কথায় বলে ক্যাচ মিস মানে ম্যাচ মিস। আর সেখানে যদি যোগ হয় ব্যাটিং ব্যর্থতা, তাহলে তো লড়াইটাও জমে ওঠার কথা নয়। চট্টগ্রাম টেস্টেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। টেস্ট পাঁচ দিনে গড়ালেও আদতে প্রথম দিন থেকেই চালকের আসনে ছিল শ্রীলঙ্কা। যাত্রীর আসনে থাকা শান্ত-লিটনরা যখন গন্তব্যে নামেন, তখন তাদের সঙ্গী আরও একটি বিশাল হার।

 


বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের পঞ্চম দিনে এসে শ্রীলঙ্কার কাছে ১৯২ রানের ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। ৫১১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩১৮ রানে অলআউট হয়েছে টাইগাররা। সিলেট টেস্টে তারা হেরেছিল ৩২৮ রানে।


টেস্টে আগের পাঁচ ইনিংসে দুইশও করতে পারেনি বাংলাদেশ। এর ২০ বছর আগে ঘরের মাঠে এমন করুণ দৃশ্য দেখেছিল টাইগাররা। তবে চট্টগ্রামে দুইশ তো বটেই, দ্বিতীয় ইনিংসে পুঁজি পার করল তিনশর কোটাও। হোয়াইটওয়াশ হওয়ার এই ম্যাচে কেবল এই একটা সান্ত্বনাই খুঁজে পেতে পারে বাংলাদেশ।


আগের চার দিন ধুঁকতে ধুঁকতে এগিয়ে যাওয়া টাইগাররা পঞ্চম দিনে যখন লক্ষ্য তাড়ায় নামে তার আগেই সাত ব্যাটার সাজঘরে। এদিন প্রথম চার ওভার নির্বিঘ্নেই কাটিয়ে পঞ্চম ওভারে এসে ফিফটি তুলে নেন ৪৪ রানে অপরাজিত থাকা মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে সেই ওভারেই বিদায় নেন তাইজুল ইসলাম। তখনই কার্যত শেষ দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ।


টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো বোলিং করা কামিন্দু মেন্ডিস তুলে নেন তাইজুলের উইকেট। তার অফস্টাম্পের বাইরে রাখা বলে ড্রাইভ করতে গেলে স্লিপে নিশান মাদুশকার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। ২৮ বলে ১৪ রান করেন তাইজুল।


এরপর হাসান মাহমুদ ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ কিছুটা চেষ্টা করলেও খুব বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি। দুইজনই শিকার করেছেন লাহিরু কুমারা। বডি লাইন বাউন্সারে হাসানকে শিকার করেন তিনি। যা ঠেকাতে গিয়ে মাদুশকার হাতে সহজ ক্যাচ তুলে বিদায় নেন হাসান। ৬ রান করলেও ২৫টি বল মোকাবেলা করেন তিনি।


এরপর একই কায়দায় খালেদকেও ছাঁটাই করতে চেয়েছিলেন কুমারা। তাকেও বডিলাইন বাউন্সারে কাবু করতে চেয়েছিলেন কুমারা। টানা চারটি শর্ট বল কোনোমতে ঠেকান খালেদ। এরপর টানা দুটি ইয়র্কার। যার প্রথমটিতে স্টাম্প বাঁচাতে পারলেও দ্বিতীয়টিতে পারেননি। ফলে বড় হারই দেখতে হয় বাংলাদেশকে। অপর প্রান্তে তাকিয়ে দেখেছেন ৮১ রানে অপরাজিত থাকা মিরাজ।


বাংলাদেশের এমন দুরবস্থার শুরুটা অবশ্য ক্যাচ মিসের গল্প দিয়ে। লঙ্কানদের প্রথম ইনিংসেই সাতটি সহজ ক্যাচ ছাড়েন। ফলে ৩১ রানের বড় পুঁজিই পেয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে আত্মাহুতির মিছিলে নামেন টাইগার ব্যাটাররা। মাত্র ১৭৮ রানেই গুটিয়ে যান তারা। পরে দ্রুত ৭ উইকেটে ১৫৭ রানে ইনিংস ঘোষণা করলে ৫১১ রানের বড় লক্ষ্যই পায় বাংলাদেশ।

 

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ নাজাত