আরমানের আহমেদের বিয়ের অনুষ্ঠান আগামী শুক্রবার। এজন্য কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া (বুকিং) করতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নগরীর কয়েকটি সেন্টার ঘুরেও ওইদিন সেগুলো ফাঁকা পাওয়া যায়নি। সবক’টিই বুকড হয়ে আছে। আর সেন্টারগুলো বুকিং দিয়েছে বিএনপি।

আরমান আহমেদ বলছিলেন, ‘১০-১২টি সেন্টার ঘুরে কোনোটিই খালি পাইনি। সেন্টার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিএনপি নেতা-কর্মীদের অবস্থানের জন্য ওইদিন সেন্টার বুকড হয়ে গেছে।’


সারা দেশের ধারাবাহিকতায় সিলেটে বিএনপির গণসমাবেশ আগামী শনিবার (১৯ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে। নগরীর চৌহাট্টাস্থ আলিয়া মাদরাসা মাঠে হবে এই সমাবেশ। এজন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি।

বিএনপি নেতারা জানান, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে ‘বাধা দিয়েছে সরকার’। তাদের ইশারায় সমাবেশের দুইদিন আগে থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গণপরিবহন। সমাবেশস্থলে আসতে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা বাধা দিয়েছে। সিলেটেও এর পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা আছে।

এই বিষয়টি মাথায় রেখে সিলেটের বিভিন্ন স্থানের দলীয় নেতা-কর্মীদের আগেভাগেই শহরে নিয়ে আসতে নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপি। আগেভাগেই যেসব নেতা-কর্মী আসবেন, তাদের সিংহভাগই সমাবেশস্থলে অবস্থান নেবেন। বাকিদের জন্য কমিউনিটি সেন্টারে বুকিং দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষ থেকে সেন্টারগুলো বুকিং দেওয়া হয়েছে বলে বিএনপি সূত্র জানিয়েছে। সিলেটে বিএনপির গণসমাবেশ সফলের জন্য যে ছয়টি কমিটি করা হয়েছে, এর একটি হলো আবাসন ব্যবস্থাপনা। এই কমিটির আহ্বায়ক হলেন আরিফ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট নগরীর আগ্রা, মালঞ্চ, নূরে আলা, ময়ুরকুঞ্জসহ ২০টিরও বেশি কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করেছে বিএনপি। আগেভাগে সমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতা-কর্মীদের রাখা হবে এসব সেন্টারগুলোতে।

নগরীর সোবহানীঘাটস্থ আগ্রা কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থাপক সুমন মিয়া জানান, মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষ থেকে ১৮ নভেম্বর সেন্টার বুকিং দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে একাধিক চেষ্টা করেও আরিফের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

তবে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী সিলেটভিউকে বলেন, ‘কতোগুলো সেন্টার ভাড়া করা হয়েছে, তা এক্সাক্টলি বলা যাচ্ছে না। কারণ, অনেকেই বিচ্ছিন্নভাবে ভাড়া করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘যেগুলো খালি পাওয়া গেছে, ভাড়া করা হয়েছে। তবে এগুলো আমরা করছি না, নেতা-কর্মীরা যারা আগেই আসবেন, তারা স্বউদ্যোগে করছেন।’

কাইয়ুম চৌধুরী জানান, আলিয়া মাদরাসা মাঠেও নেতা-কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যেসব নেতা-কর্মী আগেই চলে আসবেন, তাদের জন্য প্রয়োজনীয় খাবারের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

জানতে চাইলে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সুদীপ দাস সিলেটভিউকে বলেন, ‘কমিউনিটি সেন্টারগুলো বিএনপি বুকিং দিচ্ছে বলে আমরা শুনেছি। এ বিষয়ে তথ্য নিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘সেন্টার তো প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান। তারা যদি বেআইনি কোনো কাজে না জড়ায়, বেআইনি কাজে ভাড়া না দেয়, তাহলে সমস্যা নেই। কিন্তু বেআইনি কোনো কিছু করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে