মানহানি মামলায় সাজা প্রাপ্তি। সেই সাজার জেরে সাংসদ সদস্য পদ খোয়ানো থেকে শুরু করে সরকারি বাসভবনও খুইয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সব মিলিয়ে এই কংগ্রেস নেতার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের পক্ষে সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না। তবে মন খারাপ করতে নারাজ রাহুল।


বরং বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি জানান, আমার বাড়ি কেড়ে নিয়ে ভালোই করেছে বিজেপি। একটি বাড়ির জায়গায় এখন তার জন্য হাজার হাজার মানুষ নিজের বাড়ির দরজা খুলে দিয়েছেন। সরকারি বাসভবন ছাড়ার পরই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার চিঠি পেয়েছেন। সকলেই রাহুলকে তাদের বাড়িতে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এই ভালোবাসা পেয়ে খুশি রাহুল।


মোদি পদবি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে গত মাসে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করে গুজরাট রাজ্যের সুরাট জেলার বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদি। সেই মানহানি মামলাতেই গত ২৩ মার্চের রায়ে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় সুরাটের নিম্ন আদালত। সুরাট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের সেই সিদ্ধান্তের জেরে একদিন পরেই সংসদের সদস্য পদ খোয়াতে হয় সাবেক কংগ্রেস সভাপতিকে।

সাংসদ পদ খোয়ানোর পরই সরকারি বাসভবনে থাকার অধিকার হারান রাহুল গান্ধী। লোকসভা হাউসিং প্যানেলের পক্ষে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে রাহুল গান্ধীকে সরকারি ভবন ফাঁকা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। গত ২৭ মার্চ তাকে এই নোটিশ পাঠানো হয়। এরপর শনিবারই (২২ এপ্রিল) দিল্লির ১২ নম্বর তুঘলক লেনে অবস্থিত সরকারি ভবন ছেড়ে দেন রাহুল গান্ধী। আপাতত তার ঠিকানা মধ্যদিল্লির ১০ জনপথ রোডের বাংলো। যেখানে তার মা তথা কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধী থাকেন।

সরকারি বাসভবন হাতছাড়া হওয়ার পর কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী রোববার (২৩ এপ্রিল) বলেছেন, সাধারণ মানুষের মনেই আমার বাড়ি। তাই আলাদাভাবে আর কোনো বাড়ির প্রয়োজন নেই আমার। একইসঙ্গে বিজেপি ও আরএসএসের চিন্তাধারাকে আক্রমণ করে বলেছেন, ওরা হিংসা ও ঘৃণা ছড়াতেই বিশ্বাসী। আমাদের দল বিনা ভয়ে লড়াই করবে এবং বিজেপির যাতে হার হয়, তা নিশ্চিত করবে।

রাহুল বলেন, বিজেপি আমার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে, আমাকে সংসদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে, আমার বাড়িও কেড়ে নিয়েছে। তবে হাজার হাজার মানুষ আমায় চিঠি লিখেছেন। তারা বলেছেন, রাহুলজি, আমাদের বাড়িতে এসে থাকুন। মানুষের মনে আমার বাড়ি। আমার কোনো বাড়ির দরকার নেই। বিজেপি বাড়ি কেড়ে নিয়ে ভালোই করেছে।

তবে রাহুলের নজর এখন কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের দিকে। সেখানেই আছেন তিনি। দ্বিতীয় দফার প্রচারে গিয়ে ঘরছাড়ার বিষয়টিকে হাতিয়ার করেছেন তিনি। এদিকে বিজেপিকে ঠেকাতে পশ্চিমবঙ্গের পর কর্ণাটকেও কংগ্রেসকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছে সিপিআই। কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচন হতে আর দুই সপ্তাহ বাকি। এখন দেখার রাহুল সদস্যপদ বাতিল হওয়ায় এবং ঘরছাড়ার বিষয়ে কংগ্রেস কতটা ফায়দা তুলতে পারে কর্নাটকের ভূমি থেকে। 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/পল্লব-১৪