চলতি সপ্তাহে স্বর্ণ কিনতে দুবাই উড়াল দিচ্ছেন বহু ভারতীয়। কিন্তু কেন?
 

ভারতের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্য পঞ্জিকা অনুসারে অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটি স্বর্ণ কেনার জন্য একটি শুভ দিন। আগামী ১০ মে অক্ষয় তৃতীয়া। অনেক ভারতীয় পর্যটক এই সময় স্বর্ণ কিনতে দুবাই ভ্রমণ করবেন।


লিয়ালি জুয়েলারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনুরাগ সিনহা বলছেন, “অনেক লোক স্বর্ণ কেনার জন্য ভারত থেকে দুবাই ভ্রমণ করে, বিশেষ করে অক্ষয় তৃতীয়ার মতো উৎসবের সময়, কারণ দুবাই স্বর্ণের বাজার এবং প্রতিযোগিতামূলক দামের জন্য পরিচিত। সেই সঙ্গে দুবাই বিভিন্ন ধরনের স্বর্ণের গয়না, কয়েন এবং বার অফার করে, যার জেরে এটি ভারত এবং অন্যান্য দেশের স্বর্ণের ক্রেতাদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।”

পিভিডি গোল্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রফুল ঢাকন বলেন, “অক্ষয় তৃতীয়ার মতো উৎসব ঐতিহ্য, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনায় মানুষকে একত্রিত করে। দুবাই এর সোনার বাজার, সাধারণত এর বৈচিত্র্য এবং প্রতিযোগিতামূলক দামের জন্য পরিচিত। এই ফ্যাক্টরটি অবশ্যই দুবাইকে স্বর্ণ কেনার জন্য একটি পছন্দের বাজার করে তুলেছে। অক্ষয় তৃতীয়া উদযাপনকারী ভারতের লোকেরাও এখানে উপলব্ধ বিভিন্ন বিকল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে।”

বাফলেহ জুয়েলার্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রমেশ ভোরা বলেছেন, “ভারতীয় পর্যটকরা যারা দুবাই ভ্রমণ করছেন তারা জানেন যে, অক্ষয় তৃতীয়ার সময় নানা রকম অফার চলে, তাই তারা সেই অনুযায়ী দুবাই ভ্রমণের দিনগুলো ঠিক করে।”

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সপ্তাহে অনেক জুয়েলার্স উৎসব চলাকালীন স্বর্ণ, হীরা এবং মূল্যবান ধাতব গহনা কেনার জন্য ক্রেতাদের জন্য বিশেষ ছাড়, শূন্য মেকিং চার্জ এবং উপহার চালু করেছে।
 

ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল এই সপ্তাহের শুরুতে বলেছে, পণ্যের উচ্চ মূল্যের কারণে এই বছরের প্রথম প্রান্তিকে স্বর্ণের গহনার চাহিদা ১০ শতাংশ কমেছে। ভারতে, গহনার চাহিদা এখনও পর্যন্ত  দুর্বল ছিল, যা স্বর্ণের দামের ক্রমাগত রেকর্ড উচ্চতাকে প্রতিফলিত করে।

মালাবার গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের আন্তর্জাতিক অপারেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামলাল আহমেদ বলেছেন, “ভারতের তুলনায় স্বর্ণের কম দাম এবং বিশ্বব্যাপী গহনা ব্যবসায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিশিষ্টতার কারণে বিস্তৃত আন্তর্জাতিক ডিজাইনের প্রাপ্যতা এটিকে ভারতীয় পর্যটকদের জন্য একটি খুব আকর্ষণীয় গন্তব্য করে তুলেছে। পর্যটকরা জুয়েলারিতে একচেটিয়া ডিজাইনের সন্ধান করছেন। তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের আমাদের গ্রাহক বেসের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।”

জয়লুক্কাস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জন পল আলুক্কাস বলেছেন, “দুবাই, যা তার স্বর্ণের বাজার এবং ডিজাইনের জন্য পরিচিত, এই সময়ে ভারত এবং সারা বিশ্ব থেকে ক্রেতাদের আকর্ষণ করে। শহরটি প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে স্বর্ণের গহনা, কয়েন এবং বারগুলো অফার করে, যা এটিকে অক্ষয় তৃতীয়ার কেনাকাটার জন্য ভারতীয় ক্রেতাদের কাছে একটি পছন্দের গন্তব্যে পরিণত করে। সেই সঙ্গে দুবাইয়ের পর্যটন-বান্ধব নীতি, যেমন করমুক্ত কেনাকাটার প্রাপ্যতা এবং ট্যুরিস্ট রিফান্ড স্কিমগুলো, এই শুভ অনুষ্ঠানে স্বর্ণের কেনাকাটার গন্তব্য হিসেবে অবদান রাখে।”
 

কল্যাণ জুয়েলার্সের নির্বাহী পরিচালক রমেশ কল্যাণরামন বলেন, “দুবাই সারা বছরই একটি জনপ্রিয় বৈশ্বিক পর্যটন গন্তব্য, যেখানে বিপুলসংখ্যক পর্যটক বাজার থেকে স্বর্ণের গহনা কিনতে পছন্দ করেন। যদি ভারতীয় পর্যটকরা এই শুভ মৌসুমে মধ্যপ্রাচ্যে ভ্রমণ করেন, তাহলে তারা স্বর্ণ কেনার সময় সেরাটা বেছে নেন।”


 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/এসডি-২০১০


সূত্র : বিডি-প্রতিদিন