ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে জাল টাকায় বাজার সয়লাব করতে সিলেটে অপতৎপরতা শুরু করেছে কারবারিরা। তবে প্রস্তুত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী র‍্যাব ও পুলিশ। ইতোমধ্যে জাল টাকার দুই কারবারিকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে। 

আগামী ২৯ জুন পবিত্র ঈদুল আযহা। পরশু থেকে সিলেটে আনুষ্ঠানিকভাবে বসবে গরুর হাট। ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন স্থান থেকে এসে সিলেটের হাটগুলোতে গরু উঠাবেন। প্রতিদিন লেনদেন হবে কোটি কোটি টাকা। তাই গরুর হাটকে টার্গেট করে জাল টাকা সরবরাহের পাঁয়তারা করছে অপরাধী চক্র। পশুর হাটগুলোর মাধ্যমে জাল ছড়িয়ে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তারা।


আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, জাল নোটগুলো খুবই নিখুঁতভাবে তৈরি করছে চক্রগুলো। অসতর্ক হলে এগুলো ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তবে সিলেটে জাল টাকা সরবরাহ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, আগে সাধারণত ৫০০ ও ১০০০ টাকার জাল নোট ছাপাতো চক্রগুলো। তবে মানুষ এসব নোট লেনদেনের ক্ষেত্রে অধিক সতর্ক থাকায় এখন ৫০/১০০/২০০ টাকার নোটও জাল করে তারা। এসব জাল টাকা অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমেও বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এমনকি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমেও জাল নোট সরবরাহ করার নজির রয়েছে। এসব চক্র এক লাখ জাল টাকা ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে। 

সিলেট জাল টাকার বিস্তার ঠেকাতে ইতোমধ্য কাজ শুরু করে দিয়েছে পুলিশ। আর র‍্যাব মাঠে নামবে রবিবার (২৫ জুন) থেকে। 

সিলেট মহানগর পুলিশ জানায়, গত ২১ জুন জালালাবাদ থানাধীন শিবেরবাজার এলাকা থেকে জালটাকার নোটসহ ২ কারবারিকে আটক করে জনতা। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। 

আটককৃতরা হলেন- সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার পশ্চিম নরাই গ্রামের আখলাকুর রহমান মিলনের ছেলে মো. আফজালুর রহমান রুমেন (২৬) ও একই গ্রামের ইদন মিয়ার ছেলে মো. জাবেদ মিয়া (২২)।

আটকের সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অংকের নোটের ১০ হাজার টাকার জাল নোট জব্দ করে পুলিশ। পরে এ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরপূর্বক তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সুদীপ দাস সিলেটভিউ-কে বলেন- সিলেটে জাল টাকার বিস্তার ঠেকাতে ও কারবারিদের ধরতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে পুলিশ। এছাড়া আজ (শনিবার) মহানগর পুলিশের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ঈদুল আযহা উপলক্ষে সার্বিক শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন কমিশনার স্যার। 

সুদীপ দাস সিলেটভিউ-কে আরও বলেন- কমিশনার মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী মহানগর এলাকায় জাল টাকার বিস্তার ও ব্যবহার রোধে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পশুর হাটে জাল টাকা সনাক্তকরণের জন্য মহানগর এলাকায় প্রায় ৫০টিরও বেশি মেশিন বসানো হয়েছে।

র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-৯ এর মিডিয়া অফিসার সিনিয়র এএসপি আফসান আল-আলম সিলেটভিউ-কে বলেন- সিলেটে কাল (রবিবার) থেকে এ বিষয়ে মাঠে কাজ শুরু করবে র‍্যাবের একাধিক টিম। কাজিরবাজার পশুর হাটের পাশে ক্যাম্প করা হবে। ক্যাম্পে থাকবে জাল টাকা সনাক্তকরণ মেশিন। এছাড়া এ বিষয়ে যে কেউ অভিযোগ করলে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে র‍্যাব-৯। 

এছাড়াও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় সবচেয়ে বড় পশুর হাটের পাশে র‍্যাব-৯ আরেকটি ক্যাম্প বসাবে বলে জানান আফসান আল-আলম। 


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম