সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেছেন, মহানগর আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সম্মেলনের ধারাবাহিকতায় ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, ৫১ বছর হয়েছে স্বাধীনতা পেয়েছি। আমরা ১৯৭১ সালে ‘বঙ্গবন্ধুর এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম' স্লোগানে দীক্ষিত হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম।

তিনি বলেন, পৃথিবীতে একমাত্র জাতি আমরা যারা ৯ মাসে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা লাভ করে বিরল ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। স্বাধীনতার পরে দেশে কোনো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছিলো না। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে আসার পরে সাড়ে ১৩ বছরে তিনি দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। জননেত্রীর নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিনত হয়েছে। আমরা দেখেছি, করোনাকালীন সময়ে নজীর সৃষ্টি করেছে। এভাবেই সারা দেশব্যাপী উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে। আপনাদেরকে সরকারের উন্নয়ন বেশি বেশি প্রচার করতে হবে। তা না হলে বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠী অপকর্মের সুযোগ নেবে। ইদানীং দেখা যায় তিন ভাই তিন দল করে। সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, জননেত্রী শেখ হাসিনা আছেন বলেই আমরা বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হচ্ছি। আমরা শেখ হাসিনার নির্দেশিত পথে কাজ করে যাচ্ছি। তোমরা যারা ছাত্রলীগ করো তোমাদেরকে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের ইতিহাস জানতে হবে। পাশাপাশি আপনাদের সন্তানরা কে কি করে, কার সাথে মিশে সেগুলোও খেয়াল করতে হবে। তাছাড়া সংগঠন করতে হলে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। ভুল বুঝাবুঝি দূর করে জননেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। পাড়া-মহল্লায় উন্নয়নের কথা তুলে ধরতে হবে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কাজ করতে হবে যাতে বিএনপি-জামায়াতের সকল ষড়যন্ত্রের অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়। তাছাড়া পদ-পদবী নিয়ে বসে থাকলেই কাজ শেষ নয়। নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে কাজ অব্যাহত রাখতে হবে। ঐক্যবদ্ধ ও অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। তাহলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে। সম্মেলনে উপস্থিত হওয়ার জন্য সকল নেতা-কর্মীদের অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।


বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায় ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দরগা গেইটস্থ কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের হলরুমে ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি জুনেদ আহমদ শওকতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুফতি আব্দুল খাবিরের পরিচালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য প্রদান করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন। তিনি বলেন, কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে ও সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে মহানগর আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করার জন্য গত ৩০শে জুলাই মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১লা সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সাংগঠনিক পক্ষ ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন হচ্ছে। তাছাড়া শোকাবহ আগস্ট মাসে মহানগর আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছে। গতকাল আমরা ২৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সুন্দর একটি সম্মেলন করেছি। ব্যালট ভোটের মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ওয়ার্ডের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের পরে ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের মাধ্যমে দলকে সুসংগঠিত করতে কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। এরপর মুজিববর্ষ পালন করেছি। কিন্তু কোভিড-১৯ এর কারণে কাজ করতে অনেকটাই সমস্যা হয়েছে। আমি ও সভাপতি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলাম। সুস্থ হয়ে দলের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। কোভিড আক্রান্ত মানুষদের মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা অব্যাহত ছিলো। তাছাড়া বন্যার সময় মহানগর আওয়ামী লীগ কাজ করেছে। বন্যাকবলিত প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ত্রাণ বিতরণ ও সহযোগীতা অব্যাহত ছিলো। তিনি বলেন, নেতা-কর্মীদের মধ্যে কাজের গতিশীলতা আনার জন্য মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতির নেতৃত্বে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা দায়িত্ব আসার পর জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে বলেছিলেন জনগণের জন্য করো, জনগণের পাশে দাঁড়াও। তাই জনগণের জন্য মহানগর আওয়ামী লীগ কাজ করে যাচ্ছে। মনে রাখতে হবে, ভাই লীগ করলে হবে না। জননেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করতে হবে। আমিত্ব নিয়ে কাজ করলে হবে না। দলের জন্য কাজ করতে হবে। তিনি বলেন মহানগর আওয়ামী লীগ ব্যক্তিগোষ্ঠী কেন্দ্রীক রাজনীতি করে না। কর্মী ও জনগণের জন্য কাজ করে। সেই ভাবেই মহানগর আওয়ামী লীগ এগিয়ে যাবে। আগামীতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল নেতা-কর্মীদের সুন্দর সম্মেলন উপহার দেওয়ার জন্য মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার হোসেন পিয়ার, মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আজম খান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সালমা সুলতানা৷

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট মফুর আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক, ফয়জুল আনোয়ার আলাওর, বিজিত চৌধুরী জগদীশ চন্দ্র দাস,ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক নজমুল ইসলাম এহিয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুর রহমান জামিল, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ শামীম আহমদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্ত্তী রনি, সহ-প্রচার সম্পাদক সোয়েব আহমদ কোষাধ্যক্ষ লায়েক আহমদ চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য আব্দুল আহাদ চৌধুরী মিরন, নুরুন নেছা হেনা, মুক্তার খান, রাহাত তরফদার, সুদীপ দে, সৈয়দ কামাল, মহসিন চৌধুরী, আতিকুর রহমান সুহেদ, জুমাদিন আহমদ, ইলিয়াস আহমেদ জুয়েল।

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রব হাজারি, সালাউদ্দিন বক্স সালাই, ইসমাইল মাহমুদ সুজন, আনসার আহমদ কয়েছ, সোয়েব বাসিত, এম.এ খান শাহীন, মো. মঈনুল ইসলাম মঈন, শেখ সোহেল আহমদ কবির, সাজোয়ান আহমদসহ ওয়ার্ড আওয়ামী এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদকের পরিচালনায় আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউন্সিলরবৃন্দের মতামতের ভিত্তিতে ওয়ার্ডের সভাপতি হিসাবে মুফতি আব্দুল খাবির এবং সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সৈয়দ আনোয়ারুস সাদাত-কে নির্বাচিত করা হয়। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন কুরআন থেকে তেলওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয়। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতৃবৃন্দের জন্য দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/সবি/ইআ-০৪