দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা যে অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছি, তার নাম করোনাভাইরাস। ইতিমধ্যেই আমরা আমাদের অনেক প্রিয়জনকে হারিয়েছি, রোগে-শোকে হয়েছি জীর্ণ। তবু বেঁচে থাকার তাগিদে আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে। করোনা দেখা দিচ্ছে নতুন রূপ ও নতুন উপসর্গ নিয়ে। উপসর্গগুলো অপরিচিত হওয়ার কারণে অনেক সময় চিহ্নিত করতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট অত্যন্ত সংক্রামক। তাই এর উপসর্গ বা লক্ষণগুলো জেনে নেওয়া জরুরি।

নতুন কোনো উপসর্গ দেখলে সতর্ক হোন


অনেকটা সময় পার করে এসে এখন আমরা করোনার নানা লক্ষণ বা উপসর্গ সম্পর্কে অনেকটাই জানি। কিন্তু এর ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের লক্ষণ এখনও ততটা পরিচিত নয় এবং এটি দ্রুত আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। তাই সংক্রমণের তীব্রতা এড়ানোর জন্য এর লক্ষণগুলোর সূত্রপাত সম্পর্কে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

যুক্তরাজ্যের এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে পরিচালিত কোভিড লক্ষণ স্টাডি অ্যাপ অনুসারে, ডেল্টা সংক্রমণের ফলে বমি বমি ভাব, মাথাব্যথা, পেটে খিঁচুনি, উচ্চমাত্রায় জ্বর, মাথা ঘোরা এবং ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাই এ ধরনের লক্ষণ দেখলে তা এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়। শ্লেষ্মা এবং নাক দিয়ে পানি পড়ার মতো লক্ষণও উপেক্ষা করা উচিত নয়।

ডেল্টা সংক্রমণের সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে-

* জ্বর

* ক্রমাগত কাশি

* দুর্বলতা এবং ক্লান্তি

* স্মৃতি বিভ্রম।

টিকা নেওয়ার পর আক্রান্ত হলে করণীয়

ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট থেকে বাঁচতে টিকা নেওয়া জরুরি। টিকা নিলে তা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটা কমিয়ে দেয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে টিকা গ্রহণের পরও আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। কোভিড স্টাডি অ্যাপ অনুসারে, টিকা নেওয়ার পরে আক্রান্ত হলে তার লক্ষণ অনেকটা ঠান্ডাজনিত অসুস্থতার মতো। গলা ব্যথা, হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি লক্ষণ এক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জ্বর বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে।

অসুস্থ বোধ করলে কী করবেন?

যেহেতু ডেল্টা সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, তাই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা এখন মানুষকে ঘরে বসে কোভিড টেস্ট (অ্যান্টিজেন টেস্ট) করার পরামর্শ দিচ্ছেন, যা সংক্রমণের পূর্বাভাস জানানোর পাশাপাশি নিজের ও অন্যদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সহায়তা করতে পারে। আপনি যদি আক্রান্ত হন তবে অন্যদের থেকে আলাদা থাকুন যেন তারা আক্রান্ত না হয়। তাতে আপনি টিকা নেওয়া থাকুন বা না থাকুন।

টিকা প্রয়োজন

টিকা নেওয়া নিজেকে সুরক্ষিত রাখার অন্যতম সেরা উপায়, এমনকি যদি আপনি এর আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েও থাকেন। যেহেতু ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট অনেক বেশি সংক্রামক, তাই সময়মতো টিকা নিলে তা আপনাকে মারাত্মক ফলাফল থেকে রক্ষা করবে এবং মৃত্যুর ঝুঁকি এড়াবে।

কিভাবে নিরাপদ থাকবেন?

করোনাভাইরাসের সঙ্গে আমরা অভ্যস্ত হতে শুরু করেছি কেবল, তার মানে এর ভয়াবহতা কমেনি মোটেও। তাই সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই। অসুস্থতার ঝুঁকি কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা অনুসরণ করা জরুরি। টিকা নেওয়ার পাশাপাশি মেনে চলুন এই সতর্কতাগুলো-

* ঘরের ভেতরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করুন।

* আড্ডা কিংবা অনুষ্ঠানে তাদেরই ডাকুন, যাদের টিকা নেওয়া হয়েছে।

* মাস্ক ব্যবহার বাদ দেবেন না।

* কোনো আয়োজন করলে তা ঘরের ভেতরের চেয়ে খোলা জায়গায় বেশি নিরাপদ।


সিলেটভিউ২৪ডটকম/ডেস্ক/জিএসি-২৯


সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া