‘স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি (এসএমএ) নামক বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু আয়াত হক আর নেই। শুক্রবার (২১ এপ্রিল) সোয়া ১১টার দিকে মৃত্যুর কুলে ঢলে পড়ে আয়াত হক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আয়াতের বাবা জুনেদ হক।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ ৯ মাস বয়সি নিষ্পাস আয়াতের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। অক্সিজেন সাপোর্ট দেয়া হয় তাৎক্ষণিক।
আয়াতের নামাজে জানাযা শনিবার (২২ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় হযরত শাহপরান রহঃ মাজার মসজিদ এর ঈদগাহ প্রাঙ্গনে ঈদের জামাতের পর অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, সিলেট শহরতলীর মেজরটিলা ইসলামপুরের বাসিন্দা জুনেদ হক ও ফারজানা আক্তার দম্পতির ২য় কন্যা আয়াত হক।আয়াতের জন্ম ২০২২ সালের ২০ জুন।
জুনেদ ও ফারজানা বলেন, জন্মের ২-৩ মাস পর আয়াতের হাত-পা ও ঘাড় স্বাভাবিক নড়চড়া না করলে তাদের মনের ভেতর একটা ভয় কাজ করল। তারা সিলেটে একাধিক শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে ঢাকার একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যান তারা। ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার ‘মেডেস্ক’ নামক বেসরকারি হাসপাতালের ডা. মিজানুর রহমানের কাছে আয়াতকে নিয়ে যান। আয়াতকে প্রাথমিকভাবে চেকআপ করে ডা. মিজান জানান- শিশুটি ‘স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাটরোফি’ বা ‘এসএমএ’ রোগে আক্রান্ত।
এসময় তিনি কয়েকটি পরীক্ষা করাতে বলেন। এর মধ্যে একটি ‘এসএমএ’ রোগ শনাক্তের পরীক্ষা। এ পরীক্ষার জন্য আয়াতের শরীরের রক্ত প্রসেস করে ভারতে পাঠানো হয়। কারণ- এ পরীক্ষা দেশে হয় না। এক মাস পর পরীক্ষার রিপোর্ট আসে ঢাকায়। রিপোর্ট দেখে জুনেদ ও ফারজানাকে নিশ্চিত করে বলা হয়- আয়াত ‘এসএমএ’ রোগেই আক্রান্ত। জানানো হয়- বাংলাদেশে এর কোনো চিকিৎসা বা ওষুধ নেই।
পরে ‘এসএমএ’ রোগ বিশেষজ্ঞ, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক নিউরোলজির চিকিৎসক ডা. জোবায়দা পারভিনের কাছে তারা আয়াতকে নিয়ে যান। পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের এই কনসালটেন্ট জুনেদ ও ফারজানাকে পরামর্শ দেন- বিদেশি ওষুধ কোম্পানি ‘নোভার্টিস’ বরাবরে একটি আবেদন করার জন্য। কোম্পানিটি প্রতি বছর লটারির মাধ্যমে বিশ্বের ‘এসএমএ’ আক্রান্ত দুই শিশুকে ২২ কোটি টাকা দামের ‘জোলগেনসমা’ নামের ইনজেকশনটি বিনামূল্যে দিয়ে থাকে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/পিডি