বৈশ্বিক মাহামারিতে এনার্জি সংকট ও ইউক্রেইন রাশিয়া যুদ্ধে নানা সংকটের সমাধানের জন্য দেশের গবেষকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
বৃহস্পতিবার সকালে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৌশল গবেষণা, উদ্ভাবন শিক্ষা' বিষয়ে আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ আহ্বান করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়টির অ্যাপ্লাইড সায়েন্স ও টেকনোলজি অনুষদের আয়োজিত ওই সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, "বাংলাদেশ একটি সফল দেশ, যেটি সহস্রাধিক লক্ষমাত্রা অর্জন করেছে। এখন আমাদেরকে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে ২০৩০ সালের লক্ষমাত্র অর্জনের এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত দেশ ও জাতি গঠনের জন্য।"
বৈশ্বিক মহামারী এবং ইউক্রেইন রাশিয়া যুদ্ধে এখন আমরা এনার্জি এবং অন্যান্য সংকটের সম্মুখীনের বিষয়টি জানিয়ে মন্তরী আমি বিশ্বাস করি, গবেষক এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তিগণ বিকল্প সমাধান খুঁজবেন, যা ব্যাপকভাবে আমাদের শিল্পোন্নয়ন এবং জাতীয় উৎপাদনে সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের সম্পদ মবিলাইজেশন, শিল্প এবং একাডেমিক সম্পর্ক, আন্তজাতিক সমন্বয়ের প্রভাব, প্রকৌশল গবেষণা, উদ্ভাবন, শিক্ষা এবং এগুলোর প্রয়োগ টেকসই উন্নয়নে লক্ষমাত্রা অর্জনে সহযোগিতা করবে।
''আমি আশা করি, গবেষকরা গবেষণার মাধ্যমে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সহযোগিতা করবেন। বিভিন্ন প্রয়োজন এবং সমস্যা সমাধানে শিল্প বিপ্লবে বা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং এটি বাস্তবে রূপান্তরিত করতে আপনারা যার যার ক্ষেত্র থেকে সহযোগিতা করবেন।''
মন্ত্রী বলেন, 'আমি মনে করি এই ধরণের সম্মেলন স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরতে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি খাতে অন্যতম ভূমিকা রাখবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেষ্টা করছেন, বাংলাদেশকে একটি সোনার বাংলায় রূপান্তরিত করতে এবং উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতিতে পরিণত করতে। বাংলাদেশ তার স্বপ্ন থেকে দূরে নয়। এখন প্রকৌশলীরা, বিজ্ঞানীরা ও নীতি নির্ধারকরা, তাদের সৃষ্টিশীল এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতা দ্বারা চেষ্টা করবেন এই স্বপ্ন ছুঁতে। একটি সুখী দেশ গড়তে। আমি শুনে খুব খুশি হয়েছি, অ্যাপ্লাইড সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি অনুষদ ধারাবাহিক ভাবে সফলতার সাথে এই সম্মেলনের আয়োজন করে আসছে।
সম্মেলনে শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কোষাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম, সিংগাপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সম্মেলনের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আরিফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মো. আজিজুল হক। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় রয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দা কামরুন নাহার ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মো. সিয়ামুল বাশার।
সম্মেলনের আয়োজকরা জানান, অ্যাপ্লাইড সায়েন্স অনুষদের এটি সপ্তম আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ১২ জানুয়ারি থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত এ সম্মেলনে দেশ-বিদেশের প্রকৌশলী, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উদ্ভাবন ও শিক্ষার উন্নয়নের ওপর তাদের গবেষণাপত্র নিয়ে উপস্থিত থাকবেন।নিবন্ধনকারীদের মধ্য থেকে ১৯০টির বেশি গবেষণাপত্র আমরা বাছাই করেছি। তিনদিনে ৪টি প্লেনারিসহ ৩৪টি টেকনিক্যাল সেশনে এসব গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হবে।
এতে বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের ৬৪টি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পাঁচশো জনের অধিক গবেষক অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
নিবন্ধন ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সম্মেলনে প্রবেশ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এছাড়া পূর্বের সম্মেলনগুলো থেকে এবার আরো নতুন অনেক কিছু সংযোজন করা হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা।
আরও জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্লেনারি সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/নোমান/ইআ-১৬