হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে বিগত কয়েক বছর ধরে কালনী-কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে বদলপুর ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রাম ও পাহাড়পুর সড়ক।


সম্প্রতি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে গ্রাম ও সড়কটির ভাঙ্গন রোধে দুটি দরপত্রের মাধ্যমে প্রায় ৪৫ লক্ষ ব্যয়ে ৪ হাজার বস্তা জিও ব্যাগ (ভাঙ্গন রোধে বালি ভর্তি এক ধরণের ব্যাগ) ফেলা শুরু করা হয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উপজেলার পশ্চিম দিকের শেষ প্রান্ত এবং কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার শেষ প্রান্তের মধ্যঅঞ্চলে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে এক শ্রেণীর বালুখেকোরা মেতে উঠেছে অবৈধ বালু উত্তোলনে৷



"সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের কুশিয়ারা নদী থেকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের মেঘনা নদী পর্যন্ত নদী পথে সরকারি ইজারাকৃত কোন বালুমহাল না থাকলেও বালুখেকোরা অদৃশ্য শক্তির ছত্রছায়ায় প্রতিনিয়তই বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। "আর এদিকে "বালু উত্তোলনের অংশটি নিজের উপজেলার নয় বলে দায় এড়াচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। "


পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানাগেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে জরুরি ভিত্তিতে গ্রাম রক্ষায় ইজিপির দুটি দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে মের্সাস সমতা এন্টারপ্রাইজ ও আমিন এন্ড কোং নামে দুটি প্রতিষ্টান প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে দুটি প্রকল্পের  দায়িত্ব পায়৷ এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পিরোজপুর গ্রাম রক্ষায় ১০ হাজার জিও ব্যগ ফেলা হয়৷ 

"এসব উন্নমুলক কাজের দোহাইয়ে প্রতিনিয়ত সক্রিয় হয়ে উঠে এসব বালুখেকো চক্র। "


সরজমিনে দেখা যায়, বদলপুর ইউনিয়নের বদলপুর বাজার সংলগ্ন  সাতগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের পশ্চিম পাশের নদীর পাড়ে নৌকা থেকে আনলোড ড্রেজার দিয়ে নদীর পাড়ে ফেলা হচ্ছে বালু। 


এ সময় স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায় বদলপুর ইউনিয়নের নোঁয়াগাও এর বাসিন্দা সোহেল মিয়া এই বালু নিয়ে আসছেন৷ 


এ বিষয়ে সোহেল মিয়ার মুটোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান- পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিও ব্যাগ ভরাটের জন্য বালু আনা হচ্ছে৷ তবে আজমিরীগঞ্জের নদী থেকে বালু তুলা হয়না। আমরা ভাটী এলাকা থেকে নিয়ে আসি। 


স্থানীয় বাসিন্দা, হারুন মিয়া, জয়নাল মিয়া সহ একাধিক ব্যাক্তি জানান, কাজ আসে, কাজ শেষ হয় কিন্তু নদী ভাঙ্গন শেষ হয়না। 

বিগত দেড়যুগে পিরোজপুর গ্রামের তিনশোর বেশী পরিবার নদী ভাঙ্গনে তাদের বাড়িঘর হারিয়েছে। 


পানি উন্নয়ন বোর্ড উপ-সহকারী প্রকৌশলী একরামুল হক বলেন, দরপত্রের মাধ্যমে দুটি প্রতিষ্টানকে কাজ দেয়া হয়েছে। আমরা কাউকে নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে বলিনি৷ তারা কোথা  থেকে বালু আনবে এটা তাদের বিষয়।

 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জুয়েল ভৌমিক বলেন, আমি খবর পেয়ে তহসিলদারকে সরেজমিনে পাঠিয়েছি৷ বালু আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কোন জায়গা থেকে তুলা হচ্ছে না। তারা কাজের জন্য নৌকায় করে নিয়ে এসে এখানে আনলোড করছে। 

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/মিলাদ/ নাজাত