সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের বাসিন্দা রোজিনা আক্তার (২৭) দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। ২১ জানুয়ারি স্বজনদের সঙ্গে এক ভিডিও কলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সেখানে তার ওপর বর্বরোচিত নির্যাতনের বর্ণনা দেন তিনি। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ভিডিও কলে রোজিনা আক্তার সেখানে তার ওপর নির্যাতনের চিহ্ন দেখান। এ সময় তাঁর হাত-পায়ে গরম পানি ঢেলে দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান। রোজিনা উপজেলার উছমানপুর গ্রামের সুন্দর আলীর মেয়ে।


রোজিনার বাবা বলেন, মেয়ে ভিডিও কলে তার ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে জানালে সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দালাল দুলাল মিয়াসহ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তার মেয়েকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

সুন্দর আলী বলেন, গত বছরের ২১ ডিসেম্বর দালাল দুলাল মিয়া ঢাকার মডেল এভিয়েশন সার্ভিসের মাধ্যমে তার মেয়েকে সৌদি আরবের দাম্মাম পাঠান। উচ্চ বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে সৌদি আরবে পাঠানো হলেও সেখানে যাওয়ার পর থেকে তার ওপর বর্বরোচিত নির্যাতন চালানো হচ্ছে।

সুন্দর আলী আরও বলেন, দীর্ঘদিন মেয়ের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বন্ধ ছিল। তাকে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। সর্বশেষ ২১ জানুয়ারি মেয়ের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা হয় তাদের। এ সময় মেয়ে তার ওপর নির্যাতনের চিহ্ন দেখান। পরে এ ঘটনায় তিনি আদালতে মামলা করেন।

এ ব্যাপারে স্থানীয় গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, রোজিনা আক্তার খুবই গরিব ঘরের মেয়ে। পরিবারের অসচ্ছলতা ঘোচাতে দালাল ধরে বিদেশে যান। সেখানে তাঁর ওপর নির্যাতনের বিষয়টি দুঃখজনক। তাকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান চেয়ারম্যান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মোজাহিদ আলম বলেন, মামলাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিদ্ধান্ত ভৌমিক বলেন, ‘সৌদি আরবে নির্যাতনের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।’


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডি.আর