বুধবার দুপুর। সিলেট সরকারি মহিলা কলেজ। উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার প্রাতিষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করছেন অধ্যক্ষসহ অন্যান্যরা। সামনে বেশকিছু শিক্ষার্থী।

দেখে মনে হয়, এসব শিক্ষার্থী নিজেদের ফলাফল জানার জন্য অধীর আগ্রহে আছে। কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। এসব শিক্ষার্থী এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণই করেনি! তারা মূলত কলেজের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।


তাহলে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীরা কোথায়? একজন বললেন, ‘তারা তো দেখছি আসেনি’।
কেন আসেনি?
-এখন তো ঘরে বসেই ফলাফল পেয়ে যায়, আগের সেই অপেক্ষা-প্রতীক্ষা কোনোটাই নেই।

পরে অবশ্য ফলাফলপ্রত্যাশী কয়েকজন শিক্ষার্থীকে কলেজ আঙিনায় দেখা গেছে।

গেল কয়েক বছর ধরেই প্রকৃত চিত্রটা এমনই। এসএসসি কিংবা এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের জন্য স্কুল-কলেজে শিক্ষার্থীদের অধীর আগ্রহে থাকার চিত্রটা বদলে গেছে অনেকাংশেই।

অনলাইনের সহজলভ্যতার বদৌলতে পাল্টে গেছে অফলাইনের উচ্ছ্বাসের আবহ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েক বছর আগেও ফলাফলের দিন সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠানে হাজির হতেন। ফলাফলে কী হয় না হয় এ নিয়ে তাদের মধ্যে চিন্তা, উদ্বেগ দেখা যেত। এরপর প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষ যখন ফলাফল প্রকাশ করতেন, তাকে ঘিরে দাঁড়াতেন সবাই।

কিন্তু অনলাইনে ফলাফল প্রকাশ এবং সহজভাবে তা পেয়ে যাওয়ার সুযোগ যতো বেড়েছে, প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ফলাফল জানার আগ্রহ ততোই কমেছে।

২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে আজ বুধবার। ফলাফল প্রকাশের পর বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ঘুরে ফলাফলপ্রত্যাশীদের তেমন আনাগোনা দেখা যায়নি। কয়েকটিতে ফলপ্রত্যাশীদের দেখা গেলেও তাদের সংখ্যা ছিল নেহাতই কম।

অফলাইনের উচ্ছ্বাস কমলেও অনলাইনের উচ্ছ্বাসে কোনো কমতি নেই। একদিকে ফলাফল এখন হাতের মুঠোয়, অন্যদিকে ফলাফল প্রাপ্তির পর ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ তথা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তা জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে দ্রুত। এরপর অনলাইন মাধ্যমেই ওঠছে শুভেচ্ছার ঝড়।

সামনের দিনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফলাফলপ্রত্যাশীদের ভিড় ক্রমেই শূন্যতে নেমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে