, আমি ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যের একজন ছাত্র এবং দেশে-বিদেশে ৪৫/৪৬ বছরেরও অধিককালের শিক্ষক। একমাত্র শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রায় ২৯ বছর। বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন ও প্রায় দেড়যুগেরও বেশি সময়ের বিভাগীয় প্রধান।
বাধ্য হয়ে এ-ও লিখেছিলাম, “ভাগ্যিস্, দীর্ঘ ৭ বছরে ইংলিশের উপর আমি একটিমাত্র ডিগ্রি (পিএইচডি) অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলাম। নতুবা, আজ হয়ত আমি এই জায়গায় উঠে আসতে পারতাম না”।

দেশের, বিশেষ করে মাধ্যমিকের, বিভিন্ন শ্রেণির ইংরেজি পাঠ্যবই নিয়ে অনেক দিন থেকে আমি খুবই বিব্রত আছি। কোন কোন শ্রেনীর বই মাঝে-মধ্যে হাতে আসে, আর চোখ বুলিয়ে ঠান্ডা হয়ে যাই/অনেকটাই বোকা বনে যাই। এখন লিখতেই বাধ্য হলাম। বিগত চিঠিতেও আমি উল্লেখ করেছি, আজ আবার উল্লেখ করছি, আমার এই লেখা কোন সাধারনের জন্য নয়, কারণ, কোন সাধারণ মানুষ তো এগুলো হুবহু বুঝা দূরের কথা; আমার বিশ্বাস, অনেক উচ্চ-শিক্ষিতজনেরও, এগুলো সত্যিকারভাবে অনুধাবন করা কষ্টকর হবে। তাই, আমার এ লেখা শুধু আপনার জন্য, সম্মানিত বিষয়-এক্সপার্টদের জন্য, এবং জাতীয় পাঠক্রম বোর্ডের উর্ধতন কর্মকর্তা-সদস্যবৃন্দের জন্য। 

আপাদমস্তক একজন শিক্ষক হিসেবে আমি দেখতে ও শুনতে চাই, গোটা দেশের বাচ্চাদের ইংরেজি শেখার বিশুদ্ধতা। নচেৎ, এত দীর্ঘদিনের একজন শিক্ষক হিসেবে আমি আমাদের বাচ্চাদের কাছে, ও একদিন জাতির কাছে, নীতিগতভাবে, দায়বদ্ধ থেকে যাব।

আজ আমি ৯ম-১০ম শ্রেণীদ্বয়ের ইংরেজি পাঠ্যবইটির এখান-ওখান থেকে ভুল-দুর্বলতাগুলো আপনার সামনে তুলে আনব, যাতে গোটা বইটির ব্যাপারে একটি সুস্পষ্ট ধারণা আপনি পেয়ে যান। এটি একটি মহা পরিতাপের বিষয় যে, এ বইটির প্রথম প্রকাশনা ২০১২-তে, প্রথম রিভাইজ্ড্ ইডীশন ২০১৪-তে, দ্বিতীয় রিভাইজড ইডীশন ২০১৭-তে এবং তৃতীয় রিভাইজ্ড্ ইডীশন বেরিয়েছে নভেম্বর-২০২০-এ, এবং, একই বইয়ের অন্য একটি কপিতে দেখেছি, ওটা রিপ্রিন্ট হয়েছে অক্টোবর-২০২১-এ।

এখন ভুল-দুর্বলতাসমূহে আসা যাকঃ
১/ প্রথমেই ধরি ১৫০ নম্বর পৃষ্ঠা :
ক/ তৃতীয় লাইনের ‘নাও’ এবং ‘এফ’ এর ‘নাও’= প্রতিটির পরে একটি করে ক’মা বসবে। 
খ/ ‘জি’-এর ‘কর্পোরেশন’ এর সাথে ‘এস’ লেগে এটি বহুবচন হবে।

২/ ৫৬ নম্বর পৃষ্ঠা :
ক/ ৮ম লাইনের ‘কুয়্যেশ্চন্স’ বহুবচনের পূর্বে ‘দ্য’-এর প্রয়োজন নেই। 
খ/ একই পৃষ্ঠার অন্য আরেক বহুবচনেও ‘দ্য’ নিষ্প্রোয়োজন।
গ/ দুই জায়গায় দু’টি ‘সো’-এর পরে একটি করে ক’মা বসবে।
ঘ/ সর্বশেষ লাইনে ‘গূড’ এর পূর্বে আর্টিকেল্ ‘এ্য’ অবশ্য প্রয়োজন।

৩/ পৃষ্ঠা ১৪ : 
ক/ ‘বি’ এর দ্বিতীয় লাইনে ‘কারেজ্’ এর পরে অবশ্যই একটি ক’মা বসবে। 
খ/ এ পৃষ্ঠার বাকি ভুলগুলোর ব্যাপরে আগের চিঠিতে লিখেছি।

৪/ পৃষ্ঠা ১৮৮ :
ক/ ৬ নং লাইনে ‘উড্’ এর স্থলে ‘উইল্’ হলে উত্তম হত।
খ/ পরের লাইনেও ‘উইল্’ বা ‘উইল্ শিউরলি’ বললে সুন্দরতর হতো।
গ/ দ্বিতীয় প্যারার শেষ লাইনে ‘সো’ এর পরে ক’মা হবে।
ঘ/ এর পরের প্যারায় ‘ফুল্ফিল্’ এর পূর্বে ‘টু’ বসানো মারাত্মক ভুল হয়েছে।
ঙ/ শেষ প্যারার দ্বিতীয় লাইনে ‘এপোস্ট্রফি’ ‘মান্থ্স্’ এর ‘এস’ এর পূর্বে দেয়া ভুলের শেষ সীমাও ছাড়িয়ে গেছে। এটা সীমাহীন অজ্ঞতার জ¦াজ্জল্য প্রমান।

৫/ পৃষ্ঠা ৫৫ :
ক/ ‘রাইট নাও’ পরে ক’মা বসবে।
খ/ ‘ফিউচার প্লান’ এর ‘প্লান’ শব্দটি বহুবচন হলে সম্ভাবনার দ্বার অনেক বেশি উম্মুক্ত হত। কারণ, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কোন ব্যক্তিরই মাত্র একটি থাকে না, একাধিক পরিকল্পনা অবশ্যই থাকতে পারে, এবং থাকা উচিৎও। 
গ/ ‘ডি’-তে ‘১৮ বছর’ এর মধ্যখানে ইংরেজিতে অবশ্যই একটি ‘হাইফেন’ হবে। এটাও মারাত্মক ভুল, এবং না জানা ও দায়িত্বহীনতার পরিচায়ক।
ঘ/ ‘ওয়ান ড্যা’ পরে ক’মা হবে।
 ঙ/ সাংঘাতিক ভুল হয়েছে ‘বি’ এর দ্বিতীয় লাইনের প্রথম শব্দ ‘এ্যবাউট্’ বসানো। এটার কোনই প্রয়োজন নেই/ছিল না। লেখক যে জানেন না, এটাও তার স্পষ্ট উদাহরণ।

৬/ পৃষ্ঠা নং ০২ :
ক/ ‘প্যায়ার’ এর ভুল পূর্বের চিঠিতে লেখা হয়েছে।
খ/ ‘ব্যাবি সুন্’ এর পরে ক’মা বসবে। 
গ/ ‘চিটোগং’ এর পূর্বে ‘এ্যট্’ না হয়ে ‘ইন্’ হবে। কারণ, কোন গ্রাম বা ছোট্ট জায়গার পূর্বে ‘এ্যট্’ বসে, অথচ, উল্লেখ্য শহরটি কোন অবস্থাতেই কোন ছোট্ট শহর নয়, এটি একটি বিরাট/বিশাল ও গুরুত্বপূর্ণ শহর।
ঘ/ ‘ল্যাফ্ট্’ এর আগে ‘এইচএ্যডি’ ‘হেড’ লাগবে।

৭/ ‘কন্টেন্ট্স্’ এবং ‘ইউনিট্ ওয়ান’ পৃষ্ঠাদ্বয় :
*** ‘ফাদার অব দ্য ন্যাশন’, যে কোন দেশে, অবশ্যই চির-সুনির্দিষ্ট একজনই হয়ে থাকেন। আমাদের মাথায় কী আছে জানি না? অনাগত ভবিষ্যতে আমরা আরেক কোন নতুন ‘ফাদার...’ চাই কি না!? নতুবা হিমালয়পর্বতসম ওয়ার্ল্ড-নেতার সর্বোচ্চ ত্যাগের আলোচনার সময় ‘ফাদার’ এর পূর্বে সুনির্দিষ্ট করে ইংরেজিতে ‘দ্য’ কেন বসল না? বুদ্ধিজীবিদের মাথায় কেন এটা ধরে নি? অথচ, সরকার যখন বিশ^বিদ্যালয়সমুহে ভিসি দেয়, তখন ঐ ভিসিকে তাড়ানোর জন্য আমরা সব বুদ্ধিজীবি এক হয়ে যাই! আর, বিশ^বিদ্যালয়গুলোকে অস্থিতিশীল করে তুলি, সরকারকে বেকায়দায় ফেলি ও শিক্ষার্থীদের জীবন নিয়ে পুতুল-খেলা খেলি? এবার তো ৬ষ্ঠ-৭ম শ্রেণির শিশুদেরকে নিয়ে দস্তুরমত পুতুল-নাচ আরম্ভ করে দিয়েছি!? অজ্ঞতা আর কাকে বলে? এ অজ্ঞতার কাজ যারা করেছেন, তাদেরকে বিচারের কাটগড়ায় দাঁড় করানো উচিৎ।

৮/পৃষ্ঠা ১০৭:
ক/ ‘বি’ এর দিত্বীয় লাইনের ‘জব্স্’ এর পরে একটি ক’মা বসবে।
খ/ ‘হী’ এবং ‘দ্যান্’ এর পরে একটি করে ক’মা দিতে হবে।
গ/ কোম্পানির নামের ‘সি’, ‘পি’, ‘ডি’ এবং ‘সি’=সবগুলো ক্যাপিটাল লেটার হবে।
ঘ/ পরের লাইনের ‘যেড্’ হবে ‘এস্’। আমরা পড়াই বৃটিশ ইংলিশ, আমেরিকান ইংলিশ নয়। আর, বৃটিশ এবং আমেরিকান ইংলিশের জগা-খিচুড়ি করে ইচ্ছামত চলা যাবে না। এটা ইংরেজি ভাষা-বিজ্ঞানের দাবি। কম্পিউটারের মাথায় ‘এস্’ না থাকুক, একজন সুস্থ, সচেতন ও কর্তব্যনিষ্ট মানুষের মাথায় তো আছে!

৯/ পৃষ্ঠা ৫৪ :
*** ভবিষ্যৎ নিয়ে মানুষের মাথায় কত রকমের স্বপ্ন থাকে, তাই ‘ড্রিম’ এর সাথে ‘্এস’ লাগবে, এবং এটি বহুবচন হবে। কোন একটিমাত্র স্বপ্ন দিয়ে/নিয়ে জীবন চলতে পারে না।

১০/ ১৯৬ নং পৃষ্ঠা :
ক/ দ্বিতীয় লাইনে  ‘সেন্স্’- এর পরে একটি ক’মা বসানো ভাষা-বিজ্ঞানের দাবি, যুক্তিসঙ্গত দাবি উপেক্ষা করে ইচ্ছামত চলার কোন সুযোগ নেই। আর, বাচ্চাদেরকে ভুল শেখানো, নীতিগতভাবে, মরাত্মক অপরাধ।
খ/ ‘বীঙ্স্’ এবং ‘রূট্স্’, শব্দদ্বয়ের পরে একটি করে ক’মা হবে।
গ/ ‘থ্রী’ এবং ‘মান্থ’, ও ‘সিক্স’ এবং ‘মান্থ’, এগুলোর মধ্যখানে ২টি ‘হাইফেন’ না দেয়া চরম অজ্ঞতার পরিচায়ক, এবং না জানার অপরাধ।  
ঘ/ ‘এ্যলাউ’-এর সাথে ‘এস্’ লাগবে, নয়ত শিশু-তুল্য ভুল/ছেলেমিপণা হয়েছে। এটা ক্ষমার অযোগ্য। থার্ড-পারসন-সিঙ্গিউলার নাম্বর-প্রেজেন্ট টেন্স হলে কী হয়, তা ৪র্থ শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীও জানে। হায়/সাবাস, আমাদের কর্তব্যনিষ্ট কর্মকর্তাদের/জ্ঞানীদের!

১১/ পৃষ্ঠা নং ১৫ :
ক/ ‘লাহোর’ এর পর একটি ক’মা বা নীয়।
খ/ দিত্বীয় প্যারায় ‘টুড্যে’-র পরে ক’মা বসানোর প্রয়োজন ছিল।
গ/ শেষ প্যারায় ‘লীডার্স এবং ‘হিম্’- এ পরপর দু’টো ক’মা দেয়া হয় নি; কিন্তু, দেয়ার প্রয়োজন ছিল। একটা উচ্চশিক্ষিত মানুষ কেমন করে এমন অজ্ঞ হন?
ঘ/ মহা মজার ব্যাপার হল এর পরের লাইনে। ‘লীডার’ শব্দটি পাশাপাশি বসেছে দু’বার, প্রথমটির ‘এল্’ স্মল এবং দ্বিতীয়টির ‘এল’ ক্যাপিটাল; হায়, লজ্জা! এর নামই কি স্বাধীনতা? এটা কি ‘লীডার’কে মজবুত করার জন্য? বইটি কিন্তু ১৭ জন মানুষের সহযোগিতায় বার বার লিখিত, সম্পাদিত, পঠিত, রিভাইজ্ড্, প্রিন্টেড্ ও তারপর প্রকাশিত!

১২/ পৃষ্ঠা ১০৬ :
ক/  প্রারম্ভেই, ‘নাও’-এর পরে ক’মা লাগবে।
খ/ ‘ডি’ এর ‘এ্যান্সার’-এর সাথে ‘এস্’ লেগে এটা হবে বহুবচন=‘এ্যান্সার্স’।
খ/ ‘বূক্’-হবে ‘বূক্স’, কারণ ক্লাশে ছাত্র-ছাত্রী একজনমাত্র অবশ্যই নয়। 

১৩/ পৃষ্ঠা ৫৬ :
ক/ বহুবচন ‘কুয়্যেশ্চন্স’ এর আগে ‘দ্য’ এর ব্যবহার ভুল।
খ/ একইভাবে ‘ভাষাসমূহ’, - এ বহুবচনের আগেও ‘দ্য’ বসানো ভুল হয়েছে।
গ/ ‘সো’ এর পর ক’মা হবে।
ঘ/ শেষ প্যারায়ও ‘সো’ এর পরে ক’মা বসবে।
ঙ/ শেষ লাইনে ‘গুড নিউজ’ এর পূর্বে আর্টিক্যাল ‘এ্য’ বসবে।

১৪/ পৃষ্ঠা ৫৭ :
ক/ তৃতীয় প্যারায় ‘রেডিও’-র পূর্বে ‘দ্য’ দিলে এ জাতীয় অন্যগুলোর পূর্বেও ‘দ্য’ লাগবে, নচেৎ কোনটার আগেই ‘দ্য’ দেয়া যাবে না।
প্রসঙ্গক্রমে বলছি, এবং আপনারও জানা আছে, বিজ্ঞ মন্ত্রীমহোদয়ঃ বাংলা ‘ভুল’ শব্দের ইংরেজি সিনোনীমস্ হচ্ছে মূলত দু’টি: ‘মসিটকে’ এবং ‘এ্যারার’। ‘মস্টিকে’ হচ্ছে সেটি, যেটি ব্যক্তি জানেন, কিন্তু কোনভাবে স্লিপ হয়ে গেছে। এটা ক্ষর্মাহ। আর, ‘এ্যারার’ হচ্ছে ঐটি. যেটি ব্যক্তি আদৌ জাননেই না। সত্যকিাররে শক্ষিতিদরে জন্য এটা ক্ষমার অযোগ্য। আর, একটা বোর্ডের জন্য তো বটেই।

এখানে আমার বলার বিষয় এই যে, বইটির সাথে জড়িত ১৬/১৭ জন ব্যক্তি পর্দার আড়ালে ‘এসি’ রুমে বসে বসে গরীব মানুষের ট্যাক্সের টাকায় লম্বা লম্বা বেতন খেয়ে কচিমনা বাচ্চাদের বইটি নিয়ে বছরের পর বছর ধরে যে কর্তব্যনিষ্টাহীনতার পরিচয় দিয়েছেন, তার ১৬-আনা জবাব/হিসাব কড়ায়-গন্ডায় তাদের কাছ থেকে আদায় করতে হবে।
 
১৫/ ১৭৯ নং পৃষ্ঠা :
ক/ ‘সাপোজ’ এর পরে একটি ক’মা অবশ্যই লাগবে।
খ/ ক্যাপিটাল ‘বি’ এর ‘নাও’ এর পরেও ক’মা দিতে হবে।

১৬/ পৃষ্ঠা নং ৮৮:
ক/ ‘বি’ এর ১ নম্বরের ‘এ্যরিয়া’-র সাথে ‘এস’ যুক্ত হয়ে এটা বহুবচন হবে।

১৭/ পৃষ্ঠা ১৮৯:
ক/ ‘বি’ এর প্রথম লাইনে ‘গ্রান্ডলি ড্রেসস’, শব্দযুগল, আগে-পিছে ক’মা সহ বসবে ‘ব্যাসানিও’-র পরেই। তা হলে, বাক্যটির অথর্, ছেলে-মেয়েদের কাছে পুরো ক্লিয়ার হবে।
খ/ ‘ডেথ্’ এর পরে ক’মা বসবে।

১৮/ পৃষ্ঠা ১৮৬:
ক/ দ্বিতীয় লাইনে ‘শী বট্’ হবে ‘শী হ্যাড বট্’। এটা ‘ট্যান্স’ শিখানোর দাবি।
খ/ দ্বিতীয় প্যারায় ‘দেন্’ এর পর ক’মা লাগবে।
গ/ ‘র্পৌ ইট্ আউট্’ হবে ‘পূল্ ইট্ আউট্’। এটাও অক্ষমার্হ ভুল।
ঘ/ ‘এ্যভ্রি ড্যে’, এবং, ‘দাস্/দাজ্’=শব্দগুলোর পরে পরে একটি করে ক’মা বসবে।
ঙ/ ‘বি’, দুই-তে ‘টেক্’ এর স্থলে ‘বিইউওয়াই=বাই’ বসালে সুন্দরতর হত। এত আল্ট্রামডার্ন হওয়ার প্রয়োজন ছিল না, বরং, এটা বাচ্চাদের শেখার ও বুঝার ব্যাপার/সময়।
চ/ ‘ওয়াজ্’/‘ও...জ্’, এবং, ‘ইন ফ্যাক্ট্’ - এর পর পর দু’টো ক’মা বসবে।
ছ/ ‘গ্লাস জার’=মধ্যখানে ‘হাইফেন’ প্রয়োজন। ‘হাইফেন’ দিয়ে ভিন্ন শব্দ দু’টোকে এক করতে হবে। হায়! আমাদের বাচ্চাদের কপাল মন্দ, নাকি, বই-প্রণেতাদের অজ্ঞতা?
জ/ সিরিয়্যেল ৪-এ ‘র্হা’ এর জায়গায় ‘এ্যপোস্ট্রফি এস্’ সহকারে মেয়েটির নাম বসানো বাধ্যতামূলক ছিল।

১৯/ ৬৮ নং পৃষ্ঠা:
ক/ একজন বাংলাদেশি বাচ্চা-মানুষকে ‘মাছ’ না বানিয়ে একজন ‘ওয়ার্ল্ড-সিটিজেন’ বানালে কি কোন পাপ হতো? ১৭ জন উচ্চ-শিক্ষিত পুস্তক-প্রণেতাদের চিন্তার দরিদ্রতা যে কোন নাগরিককে/অভিভাবককে  মর্মাহত করবে (আমার আদরের সন্তানকে ‘মাছ’ বানানো হয়েছে), যদি সবাই বইটি বুঝতেন।
খ/ কোন ব্যক্তির সাথে ‘এ্যাগ্রী উইথ্’ হয়, কোন বিষয়ের সাথে ‘এ্যাগ্রী টু’ হবে, এখানে ‘উইথ্’ দেয়া আর একটি মারাত্মক ভুল হয়েছে।      
গ/ ‘টূ ডিগ্রি’=মধ্যখানে ‘হাইফেন’ বসবে। এটা অল্প-ইংরেজি-শিক্ষিত একজন ব্যক্তিও জানেন।

২০/ পৃষ্ঠা ১৫৮ :
ক/ ‘সি’ এর ‘সি’-তে  ‘হার্ডশিপ’ শব্দটির সাথে ‘এস’ লেগে শব্দটি বহুবচন হবে। এটা ইংরেজি ভাষা ও ঐ কালের/সময়ের দাবি।
খ/ ‘ঈ’-তে কোজেটিভ্ ‘হেল্প’ এর পর ‘টু’ বসানো অক্ষমার্হ ভুল।

২০/ পৃষ্ঠা ১৫৯:
ক/ ‘ল্যাটার’ পরে ক’মা হবে।
খ/ ‘ডো..টার’ (কন্যাশিশু) এর আগে আর্টিক্যাল ‘এ্য’ বসবে।
গ/ পৃষ্ঠার নিচের ‘এ্য’-তে   ‘প্রোব্লেম প্যা...জ’= মাঝখানে ‘হাইফেন’ বসবে এবং ‘এস্’ লেগে ‘প্যাজ’ শব্দটি বহুবচন হবে।

শ্রদ্ধেয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়,       
আমি আপনার ও আপনাদের সকলের দোয়াপ্রার্থী। আমিও রক্ত-মাংসের একজন মানুষ, যতই শিক্ষক হই না কেন, লিমিট্যাশন্স আমারও আছে। তবে, টেক্সটবুক বোর্ড তো একজনমাত্র কোন ব্যক্তি নয়। একটিমাত্র পাঠ্যবইয়ের এই যদি হয় অবস্থা, আমার আর বলার কিছুই থাকতে পারে না। সত্যিই আমি দুঃখিত ও লজ্জিত। না জানি, বইটির মোট ২০৩ পৃষ্ঠার উপর লিখতে গেলে, কতটি কলাম্স্ লিখতে হবে। 

আমরা এ-ও জানিঃ দোষা-দোষির খেলা সব চাইতে বাজে খেলা; তাই, এখানে কোন দোষা-দোষি নয়, এটা স্রেফ আমাদের কচি-মনা বাচ্চাদের সুন্দর ও সফল ভবিষ্যতের জন্য। সবাই বলেন : শিক্ষকগণ তো মানুষ গড়ার কারিগর! হায় আফসোস, এই ‘আমরা’ কারিগরদের জন্য! আর, এই আমরা কারিগরগণ, সত্যি কথা বলতে গেলে, আমাদের বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে পুতুল-খেলা খেলছি। যে কোন মূল্যে/উপায়ে এগুলো অবশ্যই দ্রুত বন্ধ করতে হবে।


লেখকঃ মোঃ আতী উল্লাহ (বিসিএস, পিএইচডি), ইংরেজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন ও দীর্ঘদিনের বিভাগীয় প্রধান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়, সিলেট এবং দেশে-বিদেশে সাড়ে চার দশকেরও অধিক সময়ের ইংরেজি সাহিত্য এবং ইংরেজি ভাষার শিক্ষক।