মানুষের দোরগোড়ায় ডাকসেবা পৌঁছে দিতে সিলেটে একসময় চালু করা হয়েছিলো ‘ভ্রাম্যমাণ ডাকঘর’। দীর্ঘ ১০ বছর সেবাটি পেয়েওছিলেন সিলেট মহানগরের লোকজন। কিন্তু একসময় ‘চাহিদা কমে যাওয়ায়’ বন্ধ করে দেওয়া হয় ‘ভ্রাম্যমাণ ডাকঘর’। এখন সেটি মুখ থুবড়ে পড়ে আছে সিলেট বিভাগীয় প্রধান ডাকঘরের নতুন ভবনের প্রবেশপথের পাশে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মহানগরের বাসিন্দারা যাতে ডাকসেবা সহজে পান সে লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে সিলেটে ‘ভ্রাম্যমাণ ডাকঘর’ চালু করা হয়। ‘ভ্রাম্যমাণ ডাকঘর’ হিসেবে ব্যবহৃত গাড়িতে থাকতেন দুজন ডাক-কর্মকর্তা। সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোড়ে নির্দিষ্ট সময়ে ‘ভ্রাম্যমাণ ডাকঘরটি’ দাঁড়িয়ে থাকতো ১০-১৫ মিনিট। এ ক্ষেত্রে যেসব এলাকায় শাখা ডাকঘর নেই সেসব এলাকায় মূলতঃ যেতো ‘ভ্রাম্যমাণ ডাকঘর’। দূরের ডাকঘরে যাওয়া লাগতো না সেবা গ্রহীতাদের, কাছের রাস্তার মোড়েই তারা ‘ভ্রাম্যমাণ ডাকঘরে’ আদান-প্রদান করতেন চিঠি-পত্র বা পার্সেল-ডকুমেন্ট।


১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সেবাটি সিলেটে চালু ছিলো। তবে এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে শাখা ও নৈশ ডাকঘর স্থাপিত হওয়ায় ‘অনেকটা কমে যায় ভ্রাম্যমাণ ডাকঘরের চাহিদা’। ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই ২০০৬ সাল থেকে সিলেটে বন্ধ রয়েছে এ সেবা। আর সেই থেকে ‘ভ্রাম্যমাণ ডাকঘর’ হিসেবে ব্যবহৃত গাড়িটিও সিলেট প্রধান ডাকঘরে পড়ে রয়েছে মুখ থুবড়ে। গাড়ির বডিতে পড়েছে মরচে, চাকা দেবে আছে কাদাপানিতে।

তবে সচেতন নগরবাসী মনে করেন- এখনো সিলেটে প্রয়োজন রয়েছে ‘ভ্রাম্যমাণ ডাকঘর’র। সেবাটি সিলেটে ফের চালুর দাবি জানান তারা।

এ বিষয়ে সিলেট বিভাগীয় প্রধান ডাকঘরের সাবেক সহকারী পোস্ট মাস্টার জেনারেল (এপিএমজি) ও হবিগঞ্জ প্রধান ডাকঘরের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল (ডিপিএমজি) সিলেটভিউ-কে বলেন- ১৯৯৬ সালে সিলেট প্রধান ডাকঘরের আওতাধীন ‘ভ্রাম্যমাণ ডাকঘর’ সেবা চালু করা হয়। সাব-পোস্ট অফিস হিসেবে এর কার্যক্রম চলতো। পরবর্তীতে চাহিদা না থাকায় সার্কুলারের মাধ্যমে ২০০৬ সালে এই ‘ভ্রাম্যমাণ সাব-পোস্ট অফিস’-কে সিলেট প্রধান ডাকঘরে সংযুক্ত করে রাখা হয় অর্থাৎ- ভ্রাম্যমাণ সেবাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এদিকে- ২০২০ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনায় ৯টি ‘ভ্রাম্যমাণ ডাকঘর’র উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এসময় তিনি বলেছিলেন- পর্যায়ক্রমে সারা দেশে এ সেবা চালু করা হবে।

ওই সময় সংশ্লিষ্টরা বলেন- একজন সেবা গ্রহীতা যে কোনো ডাকঘরে গেলে যেমন ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক, সঞ্চয়পত্র, জরুরি চিঠিপত্র, ওষুধপত্র ও  চিকিৎসা সংক্রান্ত উপকরণ, পার্সেল, ডিজিটাল কমার্স, ইএমটিএস এবং ডাক ও জীবন বিমা সেবা পান, সেসবই পাবেন ‘ভ্রাম্যমাণ ডাকঘরে’।

এসব সেবা কম সময়ে ও সহজে পেতে সিলেটে ফের ‘ভ্রাম্যমাণ ডাকঘর’র কার্যক্রম চালুর দাবি সচেতন মহলের।


সিলেটভিউ২৪ডটকম / ডালিম