বাংলাদেশের ক্ষুদ্র মৎস্যখাত সংশ্লিষ্ট গবেষণাধর্মী বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
কানাডা ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘টু বিগ টু ইগনোর’ বইটি প্রকাশ করেছে, যারা মূলত বিশ্বব্যপী ক্ষুদ্র মৎস্যখাত বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহমুদুল ইসলাম বইটি সম্পাদনা করেছেন।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের সম্মেলন কক্ষে বুধবার (১৫ মার্চ) "Small in Scale, Big in Contributions: Advancing Knowledge of Small-Scale Fisheries in Bangladesh" শীর্ষক বইটির মোড়ক উন্মোচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ক্ষুদ্র মৎস্যখাত সংশ্লিষ্ট গবেষণা পরিচালনার লক্ষ্যে ‘টু বিগ টু ইগনোর’ এর আঞ্চলিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
বইটিতে বাংলাদেশের ৮৫ জন গবেষক ও লেখকের ৩৭ টি অধ্যায় স্থান পেয়েছে যাতে দেশের বিভিন্ন নদ-নদী, হাওর-বাওড়ে ক্ষুদ্র মৎস্যখাত সংশ্লিষ্ট গবেষণালব্ধ ফলাফল তুলে ধরা হয়েছে।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় কুন্ডের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা এবং মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কানাডার মেমোরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রতনা চুয়েনপাগদে।
এছাড়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ মোস্তফা সামছুজ্জামান। বইটি সম্পর্কে ধারণা দেন বইটির সম্পাদক একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও গবেষক ড. মুহাম্মদ মাহমুদুল ইসলাম।
বইয়ের ৩ টি অধ্যায় উপস্থাপনা করেন কানাডার ওয়াটারল্যু বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ফেলো আল আমিন আহমেদ রুয়েল, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জলজ সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোছাঃ আরমিনা সুলতানা ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ফেলো আতিকুর রহমান সানী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ মোঃ জামাল উদ্দিন ভূঞা বলেন, “সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সব সময়ই গবেষনা কাজে অগ্রগামী থাকেন। সাম্প্রতিক সময়ে সিমাগো আন্তর্জাতিক র্যাংকিং এ তার প্রতিফলন স্পষ্ট। আমরা জলজ বিজ্ঞান ও উদ্ভাবন বিভাগে বাংলাদেশে ১ম স্থান অধিকার করেছি। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের এই সম্মিলিত চেষ্টাই বইটিতে ফুটে উঠেছে। এই বইএর গবেষণা লব্ধ ফলাফল বাংলাদেশের মৎস্য খাতের বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নে কাজে আসবে বলে আমরা বিশ্বাস করি”।
বই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. রতনা চুয়েনপাগদে বলেন, “সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সম্মিলিতভাবে আমরা এই প্রথম বাংলাদেশে ‘টু বিগ টু ইগনোর’ এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র মৎস্যখাত সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গবেষণার ব্যাপারে আগ্রহ এবং তাদের দক্ষতার ব্যাপারে আমাদের আস্থা রয়েছে। আমরা সম্মিলিত ভাবে ক্ষুদ্র মৎস্যচাষ ও মৎস্যজীবীদের উন্নয়নে কাজ করে যাবো”।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত জেলে পাখি দাশ বলেন, “আমরা গরীব মানুষ। নদীর মাছ ধরেই আমাদের সংসার চলে। বর্তমান সময়ে সরকার আমাদের জন্য অনেক কিছু করলেও, সাহায্য আমাদের পর্যন্ত আসতে আসতে অনেক কমে যায়। আপনাদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে আমাদের কষ্টের কথাগুলো উপরমহল পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার”।
গবেষক ইফতেখার আহমেদ ফাগুন জানান, “বইটির একটি অধ্যায়ে আমরা মাদার ফিশারিজ খ্যাত সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের মৎস্যখাতের সামাজিক-পরিবেশ ব্যবস্থাগত জটিলতা ও ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো তুলে ধরেছি। এই বইটি বাংলাদেশের ক্ষুদ্র মৎস্যখাত সংশ্লিষ্ট গবেষণায় নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে”।
সিলেটভিউ২৪ডটকম/প্রেবি/এসডি-০৫