ছাতক সরকারি কলেজের প্রভাষক ও কলেজ বিএনসিসি প্লাটুন কমান্ডার (পিইউও) একেএম বাকের হোসেন হাওলাদারের বিরুদ্ধে ইভটিজিং এর অভিযোগ করেছেন ওই কলেজের এক শিক্ষার্থী। 


কলেজ অধ্যক্ষ বরাবরে গত ২৪ মার্চে অভিযোগ করেও কোন বিচার না পাওয়ায় কলেজ বিএনসিসি মহিলা প্লাটুনের ক্যাডেট সার্জেন্ট পরে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও ২৬ মার্চে ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিচার প্রার্থী হয়ে আবেদন করেন। যা প্রতিবেদকে নিশ্চিত করেছেন ভুক্তভোগী। 



অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২৩ সালের অক্টোবর মাসে কুমিল্লা ময়নামতি রেজিমেন্ট ক্যাম্পে ৯ জন ক্যাডেট নিয়ে ছাতক থেকে রাতের বাসে বাকের হোসেন কুমিল্লা যান। এরমধ্যে ৭ জন মহিলা ক্যাডেট ও ২ জন পুরুষ ক্যাডেট ছিলো। বাসে সুকৌশলে তিনি তার পাশের সিটে বসিয়েছেন অভিযোগকারী ওই ছাত্রীকে। রাতে চলন্ত বাসের মধ্যে বাকের হোসেন তার পাশে বসা ওই ভুক্তভোগীর শরীরে গা ঘেষে বারবার বিরক্ত করতে থাকেন। খারাপ ইঙ্গিত সহ হাতে হাত ধরে বারবার তার শরীর স্পর্শ করেছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ওই ভুক্তভোগী ছাত্রীর মোবাইল ফোনে "মিস ইউ" ইত্যাদি ম্যাসেজ পাটিয়ে তাকে বিরক্ত করেছেন। 


অভিযোগ থেকে আরও জানাযায়, প্রভাষক ও পিইউও একেএম বাকের হোসেন হাওলাদারের বিরুদ্ধে ইভটিজিং এর আরো অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে অনেকেই মান সম্মানের ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ। কলেজের কোন ক্যাডেট যদি ঘটনাক্রমে প্রভাষক ও পিইউও একেএম বাকের হোসেন হাওলাদারের কোন ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি ও অসামাজিক কার্যকলাপ দেখে পেলে তাহলে ওই ক্যাডেটকে বাকের হোসেন হাওলাদার সুকৌশলে কলেজ প্লাটুন থেকে বহিস্কার করে দেন। যার ফলে বাকের হোসেনের অপরাধের মাত্রা দিনদিন বেড়েই চলে। যার কারনে কলেজের বিএনসিসি ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণে ছেলেদের পরিবর্তে মেয়েদের প্রাধান্য বেশী দেন বাকের হোসেন। 


সিলেট, কুমিল্লা অথবা ঢাকায় কোন প্রশিক্ষনের নির্দেশ আসলে বাকের হোসেন ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের বেশী নিয়ে যান। অভিযোগ উঠেছে প্রশিক্ষণ শেষে তার পছন্দমতো একজন মেয়ে নিয়ে ট্রেনিং এলাকার বাইরে ঘন্টার পর ঘন্টা ঘুরতে যান। 


অভিযোগকারী জানান, ২৩সালের অক্টোবরে ঘটনা আমি ঘরে জানাইনি ভয়ে যদি আমার আব্বা আমাকে আর কলেজে যেথে না দেন সেই ভয়ে। পরে আবার যখন ট্রেনিংএ যাই তখন আমি আমার সহপাঠি বান্ধবীদের সাথে বসি।


এ ব্যাপারে ছাতক সরকারি কলেজের প্রভাষক ও বিএনসিসি প্লাটুন কমান্ডার একেএম বাকের হোসেন হাওলাদার অভিযোগের বিষয়টা ষড়যন্ত্র বলে জানান, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থরক্ষায় ২০০৮ সাল থেকে ছাতক কলেজ বিএনসিসি প্লাটুনে এক্স ক্যাডেট (বেকা) প্রবেশ নিষিদ্ধ। তখন থেকেই তারা আমার পিছনে আঠার মতো লেগে আছে। অভিযোগকারীর মামা ও (বেকা) সভাপতি হুসাইন। তিনি সামনে ও পিছনে তার সকল সদস্যদের নিয়ে সদা সর্বদা তৎপর আছেন।


ছাতক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ তুলসী চরণ দাস অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনা ২৩সালের অক্টোবর মাসে তারপরও কেনো আবার মেয়েটার বাবা মেয়েটাকে ট্রেনিং এর জন্য ঢাকায় পাঠালেন? এই ৬মাস কোথায় ছিলেন! তাছাড়া তারা আমার কাছে অভিযোগ দিয়ে অভিযোগের কপিটা সবদিকে বিলে করে দিয়ে বিচার চাইছেন। সে কতোটুকু যুক্তিক হলো। যেহেতু বিচার চেয়েছেন সেহেতু ধৈর্য্য তো ধরতে হবে। এছাড়াও আমি ইন্টারনালি কাজ শুরু করেছি। মহিলা প্লাটুন আমার অধিনে নেবার জন্য বলেছি।


বিএনসিসি ময়নামতি (কুমিল্লা) রেজিমেন্ট কমান্ডার রাসেদুল হাসান প্রিন্স জানান, বাকের সাহেবের অভিযোগের বিষয়টা জেনেছি। আমরা আমাদের মতো করে তদন্ত করছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।


ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তফা মুন্না জানান, যেহেতু সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তাই এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার এক্তিয়ার প্রতিষ্ঠান প্রধানের। আর যদি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব দেন, তাহলে সুষ্ঠু তদন্তের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। 

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ শংকর/নাজাত