সপ্তাহে ৪দিন অফিস করার নীতি চাকরিজীবী ও বিভিন্ন ফার্মের জন্য কিছুটা অধরাই ছিল। তবে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে বিশ্বের অনেক কোম্পানি তাদের কর্ম-পরিবেশ সংক্রান্ত নীতিতে পরিবর্তন এনেছে। যার ফলে সপ্তাহে ৪দিন কাজের নীতিটি আরও ত্বরান্বিত হয়েছে।


ইউএস, আয়ারল্যান্ডভিত্তিক ৩৩টি কোম্পানি পরীক্ষামূলক ভাবে গত বছর এই নীতি বাস্তবায়ন করে ইতিবাচক ফলাফল পেয়েছে। বিশেষ করে কোম্পানির পারফরমেন্স, উৎপাদন ক্ষমতা ও কর্মীদের কাজের প্রতি মনোযোগ আগের চেয়ে আরও বেড়েছে। কর্মীরা সপ্তাহে অল্প দিন কাজ করায় তাদেরও বেশি চাপ নিতে হয়নি।


প্রতিবেদন অনুসারে মানসিক ভাবে উৎফুল্ল থাকায় কর্মীরা আগের চেয়ে আরও বেশি কাজে মনোযোগী ছিল। পরীক্ষামূলক এই প্রজেক্ট শেষে ৩৩ কোম্পানির মধ্যে ২৭ কোম্পানিই ইতিবাচক ফল পেয়েছে। তারা সপ্তাহে ৪দিন কাজের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে একটি সার্ভে পরিচালনা করে। এতে এই কর্ম পদ্ধতিকে ১০ মধ্যে ৯ রেটিং দেওয়া হয়েছে।

গত বছরে যুক্তরাজ্যের ৭০টি ফার্মে এই নীতিটি পরীক্ষামূলক-ভাবে চালু করা হয়। নির্দিষ্ট সময় শেষে প্রায় ৮৬ শতাংশ কোম্পানিই সপ্তাহে ৪ দিন কাজের নীতিতে সফলতা পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছে। এবং তারা পরীক্ষামূলক প্রজেক্টের শেষে এই নীতিটিকে স্থায়ী ভাবে বাস্তবায়ন করার পক্ষে মত দেয়।

এসব প্রতিষ্ঠানের ভাষ্যমতে, সপ্তাহে চারদিন কাজের ফলে প্রতিষ্ঠানে আগের চেয়ে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসঙ্গে পরিবহন ও কর্মীদের চাইল্ড-কেয়ারের পেছনে যে খরচ হতো, সেটাও কমেছে। ফলে মোটা অংকের অর্থ প্রতিষ্ঠানগুলো সাশ্রয় করতে পেরেছে।

একই ধরনের নীতি বেলজিয়াম, স্পেন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে পরীক্ষামূলক চালু হওয়ার পরে তারাও ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে। এবং কর্মীরা এই নীতিকে রীতিমত লুফে নিয়েছে। তারা এর বিস্তর প্রয়োগও চাইছে।

সপ্তাহে চার দিন কাজের এই নীতি এতো সাড়া ফেলার পরেও কিছু কিছু কর্মীরা এখনো এই সুবিধাটির ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। টেকভিত্তিক বা বুদ্ধি-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো হয়তো অদূরে এর সুফল পেতে পারে।

তবে প্রথাগত ঐতিহ্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মরত কর্মীরা এই সুযোগ পাবেন কিনা, তা এখনো পরিষ্কার নয়। তবে এটা স্পষ্ট এখনো প্রথাগত কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যারা আদতে এই সুবিধা ভোগ করতে পারবে না।

ওয়ার্ক টাইম রিডাকশন সেন্টার অব এক্সিলেন্স এর ডিরেক্টর এবং সহ প্রতিষ্ঠাতা জো ও’কনর বলেন, পরিকল্পনাটি টেক ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের জন্য ভালো হবে। ভবিষ্যতে তারা এই নীতিটির ইতিবাচক সাড়া পাবে।

 

তিনি আরও বলেন, এই নীতিটি একটি সহজ ও সময় সাশ্রয়ী। তাছাড়া অফিসের বাইরে বেশিদিন থাকায় তারা মানসিকভাবে উৎফুল্ল থাকবেন। এরফলে উৎপাদনশীলতা আরও বাড়ছে। কারণ কর্মীদের কাজের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে।

জো ও‘কনর বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই এই নীতির ইতিবাচক ফলাফল দেখতে পেয়েছি।

তবে তিনি বলেন, অন্যান্য সেক্টরেও চারদিন কাজের নীতি বাস্তবায়ন করার সম্ভব। তবে এ জন্য দরকার পুনরায় চিন্তা ভাবনা করা। কারণ বিস্তর পরিকল্পনা ছাড়া সব সেক্টরে এই নীতি বাস্তবায়ন করলে ইতিবাচক ফলাফল নাও আসতে পারে। কিছু ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে কম কাজ করলে কম পারিশ্রমিক পাওয়া যায়। এসব ক্ষেত্রে নীতিটি নতুন করে পর্যালোচনা করা উচিত।

 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম / নাজাত-১৩


সূত্র : ঢাকা পোস্ট