টানা ১৩ দিন ধরে পানির সাথে যুদ্ধ করছেন সুনামগঞ্জ জেলার ৯০ ভাগ মানুষ। গেল কয়েক দিনে বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে কিছুটা উন্নতি হওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্রে থেকে বাড়ি ফিলেছিলেন লক্ষাধিক মানুষ। ঘর-বাড়িতে পানি থাকায় এখনো বাড়ি ফিরতে পারেননি ৬৫ হাজার মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

 


চলমান বন্যা পরিস্থিতির মধ্যে টানা বর্ষণে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফের বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগামী ২৪-৪৮ ঘন্টায় বাংলাদেশের উত্তাঞ্চল, উত্তর-পূবাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন ভারতের আসাম মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূবাভাস থাকায় নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আগামী ২৪ ঘন্টা দেশের উত্তর-পূবাঞ্চলের সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

 

আবাহওয়া পূবাভাস ও ফের পানি বৃদ্ধির ফলে ভানবাসি মানুষের মাঝে নতুন করে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘন্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৯৬ মিলিমিটার। ফলে সুনামগঞ্জের সুরমা নদীসহ কয়েকটি নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিকেল ৫ টা পর্যন্ত সুরমা নদীর নবীরগর পয়েন্ট দিয়ে বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বুধবার রাতে ভারী বৃষ্টিপাত হলে নদীর পানি বৃদ্ধিসীমা অতিক্রম করে জেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম।

 

এদিকে দুই দফা বন্যায় জেলার লক্ষাধিক কাঁচা-আধাকাচা, টিন সেটের ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেকের ঘরে বেড়া, টিন, বাঁশের বানের পানিতে ভেসে গেছে। হাওরের ঢেউয়ের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে বসতঘর। বন্যা পরবর্তি পুনবার্সন নিয়ে দুঃচিন্তায় লাখ পরিবার। এক্ষেত্রে সরকারের সরকারি বেসরকারী সহযোগিতা চেয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

 

দক্ষিণ সুনামগঞ্জের বীরগাঁও গ্রামের হিরন মিয়া বলেন, বন্যা আমার বাড়ি ঘর সব নিয়েগেছে। আমি বড় অসহায় হয়ে গেছি। নতুন করে বাড়িঘর নির্মাণের সামর্থ্য আমার নেই।

বেলাল আহমদ বলেন, বন্যায়  যে ক্ষতি হয়েছে সরকার যদি সাহায্য না করে তাহলে যাওয়ায় যায়গা নেই। বন্যা পরবর্তি সময়ে বানভাসিদের পুনবার্সন করার দাবি জানান তিনি।

জেলা ত্রাণ ও দুযোগ বিষয়ক কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, বন্যায় কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপন করা হচ্ছে। আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে তালিকা আমাদের কাছে চলে আসবে। প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির তালিকা চলে আসলে পুনবার্সনের জন্য সরকারতে সুপারিশ করা হবে।

 

এদিকে বন্যা কবলিত মানুষের মধ্যে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড, নৌ বাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনী ত্রাণসহযোগিতা ছাড়াও স্বাস্থ্য সেবা চলমান রাখার কথা জানিছে জেলা প্রশাসন।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম/এসএনএ/এসডি-৫১