সঞ্চালন লাইনের উন্নয়নকাজের জন্য প্রায় প্রতি সপ্তাহেই সিলেট মহানগরের বেশকিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে। তবে এবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেটের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর অন্তর্ভুক্ত এলাকার জন্য সুখবর নিয়ে এলো।
এখন থেকে মেরামত ও সংস্কার কাজের জন্য সাট-ডাউনের প্রয়োজনীয়তা কমে যাবে। যার ফলে মহানগরীর ৭০ হাজারেরও বেশি গ্রাহক নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পাবেন। কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্রের সাথে আম্বরখানা পর্যন্ত ‘সোর্স লাইন’ সংযোজন হওয়ায় গ্রাহকদের এ সুবিধা নিশ্চিত হয়েছে।
বিউবো সূত্রে জানা যায়, সিলেট-এর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ আওতায় ৩৩/১১ আম্বরখানা উপকেন্দ্র বিদ্যুতের চাহিদা থাকে প্রায় ২৫ মেগাওয়াট। বর্তমানে কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে যথাযথ সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। আগে কোন কারণে কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্রের লাইনে ফল্ট দেখা দিলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হতো। তবে এখন দ্বিতীয় সোর্স লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা যাবে। দ্বিতীয় সোর্স লাইন সংযোজন হওয়ায় গ্রাহকদের ভোগান্তি আরো কমে যাবে। প্রয়োজন হলে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ ৫০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বাড়ানো যাবে।
বিউবো বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুল করিম সিলেটভিউকে জানান, আগে আম্বরখানা উপকেন্দ্রে একটি লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হত। যার ফলে কোন সমস্যা হলে বিতরণ বিভাগ-১ এ দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকত। সে সমস্যা সমাধানের জন্য গত দুই বছর ধরে আমরা কাজ করছিলাম। অবশেষে গত ৩১ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে সোর্স লাইনটি চালু হয়। সোর্স লাইন চালু হওয়ায় এই এলাকায় বিদ্যুতের সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে। কোন কারণে কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে আম্বরখানা ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র লাইনে ফল্ট দেখা দিলে, দ্বিতীয় সোর্স লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা যাবে। সোর্স লাইনটি চালু হওয়ায় আম্বরখানা ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রের লোড সঞ্চালন ক্ষমতা এখন দ্বিগুণ হয়েছে।
ফজলুল করিম আরো জানান, সিলেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা উন্নয়ন ও সঞ্চালনে ‘সোর্স লাইন’ সংযোজন মাইলফলক হয়ে থাকবে। ৭ কিলোমিটার এই সোর্স লাইনের ২ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড এবং ৫ কিলোমিটার ওভার হেড লাইন। সিলেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়নে আরো কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
সিলেটে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্টের অর্থায়নে ২০১৯ সালে শুরু হওয়া কাজের অংশ কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্রের সাথে আম্বরখানা পর্যন্ত ‘সোর্স লাইন’ সংযোজন। প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নগরীতে ৭ কি.মি ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন নির্মাণ করা হয় তখন। প্রথম ধাপে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার এলাকায় দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন উদ্বোধন হয়। এ প্রকল্পের আওতায় আম্বরখানা উপকেন্দ্র থেকে চৌহাট্টা হয়ে শেখঘাট সার্কিট হাউজ পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে ভূ-গর্ভস্থ লাইনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা হয়েছে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/নাজাত/পল্লব-১১