সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুর চা বাগান সংলগ্ন খড়মপুর এলাকায় প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হওয়া একটি নয়নাভিরাম ঝর্ণা পাথরখেকোদের থাবায় বিলীন হয়ে গেছে। এখনও ওই জায়গা থেকে অবৈধভাবে নিয়মিত পাথর আহরণ করছে ওই চক্র। ফলে ধ্বংস হচ্ছে প্রকৃতি ও পরিবেশ।
 

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের পূর্ব পাশে শ্রীপুর চা বাগানের শেষাংশে স্থানীয় আরিফুল হক নামের একজনের মালিকানাধীন ভূমিতে কয়েক বছর আগে প্রকৃতিকভাবে একটি ঝর্ণা তৈরি হয়। এটির নামকরণ করা হয় ‘আধুরী ঝর্ণা’। দীর্ঘদিন স্থানীয় আধিবাসী (চা-শ্রমিক) পরিবারের লোকজন গোসলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজের পানি ওই ঝর্ণা থেকে সংগ্রহ করতেন।
 


গত কয়েক বছরে ঝর্ণাটি পর্যটকসহ স্থানীয় জনসাধারণের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠে ঝর্ণাটি। এ নিয়ে বিভিন্ন  সংবাদমাধ্যমে খবরও প্রকাশিত হয়।
 

এক পর্যায়ে আধুরী ঝর্ণাতে জমা পাথরের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি চক্রের। এরপর তারা সেই ঝর্ণার পাথর উত্তোলন শুরু করেন।
 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই জায়গার মালিক ঢাকার বাসিন্ধা আরিফুল হক ও শাহ আলমের মদদে জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক রাজারের নেতৃত্বে তার কয়েকজন সহযোগী অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে করে আধুরী ঝর্ণাটি বিলীন করে দিয়েছেন। এদর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলেন আব্দুল জব্বার, সাব উদ্দিন ও কয়েছ আহমদ।
 

এই পাথর উত্তোলনের ফলে ঝর্ণার নিচ অংশে থাকা ফসসি জমি, আশপাশের পরিবেশ ও বসতবাড়িগুলো ধ্বংসের মুখে পড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বলেন, এই চক্রই শ্রীপুর কোয়ারির জিরো লাইন এবং খড়মপুর আধুরী ঝর্ণা এলাকায় চালাচ্ছে পাথর লুন্টনের মহাযজ্ঞ। তাদের ভয়ে এ ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করতে পারেন না।
 

অভিযোগ রয়েছে- স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি অনেকটা দেখেও না দেখার ভান করে।  যার ফলে শ্রীপুর ও খড়মপুর এলাকায় পাথর লুন্টন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
 

স্থানীয়রা শ্রীপুর পাথর কোয়ারি উন্মুক্ত আধুরী ঝর্ণা এলাকাটি স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের জোর দাবি জানান।
 

এ বিষয়ে আব্দুর রাজ্জাক রাজা মুঠোফোনে সিলেটভিউ-কে বলেন, আমার নেতৃত্বে পাথর উত্তোলন হয় এ কথা সঠিক নয়। তবে এটা ঠিক যে- ওই জায়গার মালিকের কাছে সুপারিশ করে আমি স্থানীয় গরিব কয়েকজন লোককে আধুরী ঝর্ণা এলাকা থেকে পাথর সংগ্রহের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। তারা জীবন-জীবিকার তাগিদে এটি করছেন। তবে এ পাথর আধুরী ঝর্ণা এলাকার নয়। মূলতঃ এসব পাথর ভারত অংশের।
 

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল বশিরুল ইসলাম সিলেটভিউ-কে বলেন, অবৈধভাবে পাথর-বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে বিজিবি-পুলিশ সমন্বয়ে টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালনা করা হবে।


 


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম /এসডি-১৯৫