বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি করে জনগণের ১২ টা বাজিয়ে দিচ্ছে। দুর্নীতির ও পাচারের কারণে দেশের অর্থনীতি ক্রমশই খারাপের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

 


সরকার মাথাপিছু আয় বাড়ার কথা প্রচার করে জাতির সাথে প্রতারণা করছে। অথচ একটা শিশু ভুমিষ্ট হওয়ার আগেই ৪৯২ ডলার ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে জন্ম নিচ্ছে। সেটা তারা প্রচার করছেনা। অবৈধভাবে ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে সরকার আজ একঘর হয়ে আছে। বিশ্বে আজ দেশের কোন বন্ধু নেই। জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য লজ্জার।


মির্জা আব্বাস আরো বলেন, সরকারের অর্থমন্ত্রী বলেছেন যে টাকা গেছে তা ফেরত আসবে। মন্ত্রী মেরে দেয়া টাকার কথা কিন্তু কিছু বলেননি। তারা জানে কারা টাকা মেরে দিয়েছে, কারা টাকা পাচার করেছে। সরকারের পৃষ্টপোষকতায় দেশে দুর্নীতি, লুটপাট ও বিদেশে টাকা পাচার হয়েছে। সম্প্রতি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ড. খন্দকার মোশাররফ, এলডিপির চেয়ারম্যান কর্ণেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম, সাবেক শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলন, বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন সহ দেশব্যাপী বিএনপি ও বিরোধী নেতাকর্মীদের বাসা বাড়ীতে হামলা করেছে। বিএনপির আন্দোলনের কথা শুনে সরকারের পায়ের তলার মাটি নেই। তাই তাদের নেতাকর্মীরা হামলা নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। এর পরিনতি ভাল হবেনা। দেশে আগের যেমন পরিবেশ নেই, তেমনী আগের বিএনপিও এখন নেই। আর কোন হামলার ঘটনা হলে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। সর্বত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সাহস থাকলে গুলী চালাবে, আমরা রাজপথ ছেড়ে যাবো না।


তিনি শনিবার বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে দেশব্যাপী বিএনপি ও বিরোধী নেতাকর্মীদের উপর হামলা নির্যাতনের প্রতিবাদে সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। 


জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর পরিচালনায় নগরীর দরগা গেইটস্থ কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সুলেমান হলে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। 


সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস বলেন, আমি শ্রীলঙ্কার প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাইনা। শুধু এইটুকু বলবো অনেক হয়েছে এবার আপনাদেরও পালানোর সময় এসে গেছে। নেতাকর্মীদের বক্তব্যে শুধু আন্দোলনের কথা এসেছে। আমিও বলছি আন্দোলনের ডাক আসছে। কয়েকদিন অপেক্ষা করুন আর চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিন। ভয় পাবেন না কোন নেতাকর্মীর বুকে গুলী করার সাহস এই সরকারের নেই। হযরত শাহজালাল (র.) ও শাহপরান (র.) সহ ৩৬০ আউলিয়ার স্মৃতি বিজড়িত সিলেটের সন্তান হচ্ছেন এম সাইফুর রহমান ও আমার প্রিয় ভাই এম ইলিয়াস আলী। সিলেট বিএনপিকে দুর্বল করতেই ইলিয়াস আলীকে গুম করা হয়েছে। সময়ের পরিবর্তনে সবকিছুর হিসাব নেয়া হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমার কোন বক্তব্য নেই। শুধু এইটুক বলবো, হাসিনা সরকার ও তাদের তাবেদার কমিশনের অধীনে কোন নির্বাচনে বিএনপি যাবেনা। কেউ যদি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপিকে নির্বাচনে নিতে চায়। তারা দালাল হিসেবে চিহ্নিত হবে। আর দালালদের কোন ক্ষমা নেই।


সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুল গাফফার, সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য মামুনুর রশীদ মামুন, এডভোকেট আশিক উদ্দিন, মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সল, অধ্যাপিকা সামিয়া বেগম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট হাবিবুর রহমান, এমদাদ হোসেন চৌধুরী, সালেহ আহমদ খসরু, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেম, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী ছুফি, বালাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি গোলাম রব্বানী, ওসমানীনগর উপজেলা সভাপতি এস টি এম ফখর, বিশ^নাথ উপজেলা সভাপতি লিলু মিয়া চেয়ারম্যান, বিশ^নাথ পৌর সভাপতি বশির উদ্দিন আহমদ, গোলাপগঞ্জ উপজেলা সভাপতি নোমান উদ্দিন মুরাদ, গোলাপগঞ্জ পৌর সভাপতি নজরুল ইসলাম, বিয়ানীবাজার উপজেলা সভাপতি এডভোকেট আহমদ রেজা, জকিগঞ্জ উপজেলা সভাপতি শফিক উদ্দিন, জেলা শ্রমিক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুকে এলাহী, মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি ইউনুস মিয়া, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব তাজরুল ইসলাম তাজুল, জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক এডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন, মহানগর স্বেচ্চাসেবক দলের সদস্য সচিব আজিজুল হোসেন আজিজ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব দেওয়ান জাকির হোসেন খান, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মিফতাউল কবির মিফতা, মহানগর যুগ্ম আহবায়ক মাসুম ইবনে রাজ্জাক রুমেল, জেলা জাসাসের আহবায়ক নিজাম উদ্দিন তরফদার, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী সালেহা কবির শেপি, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, মহানগর ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তোফায়েল আহমদ, জেলা সাধারণ সম্পাদক হাজী দিনার ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান প্রমূখ। সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক জাহেদ আহমদ।

সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, কাউন্সিলের মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়ার পর আমরা অঙ্গিকার করেছিলাম যে কোন আন্দোলনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করবো। আজো আবার প্রতিজ্ঞা করলাম আন্দোলনের ডাক আসলে সিলেট বিএনপি যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে। সিলেট হচ্ছে বিএনপির ঘাঁটি। যে কোন আন্দোলনে অতীতের ন্যয় সিলেট বিএনপি জ¦লে উঠতে প্রস্তুত রয়েছে।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/এসডি-৩৭