মিসরে বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশনের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিসরস্থ রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদের কল্যাণের জন্য দূতাবাস সর্বদা বদ্ধপরিকর। অর্গানাইজেশনের সমস্ত প্রোগ্রাম, শিক্ষা ও বিনোদন কার্যক্রমে আমি অংশগ্রহণ করি।
তিনি বলেন, স্কলারশিপ বৃদ্ধি করণে আল-আযহারের গ্রান্ড ইমাম (প্রেসিডেন্ট ওব আযহার) এর সাথে আমি সাক্ষাৎ করেছিলাম এবং আমার দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশি ছাত্রদের জন্য প্রতি বছর ৫০টি স্কলারশিপের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন শাইখুল আযহার।
ইফতার মাহফিলে আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০০ জন বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেছিলেন।
বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশনের সভাপতি মো. নাজিব শাওকীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল সাইমুম আল-মাহদীর পরিচালনায় ইফতার পূর্ববর্তী আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন- অর্গানাইজেশনের উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্যগণ।
সিনিয়রদের মাঝে বক্তব্য রাখেন- শোয়াইব হোসাইন আল-আযহারী, তাজদিদ বিন অদুদ এবং মো. শিহাবউদ্দীন আল-আযহারী। সমাপনী বক্তব্য ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন, অর্গানাইজেশনের সহ সভাপতি শাহেদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বক্তরা গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করে বাংলাদেশে ফিরে গিয়ে আপামর জনতার আত্মশুদ্ধির লক্ষ্যে ইসলামের সঠিক দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্যে অর্গানাইজেশনের সভাপতি ছাত্রদেরকে মতানৈক্য ভুলে ইসলামের সুমহান আদর্শের ছায়াতলে, একতার বন্ধনে অটুট থাকার জোড় তাগিদ দেন।
আয়োজকরা জানান, ১৬তম রমাজানুল মোবারকে মিশরীয় সময় বিকেল চারটায় অনুষ্ঠান শুরু হয়ে চলে মাগরিবের আযানের আগ পর্যন্ত। আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আলাদা দুইটি অডিটরিয়াম বুকিং করা হয়। অর্গানাইজেশনের মহিলা সদস্যরা পর্দার সাথে ইফতারি আয়োজনে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
ওই অর্গানাইজেশনের নয় সদস্যের কার্যকরী কমিটির অক্লান্ত পরিশ্রমে আয়োজিত মনজ্ঞ অনুষ্ঠানে, কুরআন তেলওয়াত, রমাজান নাশিদ, অর্গানাইজেশনের থিম সং সহ ইসলামী সাংস্কৃতির নানান কার্যক্রম উপস্থাপিত হয়। অর্গানাইজেশনের সাংস্কৃতিক ফোরামের সদস্যগণ পারফরম্যান্স করেন। মনোমুগ্ধকর এই আয়োজনে সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন- রেজাউর রহমান, সাজিদুল ইসলাম, কাওসার হাবিব, নেওয়াজ জুলকারনাইন।
ইফতারের আয়োজনেও ছিলো, বাংলাদেশি খাবারের ছোঁয়া। ছাত্রদের নিজ হাতে রান্না করা, বিফ বিরিয়ানি। যা বাঙালির ঐতিহ্যকে প্রোস্ফুটিত করে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন, সবার আস্থার প্রতিক। মিশরের রাষ্ট্রীয় সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম থেকে শুরু করে, এম্বাসী আয়োজিত বাংলাদেশের প্রতিটি জাতীয় দিবসে, অর্গানাইজেশনটি সতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে থাকে। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশী ছাত্রদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশ ও সুস্থ বিনোদনের লক্ষ্যে, নানাবিধ কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। যেমন, ক্রিকেট, ফুটবল টুর্নামেন্টে, বাৎসরিক শিক্ষা সফর, সাংস্কৃতিক নানা প্রতিযোগিতা, শিক্ষা মূলক কর্মসূচি, নানান দিবস কেন্দ্রীক প্রোগ্রাম সহ ইত্যাদি আয়োজন করে থাকে।
মিশরের বুকে বাংলাদেশী ছাত্ররা উচ্চশিক্ষায় অসামান্য অবদান রেখে যাচ্ছে। আল-আযহারের কলেজ লেভেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে, সারা বিশ্বের ছাত্রদের মাঝে, প্রথম থেকে দশ জনের মেধা তালিকার সিংহভাগ বাংলাদেশি ছাত্ররা অর্জন করে থাকে। যা বাংলাদেশকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। ছাত্রদের রেজাল্ট ও পড়াশোনা কেন্দ্রীক উৎসাহ প্রদান ও কার্যকরী পদক্ষেপের জন্য অর্গানাইজেশন সত্যিই বিদেশের মাটিতে একটি রোল মডেল। দল মত নির্বিশেষে এই সংগঠন একটি ঐক্যমতের প্রতিক। যেখানে বাংলাদেশের সমস্ত মতাদর্শের ছাত্রগণ নিজেদের দূরত্ব ভুলে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন। ইসলামের অনন্য সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে এ সংগঠনের মাধ্যমে।
বর্তমান কার্যকরী কমিটির সেশনে নয় সদস্যের মধ্যে অর্থ সম্পাদক হিসেবে সাইফুর রহমান ও শরীফ মো. কাওসার হোসাইন, শিক্ষা সম্পাদক আব্দুর রহমান, অফিস সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত এবং মিডিয়া ও প্রেস সম্পাদক আল আমিন সরকার উপস্থিত ছিলেন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম / কে.আর / ডি.আর