চলতি বছরের জুনে জার্মানিতে বসতে যাচ্ছে উয়েফা ইউরো ২০২৪ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের আসর৷ ওই সময় অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে সবগুলো সীমান্তে অতিরিক্ত নজরদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি৷


মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) জার্মান সংবাদপত্র রাইনিশে পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেজার বলেন, “আমরা টুর্নামেন্ট চলাকালে সবগুলো জার্মান সীমান্তে অস্থায়ী সীমানা নিয়ন্ত্রণ জারি করব, যাতে করে সহিংসতা ঘটাতে পারে এমন সম্ভাব্য অপরাধীরা জার্মানিতে প্রবেশ করতে না পারে৷’’



যদিও বার্লিন কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে ও নিরাপত্তাজনিত কারণে পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র এবং সুইজারল্যান্ডের সাথে থাকা স্থল সীমান্তে অস্থায়ী চেকিং ব্যবস্থা আরোপ করেছে৷ আগামী ১৬ জুন পর্যন্ত এটি জারি রাখা হবে। ১৫ মার্চ এই নজরদারি আবারো নবায়ন করা হয়েছিল৷


২০২৩ সালের নভেম্বরে জার্মানি অস্ট্রিয়ার সাথে থাকা তার স্থল সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ আবারো বাড়িয়েছে৷ আগামী ১১ মে পর্যন্ত এটি চলমান থাকবে৷


অপরদিকে, ফ্রান্সের সাথে থাকা অভ্যন্তরীণ এবং বহিঃসীমান্তে চেকিং ব্যবস্থা অন্তত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জারি রাখার কথা রয়েছে। 


এছাড়া ডেনমার্ক-জার্মান স্থল সীমান্ত এবং ফেরি সংযোগগুলোতেও অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে৷ যা অন্তত ১১ মে পর্যন্ত স্থায়ী হবে বলে নিশ্চিত করেছে বার্লিন৷ 


উয়েফা ইউরো ২০২৪ ফুটবল টুর্নামেন্টটি শুক্রবার (১৪ জুন) জার্মানি এবং স্কটল্যান্ডের মধ্যকার গ্রুপ পর্বের ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে৷ আগের অস্থায়ী সীমান্ত নিয়ন্ত্রণের মেয়াদ ইউরো ২০২৪ শুরুর আগে শেষ হয়ে যাবে৷ সেক্ষেত্রে জার্মানি অন্তত পুরো ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ অর্থাৎ ১৪ জুলাই অনুষ্ঠিত ফাইনাল পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আবারো নবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ 


তবে এই সময়সীমা গ্রীষ্মে আরো বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে৷ উয়েফা ইউরো উপলক্ষ্যে জার্মানিতে ২৭ লাখ ফুটবল ভক্ত স্টেডিয়ামগুলোতে আসাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ফুটবল ভক্তরা ছাড়াও জনসাধারণের জন্য নির্ধারিত বিভিন্ন ইভেন্টে এক কোটি ২০ লাখ লোক উপস্থিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।


ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিয়ম অনুসারে, শেঙ্গেন জোনের অস্থায়ী সীমান্ত চেকিং ব্যবস্থা বিশেষ পরিস্থিতিতে ছয় মাস পর্যন্ত বাড়ানো যায়৷


ইউরোপের বেশ কিছু দেশ অবশ্য বছরের পর বছর ধরে এই অস্থায়ী ব্যবস্থা নানা আইনি স্থগিতাদেশের মাধ্যমে মেয়াদ বাড়িয়ে চলছে৷ জার্মানি এবং অস্ট্রিয়ার মধ্যে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ২০১৫ সাল থেকে ক্রমাগত মেয়াদ বাড়িয়ে এখনও কার্যকর রাখা হয়েছে৷


বর্তমানে ইউরোপের আটটি দেশ বিভিন্ন স্থল সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ পরিচালনা করছে৷ দেশগুলো হলো জার্মানি, ইটালি, ফ্রান্স, নরওয়ে, সুইডেন, অস্ট্রিয়া ও স্লোভেনিয়া।


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফেজার জার্মান প্রেস এজেন্সি ডিপিএকে বলেন, একটি বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্টের সম্ভাব্য সর্বোত্তম সুরক্ষা দিতেই এই ধরনের নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন৷


কিছু জার্মান রাজ্য, যেমন জার্মানির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া (এনআরডব্লিউ) বলেছে, তারা টুর্নামেন্টের আগে তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়াবে৷


জার্মানির ফেডারেল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র সোমবার রয়টার্সকে বলেন, টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পরে অস্থায়ী সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ বাড়ানো নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার।


প্রতিবেশী ফ্রান্সও প্যারিস অলিম্পিককে সামনে রেখে একই স্তরের নিরাপত্তা গ্রহণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ 

 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/নাজাত