সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বড় ব্যবধানে জয়লাভ করে ১০ বছরের ডুবন্ত নৌকাকে উদ্ধার করলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৯১ ভোট পেয়ে তিনি সিলেটের নতুন মেয়র নির্বাচিত হন। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের নজরুল ইসলাম বাবুল পেয়েছেন ৫০ হাজার ৮৬২ ভোট।

মেয়র ছাড়াও এ নির্বাচনে ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২২টিতে আওয়ামী লীগের নেতারা কাউন্সিল নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়া বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা-কর্মী ও জামায়াতপন্থীরাও জয় পেয়েছেন। গতকাল বুধবার রাতে কেন্দ্র থেকে পাওয়া ফলাফল বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানা গেছে।


সিলেট সিটিতে গতবার ২৭টি ওয়ার্ড ছিল। এবার আরও ১৫টি নতুনভাবে যুক্ত হয়ে ওয়ার্ড বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২। 

ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কাউন্সিলর পদে নির্বাচিতদের মধ্যে গত নির্বাচনে বিজয়ী ২০ জন আছেন। ৪২টি ওয়ার্ডের নির্বাচিতদের মধ্যে আওয়ামী লীগপন্থী আছেন ২২ জন। 

২ নম্বর ওয়ার্ডে টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হয়েছেন বিক্রম কর সম্রাট। তিনি জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য।
৩ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ।
৪ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন সাবেক যুবলীগের কর্মী শেখ তোফায়েল আহমেদ।
৮ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জগদীশ চন্দ্র দাশ।
৯ নম্বর ওয়ার্ডে টানা পঞ্চমবারের মতো বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. মখলিছুর রহমান। 
১০ নম্বর ওয়ার্ডে টানা দ্বিতীয়বারের মতো জয় পেয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তারেক উদ্দিন।
১১ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর আবদুর রকিব। তিনি কৃষক লীগের সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক।
১২ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর মো. সিকন্দর আলী। তিনি আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত।
১৩ নম্বর ওয়ার্ডে টানা ষষ্ঠবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য শান্তনু দত্ত।
১৫ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর মো. ছয়ফুল আমিন। তিনি আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত। 
১৭ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর রাশেদ আহমদ। তিনি আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত।
১৯ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর এস এম শওকত আমীন। তিনি আওয়ামীপন্থী হিসেবে পরিচিত।
২০ নম্বর ওয়ার্ডে টানা পঞ্চমবারের মতো জয় পেয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ। তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
২২ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফজলে রাব্বি চৌধুরী।
২৩ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ। তিনি আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত। 
২৫ নম্বরে জয় পেয়েছেন তাকবির ইসলাম। তিনি আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত।
২৬ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ তৌফিক বকস। 
২৮ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন রায়হান হোসেন। তিনি আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত।
৩২ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচিত হয়েছেন সিলেট সরকারি কলেজের ছাত্রলীগ নেতা রুহেল আহমদন। 
৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।
৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে জয় পেয়েছেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিরন মাহমুদ।
৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে জিতেছেন হেলাল হাজি। তিনি আওয়ামী লীগপন্থী হিসেবে পরিচিত।

এরআগে বুধবার (২১ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। 

সাড়ে ৪টা থেকে আসতে শুরু করে ফলাফল। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বেসরকারিভাবে পাওয়া ফলাফলে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সবকি'টি অর্থাৎ- ১৯০টি কেন্দ্রে পেয়েছেন ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৯১ ভোট। আর তাঁর নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল পেয়েছেন ৫০ হাজার ৮৬২ ভোট। ৬৯ হাজার ১২৯ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন আনোয়ারুজ্জামান।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ মাহি