বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বহুল প্রতীক্ষিত জাতীয় সম্মেলন আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলনকে ঘিরে নেতৃত্ব পাওয়ার আশায় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে আছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিটের শত শত নেতা।

ছাত্রলীগের দপ্তর সেল থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য সাড়ে ৮০০ আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটিতে ২৫৪টি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে ২৫০টি এবং মহানগরে ৩৪০টি আবেদন জমা পড়েছে। তবে আজ আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হবে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।


বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শেষ মূহূর্তে এসে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে আলোচনায় রয়েছে ১০ নেতার নাম। তাঁরা হলেন- ডাকসুর সাবেক এজিএস ও ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, আইন সম্পাদক ফুয়াদ হাসান শাহাদাত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাহসান আহমেদ রাসেল, সমাজসেবা বিষয়ক উপসম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক সদস্য তানভীর হাসান সৈকত, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপসম্পাদক সবুর খান কলিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন, জিয়া হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি রাকিবুল হাসান রাকিব এবং সাংস্কৃতিক সম্পাদক মেহেদী হাসান সানি। শেখ হাসিনা শীর্ষ নেতৃত্ব বাছাই করবেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

২০১৮ সালে ছাত্রলীগের সর্বশেষ ২৯তম কেন্দ্রীয় সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক হন গোলাম রাব্বানী। তবে মাত্র এক বছরের মাথায় অনিয়ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগে তাঁদের নেতৃত্ব থেকে অপসারণ করা হয়। এর পর দায়িত্ব পান বর্তমান সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

তবে তাদের দায়িত্ব দেওয়া হলেও ঝামেলামুক্ত হয়নি ছাত্রলীগ। বরং এই দুই নেতার কর্মকাণ্ডে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনটি নতুন করে বিতর্কিত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে রয়েছে স্বেচ্ছাচারিতা, কেন্দ্রীয় নেতাদের অবমূল্যায়ন, পদ বাণিজ্য, প্রেস রিলিজের মাধ্যমে অযৌক্তিকভাবে কমিটির কলেবর বৃদ্ধি, বিবাহিত-চাঁদাবাজ-মাদকসেবী-ছাত্রদল ও শিবিরের কর্মীদের কমিটিতে আনা, মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও পদ আঁকড়ে থাকাসহ বেশ কিছু অভিযোগ।

এই কমিটির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, বিভিন্ন ইউনিটে যোগ্যতাসম্পন্ন কাউকে নেতৃত্বে না আনা এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে কমিটি না দেওয়া। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটিতে অযোগ্য, নিষ্ফ্ক্রিয় এবং শিবির ও ছাত্রদল কর্মীদের নেতৃত্বে আনায় সমালোচনার মুখে পড়েন জয় ও লেখক। এ কারণে গত ১২ নভেম্বর সম্মেলনের আগে জয়-লেখক কোনো কমিটি দিতে পারবেন না বলে জানান সংগঠনটির দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। এ কারণে অন্তত ৪০টি কমিটি ঝুলে আছে বলে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতা। গত রোববার রাতে কমিটি দেওয়ার দাবিতে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা জয়কে দুই ঘণ্টা আটকে রাখেন।

সিলেটভিউ২৪ডটকম/আরআই-কে