ডিজিটাল সিলেট নগর গঠন প্রকল্পের আওতায় ২০২০ সালে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা চালুর উদ্যোগ নিয়েছিলো সরকার। তবে এই প্রকল্পেরই আরেকটি সুবিধা ‘ফ্রি ইন্টারনেট’ চালু না থাকাসহ কয়েকটি কারণে সরকারের যুগান্তকারী সেই উদ্যোগ বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। ফলে ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নগরবাসী।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন- সার্ভার স্থাপন ও নেটওয়ার্কিংয়ের কাজ চলছে। শীঘ্রই সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ। আর চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে পরীক্ষামূলকভাবে সীমিত পরিসরে ওসমানী হাসপাতালে এ কার্যক্রম চালু করা হবে।


২০১৭ সালে ‘ডিজিটাল সিলেট সিটি’ গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ প্রকল্পের আওতায় ৩টি বিষয়ে কাজ শুরু হয়। সিলেট শহরের বেশ কিছু এলাকায় বিনামূল্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নজরদারি ক্যামেরা বসানো এবং ওসমানী হাসপাতালে ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা (হেলথ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম) চালু। ওসমানীতে ডিজিটাল এ স্বাস্থ্যসেবা চালুর জন্য ১৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে বিনামূল্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালু ও শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নজরদারি ক্যামেরা বসানোর মাধ্যমে প্রকল্পের বাকি দুই সুবিধা নগরবাসী কিছুদিন পেলেও ওসমানীতে এখনও চালু হয়নি ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা।

প্রকল্পের শুরুতে সংশ্লিষ্টরা বলেছিলেন- ওসমানী হাসপাতালে ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা চালু হলে সেবাপ্রার্থীরা বাড়ি থেকেই অনলাইনে নির্দিষ্ট ফি দিয়ে আউটডোরের টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। চিকিৎসকেরা ডিজিটাল ডিভাইসে ব্যবস্থাপত্র লিখবেন। হাসপাতাল থেকে ওষুধ সংগ্রহের জন্যও আলাদা করে ব্যবস্থাপত্রের প্রয়োজন হবে না। রোগীর পুরো তথ্য ও রোগবৃত্তান্ত তথ্যভান্ডারে থাকবে, যা ভবিষ্যতে চিকিৎসার জন্য সহায়ক হবে।

কিন্তু সরকারের সময়োচিত গুরুত্বপূর্ণ এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন বিলম্বিত হওয়ায় ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সিলেটবাসী।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের প্রশিক্ষণ, নেটওয়ার্ক স্থাপন, তথ্যভান্ডার (সার্ভার) বসানোসহ প্রকল্পের অনেক কাজ এখনও বাকি। বিষয়টি নিয়ে গত বছরের নভেম্বরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সংস্থা বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকল্পের পরিচালক মহিদুর রহমান খান জানান, হাসপাতালের ডিজিটাল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা অংশটি প্রকল্পের দ্বিতীয় সংশোধনীতে যুক্ত করা হয়। এ কারণে এটি বাস্তবায়নে বিলম্ব হচ্ছে। তাছাড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণেও কাজ অনেকটা পিছিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া সিলেটভিউ-কে বলেন, গত মাসে এ সেবাসংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের কথা ছিলো। কিন্তু অনিবার্য কারণবশতঃ সেটি হয়নি। শীঘ্রই সেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া হাসপাতালে সার্ভার স্থাপন ও নেটওয়ার্কিংয়ের কাজ চলছে। চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু বিভাগে এই কার্যক্রম চালু করার কথা  রয়েছে।  

তিনি বলেন- এ সেবা চালু হলে মানুষের কষ্ট অনেকটাই কমে যাবে। আউটডোরে লাইনে দাঁড়িয়ে আর রোগী দেখানোর টিকেট সংগ্রহ করতে হবে না। এছাড়াও রোগীর পুরো তথ্য ও রোগবৃত্তান্ত সফটওয়্যারে সংরক্ষিত থাকবে, যা পরবর্তীতে রোগীর কাজে লাগবে।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম