সিলেট মহানগেরর সোবহানীঘাটে সবজিবাজারের আড়ত। বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন ভোরে সবজি আসে এই আড়তে। সেখান থেকে খুচরো বিক্রেতারা কিনে নিয়ে যান সবজি। মহানগরের ভ্রাম্যমাণ সবজি ব্যবসায়ীরাও প্রতিদিন ভোরে সোবহানীঘাটের আড়ত পণ্য সংগ্রহ করেন। কিন্তু সম্প্রতি সবজি সংগ্রহের ভোরের দুই-আড়াই ঘণ্টা আতঙ্কের হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের জন্য। কারণ- সবজি কিনতে আসার সময় তারা প্রায়দিনই ছিনতাইয়ের শিকার হন। বিশেষ করে ভোর চারটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত মহানগরের ওসমানী শিশু উদ্যানের সামনে থেকে সোবহানীঘাট পয়েন্ট ও নাইওরপুল পর্যন্ত এই দুই সড়কে ছিনতাইয়ের শিকার হন ভ্রাম্যমাণ সবজিবিক্রেতারা। আর এই জায়গা পার হয়েই তাদের সোবহানীঘাট সবজি আড়তে যেতে হয়। সম্প্রতি এই দুই সড়কে বেশ কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটার অভিযোগ করেছেন সবজি ব্যবসায়ীরা।
 

এছাড়া সোবহানীঘাট পুলিশ ফাঁড়ির অদূরেই এমন ঘটনা বার বার ঘটায় ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেছেন তারা।
 


সবজিবিক্রেতারা জানান, এই দুই সড়ক তাদের কাছে বর্তমানে এতটাই আতঙ্কের যে তাঁরা ভোরে একা একা এই জায়গা দিয়ে যাতায়াত করেন না। দল বেঁধে সবজি কিনতে যান। এই সময়ে একা গেলে সবজি ব্যবসায়ীকে অবধারিতভাবেই ছিনতাইকারীদের কবলে পড়তে হবে। মাঝেমধ্যে দু-তিনজনের ছোট দল হলেও ছিনতাইকারীদের হাত থেকে রেহাই মেলে না।
 

কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রামের বাসিন্দা মো. উজ্জ্বল মিয়া (৩০) প্রায় ১২ বছর ধরে সিলেটে থেকে ভ্যানে করে কখনো সবজি, কখনো ফল বিক্রি করেন। কয়েকদিন আগে প্রতিদিনের মতো আড়ত থেকে ভোর ৫টার দিকে ভ্যান নিয়ে রওনা হন সোবহানীঘাট সবজি আড়তের উদ্দেশে। মহানগরের নগরীর উত্তর ধোপাদীঘির পাড়ের ওসমানী শিশুপার্কের সামনে যাওয়ামাত্র তিনজন লোক তাঁকে আটকে গলায় চাকু ধরেন সব টাকা-পয়সা ও মুঠোলোন নিয়ে নেন।
 

উজ্জ্বল মিয়া বলেন, ‘তারা চাকু ধরায় আমার কাছে থাকা সবজি কেনার পাঁচ হাজার টাকা তাদের দিয়ে দিই। আমি তাদের সঙ্গে জোরাজুরি করিনি। কারণ, প্রায় মাস চারেক আগে আমাদের পরিচিত একজনকে একই জায়গায় ছিনতাইকারীরা ধরলে সে টাকা না দিতে জোরাজুরি করছিল। তাই তাকে চাকু মেরে সব টাকা নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।’
 

উজ্জ্বল মিয়া আরও বলেন, ‘চার-পাঁচ মাস ধরে এই জায়গায় এ ধরনের ছিনতাইয়ের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। আমরা সামান্য পুঁজি নিয়ে ব্যবসা করি। এখন এই পুঁজিও ছিনতাই হয়ে গেলে করার কিছু থাকে না। এসব বিষয়ে আমরা পুলিশের কাছেও যাই না ভয়ে। কারণ, এই পথেই আমরা নিয়মিত সবজি আনতে যাই। পুলিশে নালিশ করলে ছিনতাইকারীরা খেপে গিয়ে আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে যেতে পারে।’
 

এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সুদীপ দাস সিলেটভিউ-কে বলেন, ‘বিষয়টি আমারা জানার পর ওই এলাকায় ভোরে টহল বাড়িয়েছি।’

এ ধরনের ঘটনার শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানানোর পরামর্শ দিয়েছেন সুদীপ দাস।

 


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম /এসডি-১৭