সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান আহমদ নামের এক যুবক হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার ২৮ স্বাক্ষীর পুণরায় স্বাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
বুধবার এক পুলিশ সদস্যের পুণরায় স্বাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।
আসামী পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত এই ২৮ স্বাক্ষীর পুণরায় স্বাক্ষ্য গ্রহণ করছেন বলে জানিয়েছেন বাদি পক্ষের আইনজীবী ফজল চৌধুরী।
আদালত সূত্র জানায়, বুধবার রায়হান হত্যা মামলার স্বাক্ষ্য গ্রহণের ধার্য্য তারিখ ছিল। সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মামলার আসামী এসআই আকবর হোসেন ভ‚ইয়া, এসআই মো. হাসান ও কনস্টেবল হারুন অর রশিদকে আদালতে হাজির করা হয়। তাদের উপস্থিতিতে এক পুলিশ কনস্টেবলের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। এসময় আসামী পক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন। ওই পুলিশ সদস্য এর আগেও একবার সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।
বাদি পক্ষের আইনজীবী ফজল চৌধুরী জানান, মামলার আসামী আকবর হোসেন ভূইয়া. মো. হাসান ও হারুন অর রশিদ মামলাটি স্ট্রে করার জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করেছিলেন। ওই সময় কয়েকজন সাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছিল। ওই স্বাক্ষীদের জেরা করতে পারেননি আসামী পক্ষের আইনজীবীরা। ফলে ওই স্বাক্ষীদের পুণরায় সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়।
মহানগর দায়রা জজ আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করায় স্বাক্ষীদের পুণরায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। বুধবার একজন পুলিশ কনস্টেবলের পুণরায় সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আসামী পক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেছেন।
এদিকে, সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন রায়হানের মা সালমা বেগম ও বোন রুবা আক্তার।
এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের মা সালমা বেগম বলেন, মামলার ৬৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ইতোমধ্যে ৪৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে আসামী পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৩ থেকে ৪০ নম্বর সাক্ষীর পুণরায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। হত্যাকান্ডের পর প্রায় ৩ বছর পার হয়ে গেছে। কিন্তু এখনো মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়নি। তারপরও ন্যায় বিচার পেলে রায়হানের আত্মা শান্তি পাবে।
রায়হানের বোন বলেন, আসামীদের চেহারায় কোন অনুতপ্তভাব নেই। তাদের হাসিখুশি মুখ দেখে ভয় লাগে। এদের শাস্তি না হলে অপরাধীদের মন থেকে ভীতি ওঠে যাবে। দেশে ন্যায়বিচার থাকবে না।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হান আহমদ নামের এক যুবককে নির্যাতন করা হয়। ১১ অক্টোবর ভোরে রায়হানের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে রায়হানের স্ত্রী তান্নি বেগম মামলা করেন।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/ নাজাত-০১