শহীদনূর আহমেদ:: করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিপজ্জনক ১১ জেলার মধ্যে সুনামগঞ্জ অন্যতম। প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। সংক্রমণের হার বৃদ্ধি সাথে সাথে বাড়ছে মৃত্যুর ঘটনা। বলাচলে জেলার করোনাভাইরাসের অবনতির বেহালদশা বিরাজ করছে সর্বত্র।

বিগত সময়ের চেয়ে করোনার বর্তমান পরিস্থিতিকে উর্ধ্বমুখী হিসেবে দেখছে স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত না করাসহ জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা কমে যাওয়ায় পরিস্থিত দিনকেদিন অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।


করোনার সংক্রমণ টেকাতে মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি সামাজিক দুরুত্ব নিশ্চিতের উপরে জোরদার করেছেন স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘন্টায় কোনো মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩০ জন। গত ৫ দিনে জেলার ১১ উপজেলায় ভাইরাসে সক্রমিত হয়েছেন অন্তত ৬০০ জন লোক। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারাগেছেন ৫ জন।

৩০ জুলাই এ পর্যন্ত জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৫৭৩ জন। ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪৯ জন লোক। সিলেট, সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১২২৭ জন। ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরোগ্য লাভ করেছেন ৩ হাজার ২৯৭ জন। নতুন করে আক্রান্ত যারা হচ্ছেন তাদের সুস্থতার হার আশানুরূপ নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। হাসপাতালে এখনও কেউ মারা যায়নি বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল প্রশাসন। তবে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে করোনা চিকিৎসায় ডাক্তার, উন্নত অক্সিজেন সেবাসহ নানা সংকট থাকায় হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে চলে যাচ্ছেন অনেকে রোগী।

সদর হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট, আইসিইউ বেড স্থাপনের কাজ চলমান থাকলেও কাজের অগ্রগতি নেই বলে জানা যায়। এমন অবস্থায় হাসপাতালের করোনা চিকিৎসাকে কাগজে কলমের মধ্য সীমাবদ্ধ বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যবিশ্লেষকরা। এমন অবস্থায় জরুরী ভিত্তিতে অক্সিজেন প্লান্ট ও আইসিইউ সেবা চালুর দাবি করেছেন তারা।

জেলার করোনা পরিস্থিতি উর্ধ্বমুখী বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করার কথা জানিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, সিলেট বিভাগের সকল জেলায় করোনা সংক্রমণ উর্ধ্বমুখী। সুনামগঞ্জে করোনা পরিস্থিতি অবনতির দিকে। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে একমাত্র উপায় মাস্ক পরিধান করা। আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনা ভ্যাকসিন প্রধান কাজ শুরু করা হবে। অনূর্ধ্ব ২৫ এর সকল নারী পুরুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। বয়স্ক নাগরিকদের প্রাধান্য দেয়ার কথা জানান তিনি।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ সামাজিক দুরত্ব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। লকডাউন পালনে প্রশাসন মাঠে রয়েছে বলে জানান তিনি।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/ শহীদনূর/কেআরএস