জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরীর প্রাথমিক সদস্য পদসহ দলীয় সকল পদ স্থগিত করা হয়েছে ইতিমধ্যেই।
এরই মধ্যে আজ শনিবার রাত ১০টায় তাঁর ফেসবুক আইডিতে লেখা এক স্ট্যাটাসে তিনি জানান, অশ্রুশিক্ত নয়নে প্রাণাধিক প্রিয় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ থেকে পদত্যাগ করলাম।
অথচ তাঁর দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলীয় তাঁর সকল পদ স্থগিত করে।
বিএনপির টিকেট নিয়ে এমপি হওয়া জমিয়তের সদ্য সাবেক এই কেন্দ্রীয় নেতা তাঁর ফেসবুক আইডিতে আজ আরো লিখেন, দেশ ও বিদেশের লাখো শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশ্যে আমার অন্তর জুড়ানো বক্তব্য হলো-আমাকে দল থেকে ঠেলে দেয়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলাম। কারণ আমাকে যে দোষে দোষী সাব্যস্ত করা হলো এই দোষে স্থায়ী কমিটির কমপক্ষে চারজন সদস্য সম্পৃক্ত। অথচ আমার সদস্য পদ স্থগিত করার আগে আমাকে টেলিফোনে হলেও কথা বলতে পারতেন। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ ও দেয়া হলো না।
আফসোসের বিষয় হলো জমিয়ত করতে গিয়ে জীবন যৌবন হারালাম-পরিবারকেও সময় দিতে পারলাম না। আমার শখের সিলেটের অভিজাত এলাকা উপশহরের দুটি বাসা এবং মধুবন মার্কেটের দোকানটিও বিক্রি করলাম। দুঃখ নেই, আপনারা ভালো থাকুন। তবে বিশ্বাস করি ষড়যন্ত্রকারীরা এই দুনিয়ায়ই লাঞ্চনার জিন্দেগি উপভোগ করবে।
তিনি আরো লিখেন-বিগত চল্লিশ বছর থেকে যাদের সাথে চলাফেরা করেছি সকলের কাছে মাফ চাই। শেষ কথা হলো আমি সাবেক মন্ত্রী, জমিয়তের গর্বের প্রতীক মুফতী ওয়াক্কাস রহ. এর মতো ধৈর্য আমার নেই। আমি ফকিরের ও ছেলে নই-ইনশাআল্লাহ নির্বাচনের পর মাঠে দেখা হবে। গুড বাই প্রাণের জমিয়ত।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতাদের সাথে গণভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করেন সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সাংসদ শাহীনুর পাশা চৌধুরী। পরে তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানান, এটা তার ব্যক্তিগত সাক্ষাত ছিল, দলীয় নয়।
তিনি বিগত বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে উপ-নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করে জয় লাভ করেছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও ২০ দলীয় জোটের শরিক হিসেবে ঐ আসনে ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হন।
মূলত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করায় তাঁর প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলীয় তাঁর সকল পদ স্থগিত করে জমিয়ত। গতকাল শুক্রবার দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দিন গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিজে দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যকলাপের পাশাপাশি দলের অন্যান্য নেতাদের একই রকম কর্মকান্ডে প্ররোচিত করার অপরাধে শাহীনুর পাশা চৌধুরীর প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলীয় সকল পদ স্থগিত করা হয়েছে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ শাদিআচৌ/ জুনেদ