মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলনে মৌলভীবাজারের জুড়ীতে চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। তবে প্রচন্ড ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তা ও ব্যক্তি কেন্দ্রিক উপজেলার হাকালুকি হাওরে প্রায় ৯৪ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়। মিষ্টি কুমড়া চাষে খরচ কম এবং ভালো লাভ হয়। মিষ্টি কুমড়ার বীজ রোপন করে দিলেই হয়। তেমন একটা শ্রম দিতে হয় না।
জানা যায়, মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের একটি গ্রাম বেলাগাঁও। এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকি বর্ষায় জলে ভরপুর হয়ে গেলে মিনি সাগরের মতই দেখায়। তখন এই হাওর পারের অন্যান্য গ্রামের মত বেলাগাঁও গ্রামটিকে সৈকতই মনে হয়। গ্রামের অধিকাংশ মানুষের জীবন-জীবিকা এ হাওর কেন্দ্রিক। কেহ ধান চাষী, মৎস্যজীবি কিংবা নৌকার মাঝি। আবার কেহ সবজি চাষী বা দিনমজুর। ধান, মাছ ছাড়াও হাওরে উৎপাদিত সবজির মধ্যে অন্যতম প্রধান অর্থকরি ফসল মিষ্টি কুমড়া। গ্রামের অসংখ্য মানুষ নিজের জমিতে, কেহ বা ভাড়া করা জমিতে কিংবা বর্গা হিসেবে জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেন। কৃষক পরিবারের নারী, বৃদ্ধ সবাই ফসল ফলানোর কাজে শ্রম দিয়ে থাকেন। একই ভাবে শিশুরাও পরিবারের কৃষি কাজে শ্রমের মাধ্যমে সহযোগিতা দিয়ে থাকেন।
বেলাগাঁও গ্রামের চাষী আলমগীর হোসেন, আতিকুর রহমান জানান, মিষ্টি কুমড়া চাষে বিঘাপ্রতি ৪/৫ হাজার টাকা খরচ হয়। এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। জমি থেকেই পাইকাররা মিষ্টি কুমড়া কিনে নিয়ে আসেন আবার অনেক সময় বিভিন্ন বাজারে নিয়েও বিক্রি করা হয়। এ পর্যন্ত ৪০/৫০ হাজার টাকার মত বিক্রি হয়েছে। বেলাগাঁও গ্রামের কৃষক মালু মিয়া ও কামাল মিয়া এ পর্যন্ত প্রায় তিন লক্ষ টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করেছেন। এ ছাড়াও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তের পেশাদার ও সৌখিন চাষীরা মিষ্টি কুমড়া চাষ করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন। এখনও জমিতে প্রচুর কুমড়া রয়েছে। কিন্তু প্রচন্ড ঝড় ও শিলা বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।
জানতে চাইলে জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, উপজেলায় মিষ্টি কুমড়া চাষীদের মাঝে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে প্রযুক্তিগত পরামর্শ ও সহায়তা দেওয়া হয়। উপজেলায় এবার ৯৪ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে। মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলনে চাষীরা অনেক খুশী।
তিনি বলেন, মিষ্টি কুমড়ার পাশাপাশি হাকালুকি হাওরে প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে বাদাম ও ২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সব ধরনের ফসল ভালো হয়েছে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/মঞ্জুরে/এসডি-০১